সদ্য স্বাধীন দেশ। নেই কোনো অবকাঠামোগত সুবিধা। যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। চারদিকে স্বজন হারানো আহাজারি, ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তনাদ। ঠিক এমন সময়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক, বাঙালির মুক্তির দূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস। দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। উর্বর মাটি আর মানুষকে কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেন। বঙ্গবন্ধু সেদিন বুঝেছিলেন এদেশের মানুষকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্ত করতে হলে যুবসমাজকে কাজে লাগাতে হবে। যার কারণে বিশাল যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব দেন তৎকালীন বাংলাদেশের যুব রাজনীতির আলোকবর্তিকা শেখ ফজলুল হক মনিকে।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রধানত চারটি বিষয়কে সামনে রেখে শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের। যুবলীগের প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম-নিরপেক্ষতা, সকল ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের অধিকার তথা জাতীয় চার মূল নীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠা করা।
সময়ের বিবর্তনে দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রাম, সংকট এবং বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করা সংগঠনটি আজ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ যুব সংগঠন। বাংলাদেশ প্রতিটি গ্রামে রয়েছে যুবলীগের শক্তিশালী সংগঠন।
শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি ও স্বাধিকার আন্দোলনের নক্ষত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলনের সৃজনশীল যুবনেতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স তথা মুজিব বাহিনীর অন্যতম প্রধান কমান্ডার, গবেষক ও সাংবাদিক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কয়েককটি সংবাদপত্র প্রকাশের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটি ছিল মেধাবী আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত হতে মুখিয়ে থাকা যুব সম্প্রদায়ের পাঠশালা। কমিটির নেতৃত্বে আনা হয় মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ শিক্ষিত পেশাজীবীদের। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিটি অগণতান্ত্রিক অপচেষ্টা রুখে দিতে যুবলীগ ছিল অগ্রভাগে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। বঙ্গবন্ধুর পরে শেখ মনি হতে পারেন জাতির পরবর্তী পথ-নির্দেশক, যার কারণে সেদিন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকেও হত্যা করে খুনিরা। ইতিহাসের ন্যক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ডের পরপর আইন করে রুখে দেয়া হয় বিচার-প্রক্রিয়া।
তৎকালীন স্বৈরাশাসক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যুবলীগ। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন জাতিকে আলোয় ফেরাতে দেশে ফেরেন বঙ্গন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফেরার পর প্রতিটি মুহূর্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে যুবলীগ। স্বৈরাচার এরশাদ-বিরোধী আন্দোলন, ’৯১-৯৬ ও ২০০১-২০০৫ বিএনপির দুঃশাসন এবং এক-এগারো সরকারের সময়ে শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যুবলীগ। যুদ্ধাপরাধী, জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে সব সময় সোচ্চার ছিলো যুবলীগ। এসব আন্দোলনে অংশ নিয়ে যুবলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী নিহত, আহত হয়েছেন। জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন অসংখ্য নেতাকর্মী।
২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালে দ্বাদশ এবং ২০১৯ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতাসীন হওয়ার সুবাধে ক্ষমতার স্বাদ নিতে সরকারি দলে ভিড়েছে ভিন্নমতের মানুষ। যুবলীগও এর বাইরে ছিলো না। কিছু ভিন্নমত ও ক্ষমতা অপব্যবহারকারী অর্থলোভীর কারণে নানা সময়ে বিতর্কিত হয়েছে কোটি যুবকের ভালোবাসার সংগঠনটি। বির্তকের মুখে গত বছর যুবলীগের সংস্কার আনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুবলীগ থেকে অব্যাহতি পান বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা।
এরপর গত বছরের ২৩ নভেম্বর সপ্তম কংগ্রেসে সংস্কার পরবর্তী যুবলীগকে ঢেলে সাজাতে প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির জ্যেষ্ঠপুত্র, পরিচ্ছন্ন ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যুবলীগের মাঠের রাজনীতির দীর্ঘ সময়ের ত্যাগী নেতা মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
দায়িত্ব গ্রহণের পর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গত এক বছরে মানবিক রাজনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। শেখ পরশের নেতৃত্বে বিতর্কের কালিমা মুছে প্রতিষ্ঠাকালীন আদর্শে ফিরেছে যুবলীগ। অন্যের স্বার্থ ছিনিয়ে নেয়া থেকে বেরিয়ে মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছে যুবলীগ। সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করাকেই এখন আদর্শ হিসেবে দেখছেন যুবলীগের নেতাকর্মী। সেখানে একজন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকায় রয়েছেন শেখ পরশ।
গত ১৪ নভেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। পিতা শেখ মনির পথ বেয়ে বিতর্কমুক্ত তারুণ্য আর মেধাবীতে ঠাসা পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেশবাসীকে উপহার দিয়েছেন শেখ পরশ। গত বছর দায়িত্ব গ্রহণের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মীরা হ্যাপি হবে কি-না তা জানি না, কিন্তু জনগণ হ্যাপি হবে এবং দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন হবে’।
কথা রেখেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। শিক্ষিত মেধাবীদের সমন্বয় ঘটেছে কমিটিতে। যারা প্রযুক্তিময় বিশ্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সক্ষমতার পরিচয় দিতে সফল হবেন বলে অভিমত বিশ্লেষকদের। কমিটি স্থান দেয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় অবিচল থাকা উচ্চ মানবিক গুণাবলি-সম্পন্ন শিক্ষিত পেশাজীবীদের (যেমন: আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী)। তারা প্রত্যেকে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সামনের সারিতে থেকে লড়াই-সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। স্থান পেয়েছেন বেশ কয়েকজন তরুণ সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ইতোমধ্যে পরিচ্ছন্ন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে সুপরিচিত এমন অনেককেই আনা হয়েছে কমিটিতে। ছাত্র রাজনীতির মাঠের সফল ও সুপরিচিত বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতাকে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদে।
অবশ্য কমিটি কেমন হতে যাচ্ছে তা এক বছরের কার্যক্রম দেখেই বুঝা যাচ্ছিল। এক বছরের ব্যবধানে বিতর্কের কালিমা মোচন করে আর্দশিক জায়গায় ফিরেছে যুবলীগ। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে এগিয়ে নিতে বছরজুড়েই মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। সাংগঠনিক ভিত শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তৃণমূল সংস্কারের। ঘোষিত কমিটির মাধ্যমে যুবলীগের মানবিক কর্মকাণ্ডে বিদ্যুৎ গতি আসবে বলে ধারণা সুধী মহলের।
মানবিক যুবলীগ
বছরজুড়েই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে যুবলীগ। বিশেষ করে বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে সারা দেশে যুবলীগের মানবিক কর্মকাণ্ড সকলের নজর কেড়েছে। চেয়ারম্যান শেখ পরশের নির্দেশনায় কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করেছেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। মানবিক কাজে সন্তুষ্ট হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে যুবলীগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর শীতবস্ত্র নিয়ে ছুটে যান শীতার্ত ও বস্তিতে পোড়া অসহায়দের পাশে।
করোনা সংকটে মানবিকতার সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে যুবলীগ। কেন্দ্রীয়, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ মহানগরসহ সব মহানগর, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড যুবলীগের প্রতিটি ইউনিট অসহায় মানুষকে সহায়তা করেছে যুবলীগ। টানা ছয় মাস (মার্চ-আগস্ট) জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার শাখা কমিটিগুলো করোনায় মানবিক কর্মসূচিতে তৎপর ছিলো। করোনা সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, মাস্ক এবং স্যানিটাইজার বিতরণ, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে, সার্জিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ, মধ্যম ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের রাতের খাবার বিতরণ, করোনা প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন মানুষদের জন্য খাদ্য বিতরণ, ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সেবা, ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সেবা, মৃতদেহের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা, মৃত ব্যক্তির দাফন, কৃষকদের ধান কাটার সাহায্য করা, গরিবদের গৃহ নির্মাণসহ সারা দেশে ত্রাণ তৎপরতা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করেছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রের পাশাপাশি সংগঠনের কয়েকটি জেলা কমিটি ‘ভ্রাম্যমাণ বাজার’ ও ‘ডক্টরস সেফটি চেম্বার’-এর মতো ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছে। করোনা সংকটে যুবলীগের এসব কর্মসূচি ইতোমধ্যে সর্বমহলের প্রশংসাও কুড়িয়েছে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগীর খোঁজ মেলার পরপরই যুবলীগের এসব মানবিক কর্মসূচির সূচনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে নির্দেশনায় মাঠে নেমে পড়েন নেতাকর্মীরা। করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনার আলোকে দেশজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করে যুবলীগ। যুবলীগের মাধ্যমে সরাসরি সাড়ে ৪৩ লাখ মানুষ খাদ্যসহায়তা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে দেয়া রমজান ও ঈদ সামগ্রী এবং ভাইরাসের সুরক্ষাসামগ্রী পেয়েছে অন্তত এক কোটি মানুষ।
করোনাভাইরাসের শুরুতেই সারা দেশে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায় যুবলীগ। প্রতিটি ইউনিটে মাইকিং এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। গত ৮ মার্চ করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সুরক্ষাসামগ্রী মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হেক্সিসল ও সাবান বিতরণ শুরু হয়। ২৬ মার্চ অঘোষিত লকডাউন শুরুর দিন থেকেই শুরু হয় খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি। কর্মহীন হয়ে পড়া মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও হতদদ্রি মানুষের মাঝে সারা দেশে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেয়া হয়। শ্রমজীবী, গার্মেন্টস শ্রমিক, বিভিন্ন কারখানা শ্রমিক, রিকশা-ভ্যান চালক, বধির প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, মুচি, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়, বস্তির মানুষসহ অসহায় মানুষকে খাদ্যসামগ্রী (চাল, ডাল, তেল, আলু, লবণ, সবজি, দুধ) ও নগদ অর্থ মানবিক সহায়তা দেয়া হয়। ট্রাক ও রিকশা ও ভ্যানে করে বস্ত্রিবাসীদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, দিনমজুর ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের অসহায় মানুষের পাশাপাশি করোনার সম্মুখযোদ্ধ চিকিৎসক, নার্স ও পুলিশের পাশে দাঁড়ায় যুবলীগ। রাজধানীর সারা দেশে করোনাযোদ্ধাদের সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
করোনা সংকটের মধ্যেই বন্যা বাংলাদেশের জন্য নতুন দুর্যোগ হয়ে দাঁড়ায়। কেন্দ্রের নির্দেশনার পর সারা দেশে বনার্তদের পাশে দাঁড়ান যুবলীগের নেতাকর্মীরা। নৌকা, ট্রলারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বনার্তদের সহায়তা পৌঁছে দেন যুবলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। শ্রমিক সংকটে অসহায় হয়ে পড়ে কৃষক। সারা দেশে কৃষকদের ধান কেটে বাড়ি তুলে দিয়ে মানবিকতার আরেক নিদর্শন দেখিয়েছে যুবলীগ।
এপ্রিলের শুরুতেই ঢাকা মহানগরের রোগীদের যাতায়াত সংকট বিবেচনা করে যুবলীগ ২৪ ঘণ্টা ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করে। এরপর বিভিন্ন মহানগর ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু হয়। একই সঙ্গে করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগের নির্বিঘেœ জরুরি চিকিৎসাসেবা পেতে সাধারণ মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সেবাও চালু করে যুবলীগ। রমজান মাসেজুড়ে কর্মসূচিতে ভিন্ন আনা হয়। খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি শুরু হয় ইফতার সামগ্রী ও রান্না করা খাবার বিতরণ। পুরো মাস ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনউস্থ কেন্দ্রীয় কাযালয়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও পান্থপথ মাঠে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে কয়েক শতাধিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী অসহায় মানুষকে নতুন কাপড়, খাবার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে বছরব্যাপী যুবলীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ কর্মসূচি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত পালিত হয়েছে। গত আগস্ট মাসজুড়ে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মানবিক কর্মসূচি পালিত হয়। পুরো মাস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোরআন খতম ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। মূলত হাল ধরার পর থেকেই যুবলীগকে মানবিক কর্মকাণ্ডের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে মেলে ধরেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.