আগামী রোববার কিংবা সোমবার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম। সরকারি কর্ম দিবসের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় দিনে তিনি মহাপরিচালক হিসেবে কাজে যোগদান করবেন।
এর আগে তিনি আজ শনিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
গতকাল বিকেলে একটি অনলাইন গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মহামারি করোনাকালে এ দুর্যোগময় মুহূর্তে তিনি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন, তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে (গণমাধ্যমকর্মী) কথা বলতে হলে আমাকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে হবে।
এই মুহূর্তে কোনো কথা বলতে চাই না। আগামী রোববার কিংবা সোমবার মহাপরিচালক পদে যোগদান করে দায়িত্ব গ্রহণ করব। ওই দিন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করব।
আজ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি জানান, এদিন গণমাধ্যমকর্মীদেরকে দাওয়াত দেয়া হলেও কোনো মিডিয়াতে কথা বলবেন না।
নবনিযুক্ত স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তার নিয়োগের আদেশ জারি হওয়ার পর থেকে অসংখ্য মিডিয়া থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।
তিনি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সার্বিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়, অধিদফতরের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা রয়েছে, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে কীভাবে স্বাস্থ্য সেক্টরের দৃশ্যমান পরিবর্তন আনা যায় সে সম্পর্কে হোম ওয়ার্ক করছেন।
যতদিন মহাপরিচালক পদে থাকবেন ততদিন তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন নচেৎ সরে দাঁড়াবেন বলে ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন তিনি।
মহামারি করোনাভাইরাসকালে ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে পদত্যাগ করেন সদ্য বিদায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান, গত চার মাসেরও বেশি সময় যাবৎ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও শেষ পর্যন্ত থাকে ব্যর্থতার অপবাদ নিয়ে নীরবে চলে যেতে হয়েছে। শেষ সময়ে তার পাশে দাঁড়ানোর মতো শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল না।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর থেকেই নতুন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক কে হচ্ছেন তা নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক, একাধিক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের নাম সম্ভাব্য তালিকায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ (এবিএম) খুরশীদ আলম স্বাস্থ্য মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পান।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের একার পক্ষে স্বাস্থ্য সেক্টরের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা একেবারেই অসম্ভব। স্বাস্থ্য সেক্টরের প্রচলিত পদ্ধতিগত নিয়ম-কানুনের কারণে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে হবে। পৃথক কমিশন গঠন করে সমাজের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে সার্বিকভাবে সংস্কার কর্মসূচি পরিচালনার পাশাপাশি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.