রিপোর্টারঃ
রাজধানীর শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, মোঃ মনজুরুল হক শিক্ষকতার আড়ালে লাইসেন্স ছাড়াই ডেভলপার ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
তার রয়েছে করোলা ফিল্ডার গাড়ি যার নম্বর ঢাকা মেট্রো-গ-২৮৪৩৬১। অবৈধ আয়ের টাকায় সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়াতে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষকতা পেশা নামমাত্র। তার মূল ব্যবসা বিল্ডিং ডেভলপিং। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পরিচিত মহলে প্রচারণা চালিয়ে সদস্য সংগ্রহ করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রয় করে বিল্ডিং নির্মাণের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন শিক্ষক মোঃ মঞ্জুরুল হক।সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে কামিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। যা তার ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ নেই। উত্তরখান, মাস্টারপাড়া, কুড়িপাড়া জিয়াবাগ, ময়নারটেক, চাঁনপাড়া সহ দক্ষিণ খান আর্মি সোসাইটি, দিয়াবাড়ি ইত্যাদি স্থানে তার প্রায় ১১ থেকে ১২টি বিল্ডিং প্রজেক্ট এর কাজ রয়েছে। বর্তমানে চলমান লাভজনক প্রজেক্টের মধ্যে আর্মি সোসাইটিতে দুইটি এবং ময়নারটেক সরকারি স্কুলের সন্নিকটে একটি প্রজেক্ট চলমান। ইতোমধ্যে এ সকল প্রজেক্টের অধিকাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন। একটি প্রজেক্টে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত শরিকদের সাথে মামলা জনিত ঝামেলায়ও জড়ান এ শিক্ষক।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে ময়নারটেক স্কুল সন্নিকটে প্রজেক্টের দায়িত্বশীল একজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই ব্যক্তি জানান, এখানে অবশিষ্ট থাকা দুটি শেয়ারের একটি বিক্রি করার চেষ্টাও করছেন মঞ্জুরুল হক। আর এই ডেভলপার ব্যবসায় অনেকের সাথে লেনদেন জড়িত ঝামেলার কারণে বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট থেকে তিনি বিতাড়িত হয়েছেন ।
মূলত তার কোন লাইসেন্স না থাকায় ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে শক্ত কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন না বলে অনেকে তার কর্মস্থলে এসে টাকা দাবি করেন। ।বিভিন্ন লোভনীয় অফারে তার কর্মস্থলের কয়েকজন শিক্ষককে ইতিমধ্যে তিনি তার সাথে ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে উদ্বুদ্ধ করছেন বলেও গোপন সূত্রে জানা যায়।
২০০২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ বছর যাবৎ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে চাকুরি করার সুবাদে তিনি একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। যে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিস্তৃত করেন তার ডেভলপার ব্যবসা,হয়ে ওঠেন কোটি কোটি টাকার মালিক।
আরও জানা যায়, ডেভলপার ব্যবসার পাশাপাশি তিনি কসমোপলিটন স্কুল এন্ড কলেজ সূত্রাপুর এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। যদিও সেখান থেকে তিনি পরবর্তীতে বহিষ্কৃত হন। ২০২১ সালে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের কেন্দ্রীয় মসজিদের উত্তর পাশের ভবন মাসিক সাড়ে ছয় লক্ষ টাকায় ভাড়া নিয়ে ব্রাইটন একাডেমি নামক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন কয়েকজন শেয়ার হোল্ডারকে সাথে নিয়ে। কিছুদিন পর অন্যান্য শেয়ার হোল্ডার কর্তৃক সেখান থেকেও বহিষ্কৃত হন তিনি।
এ সকল বিষয়ে মঞ্জরুল হকের মতামত জানতে তার কর্মস্থল শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে তার মুখোমুখি হলে তিনি এ সকল বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করেন।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তার পক্ষে জাহিদ ফারুকী নামক একজন ব্যক্তি সাংবাদিককে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে জাহিদ ফারুকী পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ছবি সাংবাদিকের মুঠো ফোনে পাঠিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে তিনি একাধিক মেসেজ পাঠিয়ে কয়েকটি ডিলিট ও করে ফেলেন। পরবর্তীতে জহিরুল ইসলাম নামে আরও একজন ব্যক্তিকে দিয়ে সাংবাদিককে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।
বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.