পরিক্রমা ডেস্ক : চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ এবং ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষকদের দুটি পৃথক সভায় (১০.১০.২০২২ খ্রি.) জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী শিক্ষকদের নৈতিকতায় বলিষ্ঠ হবার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “কঠোর অনুশাসন নিয়ে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করতে হবে। শ্রেণীকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। মোবাইল আসক্তি শিক্ষা ব্যবস্থার বিপর্যয় ডেকে আনছে। কিছু শিক্ষক ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার করছে এবং ক্লাসে শিক্ষকের এ অমনোযোগিতা শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত করছে। এটি গুরুতর অপরাধ। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক পরিদর্শনকালে দেখা গেল, শ্রেণীকক্ষগুলোর দরজা বাইরে থেকে আবদ্ধ। শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে বন্দী রেখে পাঠদানবিহীন অবস্থায় রেখে শিক্ষকরা তাদের কমনরুমে গল্প গুজবে ব্যস্ত। এ ধরনের শিক্ষকদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। আধুনিক প্রযুক্তির সুযোগ সুবিধাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সন্তোষজনক বেতনভাতা প্রাপ্তির পরও পাঠদানে অবহেলা অমার্জনীয় অপরাধ। আগের যূগের শিক্ষকেরা রোদে পুড়ে, পায়ে হেঁটে ও ঘাম ঝরিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতেন এবং ক্লান্তিহীনভাবে পাঠদান করতেন। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষকেও প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে কঠোর নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান বলিষ্ঠ ভূমিকায় থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও খ্যাতি শীর্ষে পৌছে যায়। শিক্ষার্থীদের সামনে শিক্ষকরা হবেন এমন আদর্শবান ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব, যেন তারা শিক্ষার্থীদের হৃদয়মূলে স্থান পান। এজন্য প্রয়োজন ত্যাগী শিক্ষক এবং নৈতিক আদর্শে উজ্জীবিত শিক্ষক। আধুনিক প্রজন্মকে মোবাইল আসক্তির অভিশাপ থেকে বাঁচাতে শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে। ঘরে ঘরে অভিভাবকদের অভিযোগ, সন্তানরা দরজা বন্ধ করে পড়াশোনা বাদ দিয়ে মোবাইল জগতে ডুবে আছে। মোবাইলের এ বিপর্যয় থেকে সন্তানদের রক্ষা করা পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের সমান দায়িত্ব। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের কারণে বিকিরণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে। শিশুদের হাতে মোবাইল দিয়ে মায়েরা মুখে খাবার তুলে দেয়ার যে রীতি চালু করেছে, তা’ ধ্বংসাত্মক। শিশু কিশোরদের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। স্রষ্টার বিধি বিধান ও অনুশাসন মেনে এবং শৃঙ্খলা শিক্ষা দিয়ে সন্তানদের সুনাগরিক করতে হবে। শুধু খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের জীবন নয়। স্রষ্টার জীবন বিধান পালনের মাধ্যমে জীবনকে মূল্যবান করতে হবে, কারণ মানুষকে তার নিজের কর্মফল নিয়ে স্রষ্টার কাছে ফিরে যেতে হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চেইন অব কমান্ড রক্ষা করতে হবে। কর্তৃপক্ষের প্রতিটি আদেশ শিরোধার্য মনে করে বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের মধ্যে কোন্দল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত অর্জনকে ম্লান করে দেয়। শিক্ষকরা এ সমাজে সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। কাজেই অন্যদের তুলনায় তাঁদের আচার আচরণ অনেক অসাধারণ অনুকরনীয় এবং নীতি-নৈতিকতার মান শ্রেষ্ঠ হতে হবে। তবেই শিক্ষার্থীরা সৎ ও আদর্শ জীবনে অনুপ্রাণিত হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে। নিয়মিত পড়াশোনা ও বিজ্ঞান চর্চার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত রাখলে তারা মোবাইল আসক্তিসহ অনেক অপরাধ থেকে বেঁচে থাকতে পারে।”
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.