শামসুজ্জামান ডলার ঃ ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক, সেই ডেংগুই কিনা কেড়েনিল মতলব উত্তর উপজেলার কেজি ওয়ানে পড়–য়া শিশু মদিনার প্রাণ। সোমবার রাত ১২ টার দিকে ডেঙ্গুজ¦রে আক্রান্ত হয়ে মদিনা আক্তার (৮) প্রাণ হারায়। মদিনার বাড়ী মতলব উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভার ছোট ঝিনাইয়া গ্রামে।
স্থানীয় অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্ডেন এ কেজি ওয়ানে পড়–য়া শিশু মদিনা ডেংগু আতঙ্কের কথা তার মা ও ভাইয়ের সাথে বলতো। কে জানে সেই ডেঙ্গুই যে তার মৃত্যুর কারণ হয়ে যাবে।
ঝিনাইয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে মশার কামড় দেয়ার বিষয়টি মদিনা প্রথমে তার মা’কে জানায়। মা প্রথমে এ বিষয়ে গুরুত্ব না দিলেও পরের দিনই স্থানীয় ছেংগারচর বাজারের একটি ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। দ্রুত মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে পরামর্শ দেওয়া হয়। চাঁদপুর থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন আই সি ইউ তে নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হলে সেখানে সিট না পাওয়ায় বেশ কয়েকটি হসপিটাল ঘুরে অবশেষে ভর্তি করানো হয় ধানমন্ডির একটি প্রাইভেট হসপিটালে। সোমবার রাত ১২টার দিকে সেই হসপিটালে মদিনা মৃত্যুবরন করে।
মদিনা এক ভাইয়ের একটিই বোন। বাবা মিজান ঢালী প্রাসে থাকেন। মা ময়না আক্তার জানান, ডেঙ্গু আতঙ্কের কথা মেয়ে আমাকে প্রায়ই জানাতো স্কুলে শিক্ষকরা না নাকি ডেংগুর বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলতো এবং বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে বলতো। কে জানে সেই ডেংগুই যে আমার মেয়ের প্রাণ নেবে।
তবে তারা সহসায় ঢাকা বা অন্য কোথাও যায়নি তাই ধারনা করা হচ্ছে মদিনা বাড়ীতেই ডেঙ্গুজ¦রে আক্রান্ত হয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণীতে পড়–য়া মদিনার ভাই মেহেরাজ জানায়, বোন আমার ছিল লেখাপড়ায় ভালো এবং খুবই সচেতন। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং কোন কিছুর মধ্যে পানি জমে না থাকার বিষয়ে আমাদেরকে সচেতন করতো এবং ও নাকি এসব স্কুল থেকে শিখেছে।
সন্তান হারিয়ে মা ময়না আক্তার এখন দিশেহারা কেবলই কাঁদছে আর কাঁদছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঝিনাইয়া এলাকায় পারিবারিক গোরস্থানে মদিনার লাশ দাফন করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.