ঢাকা, ২৫ আগস্ট:
শিশু জন্মের পরপরই মায়ের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, শিশু জন্মের দুই-তিন দিন পর যখন পর্যাপ্ত দুধ আসে না, তখন অনেক সময় চিকিৎসকরা ফরমুলা দুধের পরামর্শ দেন। কিন্তু ডাক্তারদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আপনারা মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিবেন। ফরমুলা দুধের পরামর্শ দেবেন না। তিনি বলেন, একসময় শাল দুধ (কোলস্ট্রাম) খাওয়ানো নিয়ে নানা কুসংস্কার ছিল। এখন মানুষ সচেতন হয়েছে। তবুও উদ্বেগজনকভাবে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার কমছে। এখন মাত্র ৫৫ শতাংশ শিশু মায়ের দুধ পাচ্ছে, আগে এ হার আরও বেশি ছিল। তিনি মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার বাড়ানোর জন্য কাজ করতে সংশ্লিষ্টদের আহৃবান জানান।
আজ রাজধানীর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর আগে এ উপলক্ষে এক বর্নাঢ্য রেলির আয়োজন করা হয়।
মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনের প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে
উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, শিশু জন্মের পরপরই অনেকসময় পর্যাপ্ত দুধ আসে না। কাজেই প্রস্তুতি আগে থেকেই নিতে হয়। গর্ভাবস্থার ছয় মাস পর থেকে মায়ের খাদ্যাভ্যাস ও যত্নের বিষয়ে নজর দিতে হবে। মা ভালো খেলে, তার শরীর থেকে সন্তানের জন্য যথেষ্ট দুধ তৈরি হবে।
কর্মজীবী মায়েদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, মাঠে-ঘাটে নানা কাজে যুক্ত মায়েরা সচেতনতার অভাব ও খাদ্যের ঘাটতির কারণে সন্তানকে পর্যাপ্ত দুধ খাওয়াতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি দারিদ্র্য বিমোচনের দিকেও আলোকপাত করেন। সরকারি হিসাবে দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশের মতো, বেসরকারি হিসাবে আরও বেশি। যদি এই ২০ শতাংশ মা পর্যাপ্ত খেতে না পারেন, তবে সন্তানও পর্যাপ্ত দুধ পাবে না। তাই দারিদ্র্য হ্রাসে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আহ্বান জানিয়ে
উপদেষ্টা বলেন, গৃহকর্মী নারীদেরও শিশু জন্মের পরপরই বাচ্চাকে কোলে নেবার সুযোগ দেওয়া উচিত। আমাদের বাসাবাড়িতে যারা কাজ করেন, তাদের অনেক সময় সন্তানকে আনতে দিই না। বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ করছি।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. সারোয়ার বারী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুছ আলীসহ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
...
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.