২০১২ সালের নির্ভয়ার কথা মনে আছে? অন্ধকার রাতে দিল্লীর রাস্তায় নৃশংস গণধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছিল তার।
৮ বছর পর ২০২০ সালে নির্ভয়ার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল সবাই। কিন্তু সেই স্বস্তির রেশ কাটতে না কাটতেই উত্তর প্রদেশে আবারও ঘটেছে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশে। ঘটনা ৩ জানুয়ারি রাতে। উত্তর প্রদেশের বদায়ুঁ জেলার উঘৈতি থানা এলাকায় স্থানীয় মন্দিরে পূজা দিতে গিয়েছিলেন এক মধ্য বয়স্ক নারী। তার পর আর বাড়ি ফেরা হয়নি তার। চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণের পর রাস্তায় ফেলে দেয়া হয় তাকে। পরে মধ্যরাতে রাস্তার পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই বয়স্ক নারীকে।
সবাই স্তম্ভিত হয়ে যায় তখন, যখন (মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারি) ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পায়।
জানা যায়, গণধর্ষণের পর নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে নির্মম অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। সেই রক্তক্ষরণ আর বন্ধ করা যায়নি। তার জেরেই মৃত্যু হয় ওই নারীর।
এরপরও ক্ষ্যান্ত হননি ধর্ষকরা। ভারী বস্তু দিয়ে বুকে আঘাত করে ভেঙে দেয়া হয় পাঁজরের হাড় এবং একটি পা। পরে তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় দুষ্কৃতিকারীরা।
তবে পুরো ঘটনায় মূলহোতা ধর্ষকরা হলেও, এই ঘটনায় আইন ছিল নিস্ক্রিয় দর্শক। নির্যাতিতা পরিবারের অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও উঘৈতি থানার স্টেশন অফিসার (এসও) রবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ ঘটনাস্থলে যাওয়ার তাগিদ পর্যন্ত দেখাননি, বরং যেখান থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়, সোমবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে কেবলমাত্র একবার সেখান থেকে ঘুরে মেরে আসে পুলিশ।
এমনকি ময়নাতদন্ত নিয়েও গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, রোববার গভীর রাতে মৃত্যু হলেও সোমবার বিকেলে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
জানা যায়, এই ঘটনায় মহন্ত বাবা সত্যনারায়ণ, তার সহযোগী বেদরাম এবং গাড়ির চালক জসপালের নাম সামনে এসেছে। পুরোহিত হিসেবে এলাকায় পরিচিত বাবা সত্যনারায়ণ। নির্যাতিতা যে মন্দিরে পূজা দিতে গিয়েছিলেন, তিনি সেখানকার পুরোহিত কি না; তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত অভিযুক্তদের মধ্যে কাউকে আটক করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ৩ মাস আগে সেপ্টেম্বেরে হাথরস কাণ্ডের সময়ও পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি রাতারাতি নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.