ফেডারেল সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ইউএস সেনসাস ব্যুরো উদ্বেগজনক তথ্য উদঘাটন করেছে আমেরিকায় নীরব দুর্ভিক্ষের। করোনাকালে সরকারের নানা প্রকার ভর্তুক্তি এবং প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা সত্বেও দুই কোটিরও অধিক আমেরিকান প্রয়োজনীয় খাদ্য পাচ্ছে না।
আরো ৪ কোটি ২০ লাখ আমেরিকান বলেছে যে, চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য তারা সবসময় পাচ্ছে না। গরুর মাংস, দুধ, শূকরের মাংস তথা অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য-সামগ্রির মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে স্বল্প ও মাঝারি আয়ের পরিবারে। চলতি বছর করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলেও দ্রব্যমূল্য এতটাই বেড়েছে যে, কোনভাবেই প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য সংগ্রহে সক্ষম হচ্ছেন না উপরোক্ত আমেরিকানরা। বেকার ভাতা বন্ধ হবার পর দুর্ভিক্ষাবস্থা আরো বাড়বে বলে মন্তব্য করা হয়েছে সেনসাস ব্যুরোর উপরোক্ত জরিপ পরিচালনাকারিদের পক্ষ থেকে।
কারণ, আবারো কর্মস্থলে প্রত্যাবর্তন করলে আগের বেতনই তারা পাবেন। অথচ বছরের ব্যবধানে সবকিছুর মূল্য বেড়েছে গড়পরতা ৩২% এরও বেশী।
সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় নিপতিত হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষ। এ হার ১৫%। হিসপ্যানিক আমেরিকানের হার আরো বেশী-১৬%। দুর্ভিক্ষে পড়াদের মধ্যে ২৪% এরই হাই স্কুল ডিগ্রি নেই। এসব অভাবী মানুষের কর্মস্থল করোনাকালে বন্ধ হয়ে গেছে। ৩৩% এর কর্মস্থলের অস্তিত্ব বিলীন হয়েছে অর্থাৎ সে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চরম অভাবে পড়া আমেরিকানদের ২৪% এরই বার্ষিক আয় ছিল ২৫ হাজার ডলারের কম।
এ জরিপ প্রসঙ্গে নর্থওয়েষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউট ফর পলিসি রিসার্চের অধ্যাপক ডায়ানে হুইটমোর বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এখনও অনেক মানুষ খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছেন। এহেন অবস্থার অবসানে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব না হলে অভাবে পড়া আমেরিকানের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়বে বলেও মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ডায়ানে।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, গত ডিসেম্বর থেকে কংগ্রেসে পাশ হওয়া বিধি অনুযায়ী বেকারন ভাতা প্রদানের সময় দু’দফা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফুডস্ট্যাম্পের বরাদ্দও বাড়ানো হয়। করোনা স্টিমুলাস চেকও সকলের কাছে পাঠানো হয়। টিকা প্রদানের কার্যক্রম ত্বরান্বিত হওয়ায় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও খোলা হয়েছে। কমপক্ষে ৯০ লাখ মানুষের বেকারত্ব ঘুচেছে। এতদসত্বেও দুর্ভিক্ষাবস্থার অবসানের নাম-নিশানা নেই, কারণ দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্য নিয়ন্ত্রণের কোন প্রয়াস না থাকায় ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে করোনা পরবর্তী সময়েও মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.