বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : রেহেনুমা তারান্নুম দোলা পড়াশোনা করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে। আর ফাতেমা-তুজ জোহরা বৃষ্টি পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে। তারা পরস্পরের খালাতো বোন।
তাদের বাসা পাশাপাশি হওয়ায় তাদের মাঝে ছিল গভীর সখ্য। একসঙ্গে উঠাবসা, রিকশায় ঘোরাঘুরি করা যেন অভ্যাসে পরিণত হয় তাদের। দু’জনেই চশমা পরতেন, তাও প্রায় একই রকম ফ্রেমের। দুজনেই শাড়ি পরতে পছন্দ করতেন। আবৃত্তিতে তাদের রয়েছে ঝোঁক।
একারণে তারা ভর্তিও হয়েছিলেন প্রজন্মকণ্ঠ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির একটি আবৃত্তি সংগঠনে। রাজধানীর চকবাজার ট্র্যাজেডির রাতে তারা একসঙ্গে বাসায় ফিরছিলেন। বিকালে সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে নিজেদের আবৃত্তি সংগঠন প্রজন্ম কণ্ঠের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তারা। দ্রুত অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় ফিরে আসবে বলেও জানায় দু’জনে। অনুষ্ঠান শেষ করে রাতে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন দুই বোন।
রাত ১০ টার পর কেবি রুদ্র রোড এলাকায় পৌঁছালে মুঠোফোনে কথা হয় ভাই সাজিদুল ইসলাম সাজিদের সঙ্গে। সাজিদ জানান, তাকে ফোনে তার বোন বলেছিল আর মিনিট দশেকের মধ্যে তারা বাসায় চলে আসবে। অথচ আমার বোনদের খুঁজে পেলাম না আজও। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে বোনদের ফেরার অপেক্ষায় সময় কাটে তার।
প্রজন্মকণ্ঠ আবৃত্তি সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুমন জামান সাংবাদিকদের জানান, বুধবার শিল্পকলায় একুশের প্রথম প্রহর উদযাপনের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান শেষ করে বাসার ফিরে যাওয়ার সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে লালবাগ শাহী মসজিদ এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় ওই দুই ছাত্রী। মাঝে আমার সঙ্গে কথাও হয়েছে। ওরা শিল্পকলা একাডেমি থেকে রিকশায় করে যাচ্ছিল। দোয়েল চত্বর দিয়ে ঢুকতে না পেরে চানখারপুল, হোসেনি দালান ও লালবাগ মসজিদ হয়ে বাসার দিকে যাচ্ছিল তারা।
এদিকে গত বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টার আগুনের ঘটনার পর থেকে দোলা আর বৃষ্টিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। বৃষ্টি ও দোলাকে খুঁজে না পেয়ে উৎকন্ঠায় কাটছে তাদের রাতদিন। এই দুই ছাত্রীর ভাগ্যে কী ঘটেছে তা কেউ জানে না। তারা কী চকবাজার ট্র্যাজেডির শিকার হয়েছেন নাকি তাদের ভাগ্যে অন্য কিছু ঘটেছে তা নিশ্চিত নয় কেউ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.