বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা প্রতিবেদক : একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্বের ব্যাপারটি যেন আরও স্পষ্ট হলো। কারণ গতকাল শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন দলটির বিজয় সমাবেশে দাওয়াত পাননি শরিক দলগুলোর কোনো নেতা। যদিও নির্বাচন জোটগতভাবেই করেন তারা।
২০০৫ সালে ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দলীয় জোট গঠনের পর আওয়ামী লীগের বড় কোনো কর্মসূচিতে এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে দাওয়াতবঞ্চিত হয়েছেন শরিক দলের নেতারা। দাওয়াত না পাওয়ায় শরিক দলের বড় নেতাদের উপস্থিতি ছিল না। তবে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তারকে দেখা যায়। তিনি দাওয়াত ছাড়াই গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ।
প্রধান শরিকের বিজয় উৎসবে দাওয়াত না পাওয়ায় শরিক দলগুলোর নেতারা মর্মাহত হয়েছেন বলে তাদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে।
তারা মনে করছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ ‘একলা চলো’ নীতিতে হাঁটছে। বিজয় সমাবেশের মতো বড় আয়োজনে শরিক দলের নেতাদের দাওয়াত না পাওয়া ও থাকতে না পারাটা ‘দৃষ্টিকটু’।
এ প্রসঙ্গে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে আমরা দাওয়াত পাইনি। এটা দৃষ্টিকটু। আমরা থাকলে বিজয় সমাবেশ আরও ভালো হতো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু জোটগতভাবে নির্বাচন করেছি, তাই বড় এই বিজয়ের অংশীদার আমরাও। বিজয় সমাবেশে শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য রাখার রাখা হলে বিজয় সমাবেশ আরও পরিপূর্ণ হতো।’
শরিকদের এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘এটা তো আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব। দাওয়াত দেওয়া হয়েছে কি না, আমার জানা নেই।’
প্রায় একই কথা জানান, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানও।
১৪ দলের কয়েকজন নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ কেন যেন শরিকদের ইচ্ছে করে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। মন্ত্রিসভায় আমরা থাকব কি থাকব না, সেটা বড় করে দেখছি না। তবে আমরা সংসদের কোথায় থাকব, সেটা তো জোটগতভাবে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু তার আগেই দূরে সরিয়ে রাখার নানা কৌশল করা হচ্ছে। এর জন্য আওয়ামী লীগকে মূল্য দিতে হবে।'
জোটের দুই নেতা বলেন, ২০০৫ সালে ২৩ দফার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আদর্শিক জোট হয়। এই জোট সুখে যেমন থাকার কথা, তেমনি দুঃখেও। তবে নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের আচরণ জোটে ফাটল ধরানোর মতো; যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে দাওয়াত পাইনি। তাই যাওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার গ্রামের বাড়িতে আছি।’
দাওয়াত না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জাসদ (আম্বিয়া) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়াও।
তিনি বলেন, শুনেছি আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশের কথা। আনুষ্ঠানিক দাওয়াত পাইনি।
তিনি বলেন, জোটগতভাবে যে দূরত্ব তৈরি হতে যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের উচিত তা নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করা।
দাওয়াত পাননি জানিয়ে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, একটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে জোটে। এটা আলোচনা করে সমাধান করা জরুরি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.