বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : অঘটন বললে ভুল বলা হবে। তার চেয়ে বলা ভালো যে, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফুটবলবিশ্ব দুটি অন্যতম বড় চমকের সাক্ষী থাকল। প্রথমে লিভারপুলের কাছে বার্সেলোনার অপ্রত্যাশিত হার এবং পরে লুকাসের একক প্রচেষ্টায় আয়াক্সের বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় জয়ে টটেনহ্যামের ইতিহাস সৃষ্টি।
বার্সেলোনার বিরুদ্ধে প্রথম লেগে ০-৩ গোলে পিছিয়ে থাকা লিভারপুল ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে জয় তুলে নেয়। এটা অস্বাভাবিক না হলেও যেমন স্বাভাবিক বুদ্ধিতে বোধগম্য হওয়া মুশকিল। এর চেয়েও বুঝে ওঠা আরও কঠিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অপর সেমিফাইনালের গতিবিধি।
টুর্নামেন্টে জায়ান্ট কিলার হিসাবে খ্যাতি পাওয়া আয়াক্স টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে প্রথম লেগের অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-০ গোলে জয় তুলে নিয়েছিল। জুভেন্টাস ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো চ্যাম্পিয়ন দলকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেওয়া আয়াক্স ঘরের মাঠে টটেনহ্যামকে আটকে দেবে, এমনটাই ধরে নিয়েছিল ফুটবলবিশ্ব।
ফিরতি লেগের প্রথমার্ধেই আয়াক্স ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে হটস্পারের বিদায় কার্যত সময়ের অপেক্ষা বলে মনে হচ্ছিল। তবে চিত্রনাট্যে যে এমন চমকপ্রদ মোড় রয়েছে, তা অনুমান করতে পারেনি কেউই। দ্বিতীয়ার্ধে টটেনহ্যানের দুরন্ত ফুটবলে দিশেহারা আয়াক্স এমন অসহায় আত্মসমর্পণ করবে, তা ভাবা যায়নি। লুকাসের একক আগ্রাসনে খেই হারিয়ে আয়াক্স শেষ পর্যন্ত হার মানে ২-৩ গোলে। প্রবল চাপের মুখে এমন বড় মঞ্চে হ্যাটট্রিক করে টটেনহ্যামকে অবিস্মরণীয় রাত উপহার দেন লুকাস মউরা।
গত দু’দশকে টটেনহ্যামই প্রথম দল, যারা দু’গোল পিছিয়ে থেকেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল ম্যাচ জিতে নিলো। শেষবার এমনটা করে দেখাতে পেরেছিল আর এক প্রিমিয়র লিগ জায়ান্ট ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়া সত্ত্বেও তারা ১৯৯৯ সালে জুভেন্টাসকে হারিয়েছিল।
টটেনহ্যামের এই ম্যাচে জয়ের অর্থ দুই লেগ মিলিয়ে সেমিফাইনালের স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩। আয়াক্সের একটি অ্যাওয়ে গোলের তুলনায় টটেনহ্যামের তিনটি অ্যাওয়ে গোল এক্ষেত্রে নির্নায়ক হয়ে দাঁড়ায়। অ্যাওয়ে গোলর ভিত্তিতেই আয়াক্সকে পিছনে ফেলে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠে টটেনহ্যাম। ফাইনালে তারা মাঠে নামবে প্রিমিয়র লিগের খেতাবের দৌড়ে থাকা লিভারপুলের বিরুদ্ধে।
এদিন জোহান ক্রুয়েফ এরিনায় ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় লাস শোনের পাস থেকে গোল করে আয়াক্সকে এগিয়ে দেন ম্যাথিস ডি’লাইট। ৩৫ মিনিটে দুসান তাদিচের পাস থেকে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুন করেন হাকিম জিয়েচ। এরপর লুকাস ৫৫ মিনিটে ডেলে আলি ও ৫৯ মিনিটে ভেল্টম্যানের পাস থেকে গোল করে টটেনহ্যামকে সমতায় ফেরান। ইনজুরি টাইমের একদম শেষ মুহূর্তে (৯০+৬ মিনিট) ডেলে আলির পাস থেকেই আয়াক্সের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন লুকাস।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.