বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র গত বছর ৮ মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও দেশটির কর্মকর্তারা এ চুক্তির কিছু কিছু ধারা বাস্তবায়ন না করার ব্যাপারে ইরানের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপকে দেয়া ইরানের ৬০ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর ০৭ জুলাই তেহরানের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য চুক্তিতে নির্ধারিত ৩.৬৭ মাত্রার সীমা তারা আর মানবে না। অর্থাৎ তারা আরো বেশী মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে।
ইরানের এ ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তেহরানের উচিত সাবধান হওয়া।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক প্রতিক্রিয়ায় টুইট বার্তায় বলেছেন, “ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বৃদ্ধির পদক্ষেপ দেশটিকে আরও কোণঠাসা করে দেবে এবং তাদের ওপর আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ইরান যাতে কোনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে না পারে জন্য বিশ্বের দেশগুলোর চেষ্টা করা উচিত।”
ইরানের পরমাণু বোমা গোটা বিশ্বের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়াবে বলে পম্পেও মন্তব্য করেন।
ইরান এ পর্যন্ত দুই ধাপে পরমাণু সমঝোতার কিছু কিছু ধারা বাস্তবায়ন না করার উদ্যোগ নিয়েছে। তেহরান জানিয়ে দিয়েছে, ইউরোপ যদি এখনো তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে এগিয়ে না আসে তাহলে ইরান পরবর্তী আরো ৬০ দিনে তৃতীয় ধাপের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে।
প্রকৃতপক্ষে, মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা করেছিলেন, পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বেরিয়ে গেলেও এবং ইরান বিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ইউরোপ তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে গড়িমসি করলেও তেহরান কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাবে না এবং কেবল জার্মানি, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতেই ইরান সন্তুষ্ট থাকবে। পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে ইরানের সাম্প্রতিক কঠোর পদক্ষেপ শুধু ইউরোপকেই চিন্তিত করে তুলেছে তাই নয় একইসঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তারাও প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হয়েছে ও তাদের মধ্যে অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে।
ইউরোপ নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে ইরানের পরমাণু সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত রেখে পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
ইরান পর্যায়ক্রমে পরমাণু সমঝোতার বিভিন্ন ধারা বাস্তবায়ন স্থগিত রাখায় বিশেষ করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়ায় মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাদের ধারণা ছিল ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপের গড়িমসির ব্যাপারে ইরান চুপচাপ থাকবে।
কিন্তু এটা প্রমাণিত হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো ইরানিদেরকে চিনতে পারেননি এবং তিনি বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা না করে অলীক কল্পনাপ্রসূত কথাবার্তা বলছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.