বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত লোকজনের স্বজনদের কান্না থামছে না নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এবং আজ শুক্রবার দুপুরে তাঁদের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনদের কান্নার রোল পড়ে যায়। তাঁদের বুক ফাটা আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এখন পর্যন্ত দাফন করা হয়েছে তিন উপজেলায় নিহত ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনের লাশ। বাকি একজনের লাশ এখনো শনাক্ত করা যায়নি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৩ জন হলেন : সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘোষকামতা গ্রামের সাহেব আলীর দুই ছেলে মাসুদ রানা (৩৬) ও মাহাবুবুর রহমান (২৮), পশ্চিম নাটেশ্বর গ্রামের আলী হোসেন (৬৫), নাটেশ্বর গ্রামের সৈয়দ আহমদের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩২), মমিন উল্যার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩২), মৃত গাউছ আলমের ছেলে নাছির উদ্দিন (৩২), মধ্যম নাটেশ্বর গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে ছিদ্দিক উল্যাহ (৩২), পার্শ্ববর্তী বারগাঁও ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০), কৃষ্ণপুর গ্রামের আবদুর রহিমের স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৪০), অম্বরনগর ইউনিয়নের ওয়াছেকপুর গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে আবদুর রহিম (৫৫) এবং বেগমগঞ্জ উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুজাহিদপুর গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে কামাল হোসেন (৩৫), আলাইয়াপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অভিরামপুর গ্রামের মাসুদুর রহমানের ছেলে মোশারেফ হোসেন (৩০) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী গ্রামের জসিম উদ্দিন (২৩)।
এ ছাড়া সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর (৩৮) লাশ এখনো শনাক্ত করতে পারেননি স্বজনেরা। তাই আজ শুক্রবার পরিবারের সদস্যরা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছেন বলে জানান আনোয়ারের চাচা মো. মোস্তফা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটায় দাফন করা হয়েছে পশ্চিম নাটেশ্বর গ্রামের আলী হোসেনের মৃতদেহ। আলী হোসেনের ছেলে মো. মাসুদ বলেন, রাত দুইটার দিকে মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। পরে রাত তিনটার দিকে তাঁরা তাঁকে দাফন করেন। আগুনে তাঁর বাবার শরীরের প্রায় ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। আর শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর নাগাদ এ উপজেলায় ৯ জনের লাশ এবং বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৩ জনের লাশ দাফন করা হয়।
চোখের সামনে দুই ছেলে মাসুদ রানা ও মাহবুবুর রহমান রাজুর লাশ দেখতে হবে—এ কথা কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বরের সাহাব উল্যাহ। আত্মীয়স্বজন যাঁরাই আসছেন বাড়িতে, তাঁদের জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠছিলেন তিনি। নিহত দুই সহোদরের ছোট ভাই মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সময় আগুন এড়াতে তাঁর দুই ভাই দোকানের ভেতর ঢুকে শাটার আটকে দিয়েছিলেন। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় তাঁরা আর বের হতে পারেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.