রাজধানীর উত্তরাস্থ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির মালিক মাওলানা সাদেকের বিবিধ অপকীর্তির উপর 'বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা' গত ১০মে,২০২০ ইং তারিখ একটি তথ্য সমৃদ্ধ রিপোর্ট প্রকাশ করে।উক্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে 'বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন' ৩ দিনের মধ্যে উত্তর দেওয়ার সময় বেঁধে দিয়ে মাওলানা সাদেককে একটি শোকজ নোটিশ প্রদান করে।কিন্তু মাওলানা সাদেক নির্বিকার। দেশের প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ঠকবাজ সাদেকের বিরুদ্ধে এতো বেশি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় যে,অন্য কারো বিরুদ্ধে এমনটা হলে তার এতোদিনে জেল-ফাঁসি হয়ে যেতে পারতো।কিন্তু ঠকবাজ সাদেকের কিছু হচ্ছে না কেন?এমন প্রশ্নের জবাবে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির একজন প্রাক্তন শিক্ষক এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেন।তিনি বলেন,ঠকবাজ মাওলানা সাদেক বছরে অন্তত একবার মিসর সফরে গিয়ে সেখানকার জাদুঘরে সংরক্ষিত ফেরাউনের লাশের পদযুগল ধরে কুফরি আমল করে।তাছাড়া সে 'কামরূপ কামাক্ষা' মন্দির হতে 'কালো যাদু' সংক্রান্ত কিছু পুস্তক সংগ্রহ করেছে এবং সে মোতাবেক রীতিমতো পূজা-অর্চনা করে থাকে। ইসলামী পন্ডিতদের মতে এসব আমল কুফরি তুল্য কবিরা গুনাহ। এসব কুফরি আমলের কারণে হয়তো সাময়িক ভাবে তার কোন বিচার হচ্ছে না।তবে ফেরাউনের যেমন শেষ রক্ষা হয় নাই। ইনশাআল্লাহ ঠকবাজ সাদেকেরও একই পরিনতি হবে।কুফরি আমল সম্পর্কে সুরা আলে-ইমরানের আয়াত ১২তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন;বলে দিন তাদের যারা কুফরি করে,শীঘ্রই তারা পরাভূত হবে।একই সুরার ৫৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে ;অতএব যারা কুফরি করেছে, দুনিয়া এবং আখেরাতে তাদের কঠোর শাস্তি দেব।
মাওলানা সাদেক কোন পর্যায়ের ঠকবাজ তা জানার জন্য এই প্রতিবেদক এশিয়ান ইউনিভার্সিটির একজন প্রাক্তন কর্মকর্তার মতামত জানতে চাইলে তিনি অত্যন্ত বেদনাবিধুর হয়ে পড়েন।তিনি বলেন,আমি দীর্ঘ ১০ বছর ঠকবাজ সাদেকের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি।আমাকে যে পদবিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বেতন দেওয়া হতো তার একধাপ নিচের স্কেলে।আর সাদেকের স্কেল হলো ফকিরের ভিক্ষাতুল্য।আমি একই সময়ে ৩টি পদ-পদবির দায়িত্ব পালন করতাম। কম বেতনের কারণে আমাকে পরিবার পরিজন নিয়ে দক্ষিণ খানের একটি টিনসেড বাড়িতে থাকতে হতো।দুপুরের খাবার খেতাম উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ডদের সাথে,যাতে করে পয়সা খুব কম খরচ হয়।সকাল ৭ঃ০০টা থেকে সন্ধ্যা ৭-৮টা পর্যন্ত অফিস করতাম। অত্যন্ত কম বেতনের কারণে নিজ পরিবার পরিজন, বৃদ্ধ বাবা,ভাই -বোনদের প্রতি দায়-দায়িত্ব পালন করতে পারি নাই!! তবে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন যে,আল্লাহ অবশ্যই একদিন এর বিচার করবেন।
মাওলানা ঠকবাজ সাদেক প্রতিনিয়ত গীবতের মাসয়ালা মাসায়েল বর্ননা করতে থাকে, যাতে করে কেউ তার অপকর্মের সমালোচনা না-করে।তবে বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন শায়খ মতিউর রহমান মাদানি বলেন,ক্ষতিকর ব্যক্তির অপকর্ম সম্পর্কে অন্যকে তথ্য প্রদান করে সতর্ক করা ক্ষেত্র বিশেষে ফরজ,ওয়াজিব কিংবা মুস্তাহাব বা নফল।
তাই অনেকে বলে থাকেন,ঠকবাজ মাওলানা সাদেক অর্থ পাচারকারী, অবৈধ পুত্র সন্তানের জনক(ছেলেটি নাকি সাদেককে মাঝেমধ্যে ধোলাই দেয়),৭১সালের সক্রিয় রাজাকার,জাল সার্টিফিকেট ব্যবসায়ী,জর্ডানের বাদশার টাকায় ক্যাম্পাস প্রস্তুতকারী,লন্ডনের মুসলমানদের জাকাতের টাকায় মসজিদ নির্মাণকারী(কিন্তু খরচ দেখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় থেকে),তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মারাত্মক ভাবে ঠকানো,দেশীয় আইন-কানুনের অমান্যকারী,ইউজিসি'র নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনকারী হিসেবে তার তথ্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গকে জানানো গীবত হবে না।বরং দেশ ও জাতির শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করা প্রত্যেক দেশ প্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত নির্যাতিত নিষ্পেষিত শিক্ষক, কর্মকর্তা -কর্মচারীবৃন্দ শিক্ষা মন্ত্রী বরাবর আবেদন করার পরবর্তীতে বর্তমানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর ২টি দরখাস্ত জমা দিয়েছেন, সুবিচার পাওয়ার আশায়। বিভিন্ন মিডিয়ায় যার কপি সরবরাহ করার ফলে 'বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা'র শিক্ষা প্রতিবেদকের নিকটও ২টি কপি পৌঁছেছে।
পত্র ২টির কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন না করে হুবহু নিম্নে প্রকাশ করা হলো।
বরাবর,
মহামান্য চ্যান্সেলর
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
এবং
মহামান্য রাষ্ট্রপতি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।
বিষয়: মহামান্য চ্যান্সেলরের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে পারিশ্রমিক না পেয়ে না খেয়ে মরছি। আমাদের জন্য এই ঈদ যেন মহা অখুশির দিন। অথচ, ৭১’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার আবুল হাসান এম সাদেক প্রতিষ্ঠানের সকল অর্থ ডাকাতি করে জামাতী জঙ্গিদের অর্থায়ন করছে।
মহামান্য চ্যান্সেলর,
আপনার সদয় অবগতির জন্য সবিনয়ে জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রে কভিডের মহা দুর্যোগের মধ্যেও আপনার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে পারিশ্রমিক না পেয়ে আমরা শিক্ষক-স্টাফ না খেয়ে আছি। আমাদের বউ বাচ্চা পরিবাররা না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। কভিড, রোজা, ঈদ সবই যেন আমাদের কাছে মৃত্যুর চেয়ে ভয়ংকর। আমাদের জন্য এই ঈদ যেন মহা অখুশির দিন। আপনার কাছে সবিনয় নিবেদন যে, আমাদের পারিশ্রমিক পরিশেধ করে খাবারের ব্যবস্হা করুন। অথবা, আপনি দয়া করে সৈন্য পাঠিয়ে আমাদের সপরিবারে মেরে ফেলুন। আমরা কিছু মনে করব না। কোন অভিযোগ থাকবে না। আল্লাহকে বলব, আল্লাহ তুমি খাবার পাঠাও নি, তাই আমরা মরেছি। আমাদের কারও প্রতি কোন অভিযোগ নেই।
আপনার প্রতিষ্ঠানের সকল অর্থ ৭১’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার আবুল হাসান এম সাদেক ডাকাতি করে জামাতী জঙ্গিদের বিভিন্নভাবে দেশে ও বিদেশে ২০০০ কোটি টাকা পাচারের মাধ্যমে অর্থায়ন করছে। আর আমাদের কান্না তিনি শুনছেন না। তিনি প্রতিদিন রমযানের আলোচনার নামে বিকাল ৪ টায় জামাতীদের নিয়ে বৈঠক করছেন। সাধারণ মানুষ ভাবছে তিনি তাফসির করছেন। তিনি দয়ার কথা, মানবতার কথা ফলাও করে প্রচার করছেন। আর ভিতরের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বিনীতভাবে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশ উপেক্ষা করে দেশের পুরাতন ও প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এই করোনার দুর্যোগ ও মাহে রমজানের মধ্যে মে’র ৭ তারিখে আমাদের বেতন ভাতা সর্বোচ্চ ৮২% বেতন ভাতা কেটে মাত্র ১৮% বেতন হিসেবে সর্বোচ্চ ১২,০০০/- টাকা দিয়েছে যা দিয়ে মাসিক খোরপোষ দূরের কথা বাসা ভাড়াই আমরা দিতে পারছি না, মানবেতর জীবন যাপন করছি। আর ২০ এপ্রিল - ২০ মে, এ মাসের বেতন, ঈদ বোনাস কোন কিছুই আমাদের দেয় নি। বরং সরকার দলীয় কারও কারও নাম করে আমাদের নানাভাবে ধমকাচ্ছেন। অথচ, আমরা পুরো দমে নিজ খরচে ক্লাস নিয়েছি। গত ১৭ মার্চ তারিখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও আবুল হাসান সাদেক (যিনি কাগজ পত্রে আইনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি নন, কিন্তু তিনি আমাদের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ২.৫ লক্ষ টাকা বেতন নেন) আমাদের বাধ্য করেছেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা রাখতে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হলেও আমরা নির্দেশনা মোতাবেক অনলাইনে রাত দিন খেটে ক্লাস নেই। উল্লেখ্য যে, এখানকার নিয়ম অনুসারে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বেতন না দিলে মিডটার্ম দিতে দেওয়া হয় না। আমরা ছাত্রদের বেতন উত্তোলন নিশ্চিত করে মিডটার্ম নিয়ে ফলাফলও দিয়ে দিয়েছি বন্ধের আগে। প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীরা এই সেমিস্টারের বেতন পরিশোধ করেছে। কিছু ছাত্রের পূর্বের কিছু বকেয়া ও ড্রপ আউটের বকেয়া বাবদ প্রায় সর্বমোট ১ কোটি টাকার মত দেখিয়ে আমাদের বেতন বন্ধ করেছেন সাদেক প্রশাসন। অথচ আমরা সেমিস্টারের সকল চাহিদা পূরণ করেছি। আরও উল্লেখ্য, আবুল হাসান সাদেক তার নিজের বাড়ির নামে (বাড়ি নং ১৪, রোড ২৮, উত্তরা ৭), ট্রাস্টের নামে (বাড়ি নং ২৫, রোড ০৫, উত্তরা ৭) এবং মতিঝিল কম্প্লেক্সের নামে সর্বমোট প্রায় মাসিক চল্লিশ লক্ষ (৪০,০০০,০০/-) টাকা আত্মসাৎ করছে। ১৪ নং বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রম নেই এবং এটা তার ব্যক্তিগত বাসভবন যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে করা হয়েছে, মতিঝিলও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় করা হয়েছে এবং বর্তমানে কোন কার্যক্রম নেই, ২৫ নং বাড়িও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় করা এবং আংশিক কার্যক্রম আছে। ছাত্রদের বেশিরভাগ টাকা ব্যাংকে জমা পড়ে নি বরং ক্যাম্পাসে তার নিজস্ব লোক দ্বারা টাকা সংগ্রহ করে সরাসরি তার বাসায় নিয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন স্টাবলিশমেন্ট চার্জ নেই। তার বড় ছেলে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হয়েও ৭ টি লাভজনক পদ দখল করে আছেন। আরও উল্লেখ্য আবুল হাসান এম সাদেক ৭১’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার এবং বর্তমানে জামাত জঙ্গিদের শীর্ষ সংগঠক। বর্তমানে যাকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আফতাব আমলে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত জামাতী নেতা যিনি সরকার কর্তৃক চাকুরিচ্যুত ও মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন লাগানোর সহযোগী (এখানে আরও আছে, কেউ কেউ ট্রানজিট নিয়েছে)। সাদেক সাহেবে ঘনিষ্ঠ সহযোগী পেট্রো সন্ত্রাসী ইয়াসিন (যিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী কামারুজ্জামানের বিশেষ সহযোগী) সিন্ডিকেট মেম্বার ও বোমা সন্ত্রাসী জামাতী নেতা জাকির হোসেন (আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের একান্ত ঘনিষ্ঠ, যিনি ছিলেন ঝুট ব্যবসায়ী, এখানে এনে ছাত্রদের মধ্যে মওদুদী মতবাদ প্রচারের ও সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে) এবং সরদার আনিস ( যিনি নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো চিফ ও জামাতী রোকন এবং মিডিয়াম্যান)।
গত ২৫ বছরে সরকারি কোন অডিট না হওয়ায় সাদেক সাহেব ও তার পরিবার সমুদয় অর্থ লুটপাট ও কর্মজীবী-শিক্ষার্থীদের উপর চরম অমানবিক নির্যাতন করেছেন। এখনও তিনি প্রতিদিন শুধু স্বাক্ষর করে সার্টিফিকেট বিক্রি করে ৫-১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আপনার অজ্ঞাতেই চলছে গোপনে সমাবর্তন। তিনি বর্তমানে পরিকল্পনা করছেন সকল শিক্ষক স্টাফ বাদ দিয়ে দেশে বিদেশের জামাতী পার্ট টাইম শিক্ষকদের দিয়ে অনলাইন ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন আর শিক্ষার নামে ছাত্রদের কাছে শুধু সার্টিফিকেট বিক্রি করবেন।
বঙ্গবন্ধুর সোনার স্বাধীন বাংলাদেশে আপনার রাষ্ট্রনায়কত্বে, গণতন্ত্রের মানসকন্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে, সারাদেশে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে নানান মানববান্ধব উদ্যোগে, দুর্নীতি দমনে, জঙ্গি নিধনে আমরা খুব আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু আজ আমরা বড় হতাশ হয়ে পড়েছি জীবনের প্রতি। মনে হয় কেউ কোথাও কিছু দেখার নেই, বিচার নেই, প্রশাসন নেই। বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগীরা প্রমাণসহ বার বার অভিযোগ করলেও থেমে যায় তদন্ত ও বিচার। উল্টো বঞ্চিত ব্যাক্তিরা শিকার হচ্ছি মামলা বা জিডি বা রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক সন্ত্রাসের। কিছু সরকারি লোকজন সংক্ষুদ্ধ ছাত্রদেরও ধমক দিচ্ছে যে, ভিসি নেই তা সরকার দেখবে, আপনাদের কী? বারবার দুর্নীতি করে পার পেয়ে তার দৌরাত্ম বেড়েই চলছে।
আমাদের ৬ দফা দাবি:
হে মহামান্য অভিভাবক,
আমরা নিরুপায় হয়ে সস্তায় আপনার প্রতিষ্ঠানে সোনালী সময় ও শ্রম বিক্রি করেছি। সেই সস্তা মূল্যটুকুও এখন আমরা পাচ্ছি না। আমাদের মানবতার দরকার নেই, অন্তত পারিশ্রমিকটুকু দিয়ে দ্রুত আমাদের খাবারের ব্যবস্হা করুন। আমরা ক্ষুধার জ্বালা সইতে পারছি না।
তদসঙ্গে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ধারা ৩৫ এর (৭) অনুসারে আপনার কাছে সুবিচার প্রার্থনা করছি। ৪৬ এর (৩) উপধারা মতে আমাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। ধারা ৪৭ এর (২) অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না করে ট্রাস্টি বোর্ড ভেঙ্গে একটি আইনগত ও উপযুক্ত ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে দিয়ে, উপযুক্ত ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেশের উন্নয়ন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় হল জাতীয় সম্পদ। তা রক্ষা করা দেশের সকল নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর অভিভাবক হিসেবে আপনি তার কর্ণধার। ধারা ৪৯ অনুসারে ও দেশের অন্যান্য আইন অনুসারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার আবুল হাসান এম সাদেক, জাফার সাদেক ও তাদের পরিবারের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি এবং অন্যান্য সহযোগীদের শাস্তি দিয়ে জাতিকে ও বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করে আমাদের কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করবেন।
বিনীত নিবেদক
আপনার একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত,
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
সংযুক্তি:
কার্যার্থে অনুলিপি প্রেরিত হল:
বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
বিষয়: আমাদের ফিতরার টাকা দিন, আমরা শিক্ষক-স্টাফ না খেয়ে আছি। ৭১’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার আবুল হাসান এম সাদেক জামাতী জঙ্গিদের অর্থায়ন, সংগঠিতকরণ ও আশ্রয় দিতে আমাদের সকল অর্থ চুরি করে নিয়ে গেছে।
মাননীয় স্যার,
আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমরা শিক্ষক-স্টাফ পারিশ্রমিক না পেয়ে না খেয়ে মরছি। আমাদের এশিয়ান ইউনিভার্সিটির অব বাংলাদেশের টাকা সব ৭১’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার আবুল হাসান এম সাদেক চুরি করে নিয়ে গেছে। তিনি তা দিয়ে জামাতী জঙ্গিদের অর্থায়ন, সংগঠিতকরণ ও আশ্রয় দিতে ২০০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন এবং দেশে নামে বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ, এফডিআর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। আর আমাদের বাসা ভাড়া বাকি। বাসা ভাড়া না দিতে পেরে টিন শেড ঘরে বাসা নিয়েছি, কিছু সাধের আসবাব সস্তায় বিক্রি করতে হচ্ছে, তরকারি না কিনতে পেরে রাস্তার পাশের কলা গাছ কেটে থোড় এনেছি, অনেকে শুধু পানি খেয়ে থাকছে, অনেকে দিন মজুরিতে যোগ দিচ্ছে। দয়া করে, আপনি আমাদের আপনার ফেতরার টাকাটুকু অন্তত দিন। ঈদের দিনে পরিবারের জন্য অন্তত একটু সেমাই চিনি কিনি।
বিনীতভাবে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশ উপেক্ষা করে দেশের পুরাতন ও প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এই করোনার দুর্যোগ ও মাহে রমজানের মধ্যে মে’র ৭ তারিখে আমাদের বেতন ভাতা সর্বোচ্চ ৮২% বেতন ভাতা কেটে মাত্র ১৮% বেতন হিসেবে সর্বোচ্চ ১২,০০০/- টাকা দিয়েছে যা দিয়ে মাসিক খোরপোষ দূরের কথা বাসা ভাড়াই আমরা দিতে পারছি না, মানবেতর জীবন যাপন করছি। আর ২০ এপ্রিল - ২০ মে, এ মাসের বেতন, ঈদ বোনাস কোন কিছুই আমাদের দেয় নি। বরং সরকার দলীয় কারও কারও নাম করে আমাদের নানাভাবে ধমকাচ্ছেন। অথচ, আমরা পুরো দমে নিজ খরচে ক্লাস নিয়েছি। গত ১৭ মার্চ তারিখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও আবুল হাসান সাদেক (যিনি কাগজ পত্রে আইনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি নন, কিন্তু তিনি আমাদের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ২.৫ লক্ষ টাকা বেতন নেন) আমাদের বাধ্য করেছেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা রাখতে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হলেও আমরা নির্দেশনা মোতাবেক অনলাইনে রাত দিন খেটে ক্লাস নেই। উল্লেখ্য যে, এখানকার নিয়ম অনুসারে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বেতন না দিলে মিডটার্ম দিতে দেওয়া হয় না। আমরা ছাত্রদের বেতন উত্তোলন নিশ্চিত করে মিডটার্ম নিয়ে ফলাফলও দিয়ে দিয়েছি বন্ধের আগে। প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীরা এই সেমিস্টারের বেতন পরিশোধ করেছে। কিছু ছাত্রের পূর্বের কিছু বকেয়া ও ড্রপ আউটের বকেয়া বাবদ প্রায় সর্বমোট ১ কোটি টাকার মত দেখিয়ে আমাদের বেতন বন্ধ করেছেন সাদেক প্রশাসন। গত এক মাসে শিক্ষার্থীরা বিকাশ ও ব্যাংকে প্রায় আরও ১ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। আমরা সেমিস্টারের সকল চাহিদা পূরণ করেছি। আরও উল্লেখ্য, আবুল হাসান সাদেক তার নিজের বাড়ির নামে (বাড়ি নং ১৪, রোড ২৮, উত্তরা ৭), ট্রাস্টের নামে (বাড়ি নং ২৫, রোড ০৫, উত্তরা ৭) এবং মতিঝিল কম্প্লেক্সের নামে সর্বমোট প্রায় মাসিক চল্লিশ লক্ষ (৪০,০০০,০০/-) টাকা আত্মসাৎ করছে। ১৪ নং বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রম নেই এবং এটা তার ব্যক্তিগত বাসভবন যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে করা হয়েছে, মতিঝিলও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় করা হয়েছে এবং বর্তমানে কোন কার্যক্রম নেই, ২৫ নং বাড়িও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় করা এবং আংশিক কার্যক্রম আছে। ছাত্রদের বেশিরভাগ টাকা ব্যাংকে জমা পড়ে নি বরং ক্যাম্পাসে তার নিজস্ব লোক দ্বারা টাকা সংগ্রহ করে সরাসরি তার বাসায় নিয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন স্টাবলিশমেন্ট চার্জ নেই। তার বড় ছেলে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হয়েও ৭ টি লাভজনক পদ দখল করে আছেন। আরও উল্লেখ্য আবুল হাসান এম সাদেক ৭১’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার এবং বর্তমানে জামাত জঙ্গিদের শীর্ষ সংগঠক। বর্তমানে যাকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আফতাব আমলে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত জামাতী নেতা যিনি সরকার কর্তৃক চাকুরিচ্যুত ও মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন লাগানোর সহযোগী (এখানে আরও আছে, কেউ কেউ ট্রানজিট নিয়েছে)। সাদেক সাহেবে ঘনিষ্ঠ সহযোগী পেট্রো সন্ত্রাসী ইয়াসিন (যিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী কামারুজ্জামানের বিশেষ সহযোগী) সিন্ডিকেট মেম্বার ও বোমা সন্ত্রাসী জামাতী নেতা জাকির হোসেন (আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের একান্ত ঘনিষ্ঠ, যিনি ছিলেন ঝুট ব্যবসায়ী, এখানে এনে ছাত্রদের মধ্যে মওদুদী মতবাদ প্রচারের ও সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে) এবং সরদার আনিস ( যিনি নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো চিফ ও জামাতী রোকন এবং মিডিয়াম্যান)।
গত ২৫ বছরে সরকারি কোন অডিট না হওয়ায় সাদেক সাহেব ও তার পরিবার সমুদয় অর্থ লুটপাট ও কর্মজীবী-শিক্ষার্থীদের উপর চরম অমানবিক নির্যাতন করেছেন। এখনও তিনি প্রতিদিন শুধু স্বাক্ষর করে সার্টিফিকেট বিক্রি করে ৫-১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আপনার অজ্ঞাতেই চলছে গোপনে সমাবর্তন। তিনি বর্তমানে পরিকল্পনা করছেন সকল শিক্ষক স্টাফ বাদ দিয়ে দেশে বিদেশের জামাতী পার্ট টাইম শিক্ষকদের দিয়ে অনলাইন ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন আর শিক্ষার নামে ছাত্রদের কাছে শুধু সার্টিফিকেট বিক্রি করবেন।
বঙ্গবন্ধুর সোনার স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মানসকন্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার যোগ্য নেতৃত্বে, সারাদেশে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে নানান মানববান্ধব উদ্যোগে, দুর্নীতি দমনে, জঙ্গি নিধনে আমরা খুব আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু আজ আমরা বড় হতাশ হয়ে পড়েছি জীবনের প্রতি। মনে হয় কেউ কোথাও কিছু দেখার নেই, বিচার নেই, প্রশাসন নেই। বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগীরা প্রমাণসহ বার বার অভিযোগ করলেও থেমে যায় তদন্ত ও বিচার। উল্টো বঞ্চিত ব্যাক্তিরা শিকার হচ্ছি মামলা বা জিডি বা রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক সন্ত্রাসের। কিছু সরকারি লোকজন সংক্ষুদ্ধ ছাত্রদেরও ধমক দিচ্ছে যে, ভিসি নেই তা সরকার দেখবে, আপনাদের কী? বারবার দুর্নীতি করে পার পেয়ে তার দৌরাত্ম বেড়েই চলছে।
একদিকে তিনি আমাদের পারিশ্রমিক না দিয়ে নির্যাতন করছেন, অন্যদিকে প্রতিদিন এভাবে ধর্মের নামে বয়ান করছেন ও আড়ালে জামাত জঙ্গি মিটিং করছেন
আমাদের ৬ দফা দাবি:
হে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মমতাময়ী ন্যয়বিচারক মা,
আমাদের বেতন ছিল ইউজিসিতে প্রেরিত তথ্যের এক তৃতীয়াংশ। আমরা সস্তায় সোনালী সময় ও শ্রম বিক্রি করতাম। তাতেই জোড়া তালির সংসার করার চেষ্টা করছিলাম। তা-ও আজ বন্ধ। এখন তো আমরা যাকাত গ্রহণের উপযোগী হয়ে গেছি। পরিশ্রম করেও খাদ্য, বাসস্হানের অভাব, দুধের শিশুর চিৎকার, পরিবারের অভিযোগ, মানসিক যন্ত্রণা, সামাজিক অসম্মানী আর সহ্য হয় না। আমাদের বাঁচান অথবা আমাদের কোন উপায়ে মেরে ফেলুন। আমরা কোথাও কোন অভিযোগ তুলব না।
বিনীত নিবেদক
আপনার একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত,
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
সংযুক্তি:
কার্যার্থে অনুলিপি প্রেরিত হল:
মিডিয়া
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.