করীম রেজা
কয়েকদিনের মধ্যেই আগামী বছরের বাজেট জাতীয় সংসদে পাস হবে। বাজেট
ঘোষণার আগেই দেশের আর্থিক ক্ষেত্রে, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর
আর্থিক সঙ্কটের বিষয় নিয়ে গণমাধ্যম এবং বিশেষজ্ঞ মহলে প্রচুর আলোচনা
হচ্ছিল। আর্থিক বিষয়ে অভিজ্ঞ মহলের পক্ষে-বিপক্ষে ছিল মুখর সমালোচনা।
সরকারি বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ব্যবস্থাপনা সংকট ও জবাবদিহির অভাবে দিনের পর
দিন সমস্যা বেড়েই চলেছে। এমন অবস্থায় বুদ্ধিজীবী মহল সঞ্চয়পত্রের সুদের হার
কমিয়ে আনাই একমাত্র নিদান বলে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। অধিকাংশ অর্থশাস্ত্র
বিশারদ বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দিলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকৃত সব
টাকা এনে মানুষ ব্যাংকে জামা রাখবে। ব্যাংকে আমানত উপচে পড়বে।
সরকারি কর্মকর্তাগণও সাধারণ মানুষের জন্য সঞ্চয়পত্র কেনার প্রক্রিয়া অত্যন্ত
কঠিন করে তুলেছেন। অন্যদিকে ব্যাংকে একাউন্ট খোলার বিধি-বিধান
একেবারেই সরল ও শিথিল করেছেন। ভাবখানা এই রকম যে, সাধারণ মানুষ ব্যাংক
হিসাবের জটিলতা না থাকায় সমস্ত টাকা সঞ্চয় পত্র থেকে তুলে নিয়ে ব্যাংকে
জমা রাখবেন। ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ রাতারাতি আকাশছোঁয়া হবে। ব্যাংক
তখন এক অংকের স্বল্প সুদে বিনিয়োগকারীদের ঋণ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। দেশের
বর্তমান উন্নতি বিদ্যুৎ গতিতে আরও বেগবান হবে।
সব ক্ষেত্রেই তত্ত্বের প্রয়োগ কাগজে, কলমে, পরিসংখ্যানে যত সরল সহজ; বাস্তবে
তার প্রতিফলন ভিন্ন। অধিকাংশ সময়ই এক রকম হয় না বলেই বাংলার সমাজে বহুল
প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে- কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নাই।
সঞ্চয়পত্রের ক্রেতা গ্রাহক নি¤œ আয়ের মানুষ, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর, তবে নিচের স্তরের
মধ্যবিত্ত,সরকারি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী লোকজন। মূলত সঞ্চয়পত্র
এদের জন্য এক ধরনের সামাজিক সুরক্ষার নামান্তর। পাশাপাশি সরকারের প্রয়োজনে
সহজ ঋণ গ্রহণের মাধ্যম।
অতীত অভিজ্ঞতায় সরকার ব্যাংকের সুদের হার কমিয়ে দেয়ার পর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ
বহুগুণ বেড়েছে। তার কারণ হতে পারে ব্যবসা শিল্পে বিনিয়োগ না করে, টাকা
এফডিআর করে ব্যাংকে রেখেছেন। ব্যাংক থেকে উচ্চ হারে সুদে আয় করবেন।
ব্যাংক সুদ কমে যাওয়ায় তারা সঞ্চয়পত্র কেনা শুরু করেন। যদিও পারিবারিক সঞ্চয়পত্র
কেনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৫ লক্ষ টাকা সীমা নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু অন্যান্য
সঞ্চয়পত্র কেনার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। এই সুযোগেই উচ্চবিত্ত ও
ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের লোকজন নামে-বেনামে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে।
তাছাড়া, কেউ নির্দিষ্ট সীমার বেশি সঞ্চয় পত্র কিনল কিনা তা যাচাইয়ের কোনো
কার্যকর ব্যবস্থা নেই। থাকলেও তা যথাযথ প্রয়োগের কোনো প্রমাণ নেই। ফলে
অর্থ-বিত্ত-প্রভাবশালীরা ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে
বিনিয়োগ না করে সঞ্চয়পত্র কিনে সহজ আয়ের ব্যবস্থা করেছে বলে অনেকেই বলেন।
এই সব অনিয়ম যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ বা নিয়মের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা
হয়নি। তারপরও আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্র ক্রয় ব্যবস্থা কঠিন করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্র-
নির্ভর স্বল্পসংখ্যক মানুষের বেঁচে থাকার পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন
আগে দুই কপি ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা যেত। কিন্তু এখন
টিআইএন নম্বর যুক্ত করা বাধ্যতামূলক। সোজা কথায় আয়কর নিবন্ধন না থাকলে
এখন আর কেউ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না। আয়কর নিবন্ধন থাকা অবশ্যই দরকার এবং
এতে কারো জন্যেই দোষের কিছু নাই বরং রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য আয়কর নিবন্ধন
থাকা কল্যাণকর, যদি নিবন্ধনকারীর আয় করযোগ্য হয়।
স্মরণীয় যে, সঞ্চয়পত্রের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর আয় করসীমার মধ্যে না হলেও সরকার
৫% হারে কর কেটে রাখছে। এবারের বাজেটে তা বাড়িয়ে ১০% করা হয়েছে।
সঞ্চয়পত্রের সুদ হার অপরিবর্তিত রেখে উৎসে কর বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা
বানানোর চেষ্টা হয়েছে। ১ জুলাই থেকে বেশি কর কেটে নেয়া হবে। তাই সঞ্চয়
ব্যুরো, পোস্ট অফিস এবং সোনালী ব্যাংকে শত শত মানুষের লম্বা লাইন, টাকা
ওঠানোর জন্য। অথবা নতুন সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মহলে আয়কর বিভাগসহ আরো কিছু বিভাগ স¤পর্কে
নেতিবাচক ও বিরূপ ধারণা আছে। একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান বিশেষত ছোটখাটো দোকানদারগণ প্রায়ই আয়কর কর্মকর্তাদের
ব্যাপারে তটস্থ থাকতেন। এমনও দেখা যেত কোন এলাকার একটি দোকানে ইনকাম
ট্যাক্স অফিসার এসেছে এই খবর জানার পরে আশেপাশে সমস্ত দোকানপাট
মুহূর্তের মধ্যেই বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা সরে যেতেন। কারণ ইনকাম ট্যাক্স-এর নানান
রকম বিধি-বিধান এবং চাহিদামতো প্রামাণ্য কাগজপত্র এইসব ব্যবসায়ী
সংরক্ষণ করতেন না বলে তারা ইনকাম ট্যাক্স অফিসারদের দ্বারা হেনস্থা ও হয়রানি
হতেন। এমতাবস্থায় অর্থের বিনিময়ে রফা করে আয় কর না দেয়া নিশ্চিত করতেন
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে যে টাকা-পয়সা ব্যবসায়ীর পকেট থেকে
গচ্চা যেত তার পরিমাণ কম ছিল না। বাস্তবতা হলো- যথাযথ কাগজপত্র আয়কর
বিভাগকে দেখাতে পারলে ওই ব্যবসায়ীকে আয়কর দিতে হতো না। কিন্তু পরিস্থিতির
সুযোগে আয়কর বিভাগের অসততা দৌরাত্ম ও হয়রানি করার মনোভাবের কারণে
আয়কর আদায় যেমন কম হতো তেমনি এক ধরনের ভয় বা আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজমান
থাকত, এখনও কমবেশি তা আছে।
রাষ্ট্রীয় কোষাগারের স্বাস্থ্য দুর্বল হলেও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
পকেটের স্বাস্থ্য আক্সগুল ফুলে কলা গাছের মতোই হওয়া ছিল সাধারণ নিয়ম। এখনো
যে কমবেশি সেই নিয়ম নেই জোর দিয়ে তেমন কথা বলা যায় না। এই অবস্থার
মধ্যে সাধারণ মানুষ যার কাছে ২/৪ লাখ টাকা যে কোনোভাবেই হোক সঞ্চিত
আছে, যিনি বয়সের কারণে, বুদ্ধির অভাবে বা সক্ষমতা না থাকায় অন্য কোনো
কারণে নিরাপদ বিবেচনায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে সংসার যাত্রা
নির্বাহ করতে চান, তার পক্ষে কি করে সম্ভব আয়কর নিবন্ধন সংগ্রহ করা? অথবা
সংসার খরচের যাবতীয় খুটিনাটি হিসাবের প্রামাণ্য কাগজপত্র সংরক্ষণ করা,
যেখানে ক্যাশমেমো দেয়ার পরিবেশ পাড়ার দোকানে নেই, ছিলও না।
যদিওবা তার পক্ষে এসব কাগজপত্র সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়ও, তারপরও তাকে একমাত্র আয়
সঞ্চয়পত্রের সুদের একটা বিশেষ অংশ ব্যয় করতে হবে টিআইএন ফাইল দাখিল করার
জন্য। এই ক্ষেত্রে যদি আমরা যুক্তির খাতিরে ধরে নেই আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা
মহোদয় অত্যন্ত সদাশয় এবং সংবেদনশীল মনের অধিকারী হয়ে ওই ব্যক্তির আয়-ব্যয়
সংক্রান্ত বিষয়টি সৎভাবে বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, তাহলে তার হয়রানি
কিছু কম হবে। কিন্তু তা যদি না হয় তবে ওই ব্যক্তির জন্য একজন আয়কর উকিল
অবশ্যই দরকার হবে। যিনি তার পক্ষে সমস্ত কাগজপত্র দেখে শুনে আয়কর বিভাগে জমা
দিবেন। এই কাজটুকু করার জন্য উকিল সাহেবকে অর্থ দিতে হবে। কোনো
কোনো ক্ষেত্রে এমনও হতে পারে উকিল এবং সংশ্লিষ্ট আয়কর কর্মকর্তা দুজনকেই
অর্থ দিয়ে টিআইএন ফাইল যথাযথভাবে দাখিল করতে হবে। যাতে ওই ব্যক্তির কোনো
আয় কর দিতে না হয়।
বিপরীত দিকে আরেকটি চিত্র রয়ে যায়, নামে-বেনামে সঞ্চয়পত্র ক্রেতার অর্থের জোর
বেশি। তারা অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে উকিল, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মাধ্যমে করযোগ্য
আয় শূন্য দেখিয়ে রিটার্ন দাখিল করবেন। এতে সরকারি আয় না বাড়লেও এক ধরনের
দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সবল হবে। সংশ্লিষ্টদের অনৈতিক আয় বাড়বে
এবং ভোগান্তি বাড়বে ক্ষুদ্র, স্বল্প, নি¤œ আয়ের সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ নির্ভর
মানুষের। নিদিষ্ট সামান্য আয়ের অংশ থেকে ব্যয় হবে তার মানে কম আয় আরো
কমে যাবে। যা দিয়ে তার সাংসারিক খরচ মেটানো কঠিন হবে। এইভাবে চলতে
থাকলে একদিন ওই ব্যক্তি সঞ্চিত জমানো টাকা খরচ করে টিকে থাকার লড়াই করতে
করতে নিঃস্ব ভিখিরিতে পরিণত হবেন।
কারা বিপুল অংকের সঞ্চয়পত্র ক্রেতা, এটি বিবেচনা করে যাতে যথেচ্ছা পরিমাণ
সঞ্চয়পত্র কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিনতে না পারে তেমন ব্যবস্থা করা অত্যন্ত
জরুরি। কয়েকদিন আগে একটি টেলিভিশনের টকশোতে অর্থনীতিবিদ আহসান
এইচ মনসুর খুব জোর দিয়ে বলছিলেন- দেশের অর্থ ক্ষেত্রে সংকটের একমাত্র নিদান
সঞ্চয়পত্রের সুদ কমিয়ে দেয়া। অন্য আলোচক প্রশ্ন তুলেছিলেন সরকারি
অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীদের কি হবে? তার উত্তরে তিনি সরকারকে অবসরপ্রাপ্ত
কর্মচারীদের পেনশনের টাকা বাড়িয়ে দেয়ার কথা বলেন। অন্যদিকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারী
নি¤œ মধ্যবিত্ত শ্রেণী অথবা বেসরকারি অবসরপ্রাপ্ত লোকজনের আয় কমে যাওয়ার
বিপরীতে তার কাছে কোনো সমাধান পাওয়া গেল না। এই বিষয়ে তিনি কোনো
মত দিলেন না।
উচ্চবিত্ত, যারা শিল্প বা ব্যবসায়ী ঋণ নিয়ে ব্যবসা শিল্প আমদানি রপ্তানি
ইত্যাদিতে বিনিয়োগ না করে সঞ্চয়পত্র কিনে উচ্চ হারে মুনাফা নিয়ে প্রচুর
আয় করছেন, তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কিংবা নিরুৎসাহিত করার কোনো উপায়ের
কথা তিনি বললেন না। তার মতামত কমবেশি আরেকজন আলোচক জনাব মামুন রশিদ
সমর্থন করলেন। দ্বিমত পোষণ করলেন একমাত্র জনাব ইব্রাহিম খালেদ। এখানে
আরেকটি বিষয় বিবেচনার দাবি রাখে, যারা বিভিন্ন সময় নানা পর্যায়ে
সমাধানের সূত্র নির্দেশ করেন, তারা অতি, অতি উচ্চ বেতনে দেশি-বিদেশি
বহুজাতিক বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। দেশের সাধারণ মানুষ
নিয়ে তাদের ভাবনা-চিন্তা খুব সীমিত। যতটুকু ভাবেন তার অধিকাংশই
তাত্ত্বিক বা শাস্ত্রীয় ভাবনা । তারা সব সময় উচ্চবিত্তের সুবিধা ও অসুবিধা
সংকট সমাধান ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামান। এক ধরনের প্রেশার গ্রুপ
হিসেবে উচ্চবিত্তের সম্ভাব্য সব রকম সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করেন।
এই সাধারণ স্বল্প আয়ের সঞ্চয়কারীদের কোন সংগঠিত প্রেশার গ্রুপ নাই। তাদের
পক্ষে জোর দিয়ে কথা বলার কেউ নাই। একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব আলী ইমাম
মজুমদার পত্রপত্রিকায় বা গণমাধ্যমে মাঝেমধ্যে এ বিষয়ে কিছু লেখালেখি করেন।
হয়তো তা সরকারি পেনশনারদের ক্ষেত্রে সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজে লাগবে। কিন্তু
এই সাধারণ মানুষের কথা কেউ বিবেচনা করছে না। সরকারি নিয়ম নীতি আইন
কানুন যারা লিখেন তারাও এই নি¤œ আয়ের মানুষের অসুবিধার কথা যতোটুকু
মাথায় রাখেন তার চেয়ে বেশি রাখেন তাদের স্বজাতি উচ্চবিত্তের মানুষের
সুবিধার কথা।
কারণ তারাও সরকারি বেতনের দিক থেকে উচ্চবিত্ত। সেদিনের আলোচনায় জনাব
ইব্রাহিম খালেদ যথার্থই বলেছেন নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সঞ্চয়পত্র এক ধরনের
সামাজিক সুরক্ষা বলয় তৈরি করেছে। অন্য আলোচকরা বয়স্ক ভাতা এবং অন্যান্য
সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের কথা উল্লেখ করেছেন সঞ্চয়পত্রের সামজিক সুরক্ষা প্রভাবের
বিপরীতে। কিন্তু একবারও ভাবেননি বয়স্ক ভাতা মাসিক ৫০০ কিংবা হাজার টাকা
দিয়ে আর যাই হোক সংসার চালানো যায় না এবং এতে কোন সুরক্ষা বলয় তৈরি
হয় না, কেবলমাত্র সামান্য সহযোগিতা ছাড়া।
দেশে কালো টাকা সাদা করার নিরবচ্ছিন্ন সুবিধা প্রতি বছর বাজেটে দেয়া
হয়। এই বছর দেখা গেল স্বর্ণও সাদা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তথাকথিত
ব্যাংকিং সেক্টরে সংকট নিরসনে স¤পূর্ণ সুবিধা উচ্চবিত্ত সমাজের ধনিক
শ্রেণীর জন্য। কিন্তু সাধারণ স্বল্প সঞ্চয় দিয়ে যারা কায়ক্লেশে জীবন নির্বাহ করেন
তাদের সুবিধার কথা না ভেবে বরং নানান রকম অসুবিধা তৈরি করা হচ্ছে।
সঞ্চয়পত্রের সুবিধা ভোগীদের দুরবস্থার কথা তথাকথিত অর্থনীতিবিদেরা
আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করলে দেশ ও জাতির কল্যাণ। তারা কখনোই
ঋণখেলাপিদের টাকা উদ্ধারের জন্য কোনো চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন না কারণ ওই
ঋণখেলাপি সমাজের পরোক্ষ সুবিধা ভোগ করেন তারাও। সেই কারণে যত নিয়ম
কানুন বিধিবিধান কঠিন করে প্রয়োগের সুপারিশ করা হয় শুধুমাত্র নি¤œ
আয়ের সঞ্চয়পত্রের সুবিধাভোগী ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর উপর।
ব্যাংক ঋণের অর্থ লোপাট, ঋণখেলাপিদের অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি কর্মচারীদের
বেতনভাতা বৃদ্ধিসহ নানারকম সুবিধা প্রদান, বিভিন্ন ব্যবসায়ে প্রণোদনা
দিতে,ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে যে অর্থ খরচ হয় তার তুলনায়
সঞ্চয়পত্র সুদের অংক বিরাট কিছু নয়। তাই সঞ্চয়পত্রে প্রকৃত সঞ্চয়ীদের
বিনিয়োগ সহজতর রাখা,সুদ না কমানো, কর বৃদ্ধি না করা মঙ্গলজনক।
-করীম রেজা, কবি ও শিক্ষাবিদ
শধৎরসৎবুধ৯@মসধরষ.পড়স
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.