বাংলাদেশের মানুষ এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো আছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
তিনি বলেন, ‘যখন দেশে (গ্রামে) যাই, রাস্তা দিয়া যখন নামি, দেশের মানুষের লগে কথা কই, চা খাই, তখন জিজ্ঞেস করে - কেমন আছেন? তারা বলেন, আল্লাহর রহমতে বেহেশতে আছি। পেট ভইরা খাই, শান্তিতে ঘুমাই, এখন কোনো অভাব নাই। ছেলেমেয়েরে বিনা পয়সায় লেখাপড়া করাই। বছরের প্রথম দিন বিনা পয়সায় বই পাই। এর চেয়ে শান্তি আর কি হইতে পারে।’
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বিএনপির দেশবিরোধী নৈরাজ্য-ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, দলটির যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ।
সমাবেশটিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহম্মেদ মন্নাফী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আগে আমরা বাঁচতাম ৬০-৬২ বছর, এখন বাঁচি ৭৫ বছর। সবই আল্লাহর রহমত, শেখ হাসিনার ক্যারিশমা।
তিনি বলেন, যখন শেখ হাসিনা এগিয়ে যান; কিছু লোকের ভালো লাগে না, তারা ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু কাজ হবে না। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত আছে, বাংলার ১৯ কোটি মানুষের দোয়া আছে। শেখ হাসিনার ভয়ের কারণ নেই। তার জন্য লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী আজ জীবন দিতে প্রস্তুত। নৌকা মার্কার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত।
সমাবেশমঞ্চে উপস্থিত অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের নাম উদ্ধৃত করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, কামরুল ভাইয়ের জন্য, নৌকার জন্য আপনারা ভোট দিয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে নিয়ে গত সংসদ নির্বাচনের আগে আমি সভা করে গিয়েছি। তখন আপনারা বলেছিলেন কামরুল ভাইকে ভোট দেবেন, নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আপনারা আপনাদের জবান রেখেছেন। কামরুল ভাইও বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি কামরাঙ্গীরচরের চেহারা পাল্টিয়ে দেবেন। তিনিও তার কথা রেখেছেন। কামরাঙ্গীরচরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, শেখ হাসিনা থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। মেট্রোরেল, উড়াল সেতু, কর্ণফুলী টানেল, পাতাল রেলপথ - এমন স্বপ্ন আগে এদেশের মানুষ দেখে নাই। এই স্বপ্ন শেখ হাসিনা নিজে দেখেন এবং দেশের মানুষকেও দেখান।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার স্বপ্ন নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি নেতারা বলেন - তারেক রহমান নাকি এয়ারপোর্টে এসে পড়েছে, খালেদা জিয়া নাকি নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে গেছেন, তারা ক্ষমতায় এসে গেছে - কেউ বলে ৬ ঘণ্টা, কেউ বলে ১২ ঘণ্টা, কেউ বলে ২৪ ঘণ্টা! ক্ষমতায় নাকি শেখ হাসিনা নাই! এতকিছু বলার পরে আপনারা কই গেলেন, গোলাপবাগ গরুর হাটে। যে হাটে কোরবানির সময় তিন থেকে চার হাজার গরু বিক্রি হয়, সেখানে গিয়ে হাজির হলেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কত যাত্রা দেখাইলেন, পদযাত্রা দেখাইলেন। ক্ষমতা থেকে উঠিয়ে দেবেন, আওয়ামী লীগের নাকি পালানোর পথ রাখবেন না; আজ পরিষ্কার বলি - কামরাঙ্গীরচরের মানুষ অত্যন্ত সজাগ। এখানকার ত্যাগী নেতাকর্মীরা একবার রাস্তায় নামলে বিএনপির আর খোঁজও পাওয়া যাবে না। বাড়াবাড়ি করবেন না।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আপনাদের (বিএনপি) জোটে ৫৪টা দল। দলের কোনো অন্ত নাই - ঠ্যাং নাই, মাথা নাই মানুষ। কোন দলে নাকি আবার মরা মানুষকে প্রেসিডেন্ট বানাইয়া ফালাইছে। এই হলো বিএনপি। ৫৪ দল নিয়ে নাকি আওয়ামী লীগকে হটিয়ে দেবে! সেই স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই বছর ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো আমাদের প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। কারণ শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার। নৌকার সরকার, বারবার দরকার। এজন্য এখন থেকেই সবাইকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.