বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : দেশে ঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়বে। সঙ্গে থাকবে তীব্র বজ্রবৃষ্টিও। আর এসব কেটে গেলেই প্রকৃতি তীব্র দাবদাহ নিয়ে রুক্ষমূর্তি ধারণ করবে। এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে উঠতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দেশে তীব্র বজ্রপাতেরও শক্তি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে মানুষের প্রাণহানির সংখ্যাও। যার আঘাতে রাজধানীতেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিনজন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর কালবৈশাখী বা বজ্রঝড় আঘাত হানে। বিশেষ করে এপ্রিল-মে মাসে এর পরিমাণ বেশি থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চৈত্র মাসে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বাতাস গরম হয়ে উপরে ওঠে। পরে জলীয়বাষ্পের সঙ্গে মিশে এই গরম বাতাস যখন দ্রত ঠাণ্ডা হয় তখনই বজ্রমেঘের সৃষ্টি হয়।
আবহাওয়া অফিস জানায়, আসছে দিনে এই ঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়বে। সঙ্গে থাকবে তীব্র বজ্রঝড়ও। মে মাসে দাবদাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। ঝড়-দাবদাহ-ঝড় এভাবেই এ মৌসুম কাটবে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে সংস্থাটি।
বলা হচ্ছে, এপ্রিল মাসেই দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩টি বজ্রসহ মাঝারি অথবা তীব্র কালবৈশাখী অথবা তীব্র বজ্রঝড় ও দেশের অন্যান্য স্থানে ৪ থেকে ৫ দিন হালকা অথবা মাঝারি কালবৈশাখী অথবা মাঝারি বজ্রঝড় হতে পারে।
দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে) এবং অন্যান্য স্থানে ১ থেকে ২টি মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি তাপপ্রবাহ (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলিসিয়াল) বয়ে যেতে পারে।
এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত একটু বেশি হবে। এক থেকে দুটি নিন্মচাপ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে। যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
অন্যদিকে মে মাসের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে-উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩ দিন মাঝারি অথবা তীব্র বজ্রঝড় ও দেশের অন্যান্য স্থানে ৩ থেকে ৪ দিন হালকা অথবা মাঝারি বজ্রঝড় হতে পারে। মে মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১ থেকে ২টি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং অন্যান্য স্থানে ২ থেকে ৩টি মৃদু অথবা মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ মে মাসে তাপপ্রবাহ দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে আবহাওয়া অফিস।
এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। বঙ্গোপসাগরে মে মাসেও ১ থেকে ২টি নিন্মচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমদ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন এরইমধ্যে কৃষিমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন। যার অনুলিপি দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.