বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : দক্ষিণ এশিয়ার গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস। একইসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির স্পষ্ট দূরত্ব রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এসব আঞ্চলিক সমস্যার বিষয় নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি রেজুলেশন তৈরি করে কংগ্রেস। এতে বাংলাদেশ বিষয় নিয়ে বলা হয়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করে। দেশটিতে ১৬ কোটি ৩০ লাখ মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও নাস্তিক বসবাস করছে।
দেশটি স্বাধীন হতে অন্তত ৩০ লাখ লোক মারা গেছে, ১০ লাখ লোকের বেশি গৃহহীন হয়েছে এবং ২ লাখ নারী ধর্ষিত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের হাতে অনেকেই এসব ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
রেজুলেশনটিতে বলা হয়, স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দুঃসময়ে ৮ লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে আশ্রয় দিয়েছে। যারা মিয়ানমারে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার।
সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং আহামদি মুসলিমদের ওপর জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির হামলা চালায়। এর ফলে শত শত মানুষ তাদের বাড়ি ও দোকান হারিয়েছে কিংবা লুট হয়েছে এবং মন্দির ভাঙচুর হয়েছে।
এ ছাড়া এতে পাকিস্তানের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের আসিয়া বিবিকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসের আসিয়া বিবির অধিকার হরণ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, পাকিস্তানের জামায়াত ইসলামী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ থেকে আসিয়া বিবির খালাস ও তার পাকিস্তান ত্যাগের বিষয়ে কাজ করেছে। যার কারণে সে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছে। জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আল কায়দা এবং তালিবানের সঙ্গে জড়িত।
বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে নিজেকে দূরত্ব থাকতে অনুরোধ করে একটি রেজুলেশন করেছে ইউরোপিয়ান সংসদও।
এতে বলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ও বিরোধী দলীয় নেতা ড. কামাল হোসেন প্রকাশ্যে বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, ধর্মের নামে চরমপন্থার বিস্তৃতি, মৌলবাদের নামে অস্থিরতা জামায়াতে ইসলামী অনুমোদন করে; যা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থকে হ্রাস করে।
সমাধান হিসেবে কংগ্রেস সদস্যরা জানায়, ধর্মীয় চরমপন্থী ও জঙ্গিবাদের বিকাশ রোধে মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের সুরক্ষায় যৌথ স্বার্থের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে বলে মনে করে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অবিলম্বে ও চলমান হুমকি বন্ধের জন্য জামায়াতে ইসলামী এবং তার সহযোগীদের ত্যাগ করতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য চরমপন্থী সংগঠনগুলোর সঙ্গে স্পষ্টভাবে দূরত্ব বজায় রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.