জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে বিকেল ৫টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর দ্বিতীয় জানাজা হয়। তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বেলা সোয়া ১১টার দিকে নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দার এম এন একাডেমি মাঠে। বায়তুল মোকাররমে জানাজা পড়ান বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মো. রুহুল আমীন।
জানাজার আগে সাজেদা চৌধুরীর ছেলে সাহদাব আকবর চৌধুরী লাবু বলেন, আমার আম্মা দেশের এবং আওয়ামী লীগের জন্য আজীবন কাজ করেছেন। তিনি সব সময় দেশের মানুষের কথা ভাবতেন। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
বায়তুল মোকাররমে জানাজায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু প্রমুখ।
দ্বিতীয় জানাজার আগে দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে সাজেদা চৌধুরীর মরদেহ রাখা হয়।
বিকেল পৌনে ৩টার দিকে সাজেদা চৌধুরীর মরদেহে প্রথমে রাষ্ট্রপতির পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সালাহউদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহমদ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ ওবায়দুল কাদের শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রাজ্ঞ এই রাজনীতিবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও শহীদ মিনারে আসেন।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৫৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৯-১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডসের ন্যাশনাল কমিশনার এবং ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তার জন্ম ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামাবাড়িতে। তার পিতা সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মাতা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.