ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান (এনডিসি) বলেছেন, “স্বেচ্ছাসেবককে গুরুত্ব দিয়ে সরকার একটি নীতিমালা তৈরি করেছে। যে কোন বয়সের মানুষ স্বেচ্ছাসেবক হতে পারেন। কেউ চাইলে বিদেশ থেকেও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারবেন।”
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ব স্বেচ্ছাসেবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “সবার জন্য সবকিছু” প্রতিপাদ্যে বিশ্ব স্বেচ্ছাসেবী দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টারি সার্ভিস ওভারসিজ বাংলাদেশ (ভিএসও) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সচিব কামরুল হাসান বলেন, “এ মুহূর্তে বিভিন্ন সেক্টরে ৭৭ লাখ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। সরকার তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশে এত মানুষ নেই। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ হয়ে থাকে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সকল দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা যদি হৃদয় দিয়ে কাজ না করতো তাহলে সফল হতে পারতাম না।”
২০২১ সালে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য জাতিসংঘ থেকে পুরস্কার পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সরকারের এককভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। গত বন্যার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। যে কোন দুর্যোগে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এসে কাজ করি।”
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মানিকহার রহমান ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক মঈনউল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন ভিএসও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডাইরেক্টর খাবিরুল হক কামাল।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক মানিকহার রহমান বলেন, “সরকার এনজিওগুলোর মাধ্যমে ৯ লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এটা সফলভাবে শেষ করতে পারলে সাধারণ মানুষ অনেক লাভবান হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ৭২ লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এর মধ্যে ২৩ লাখ মানুষ উদ্যোক্তা হয়েছে। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দুইজনকে প্রশিক্ষণ নিলে একজনকে কাজে লাগানো।”
তিনি বলেন, “যুব উন্নয়ন থেকে সাতদিন থেকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটা বাড়ানোর জন্য সরকার কাজ করছে। তবে বাজেটে বরাদ্দ কম থাকায় অনেক কাজ করা যাচ্ছে না। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে চলতি অর্থ বছরে ২ হাজার ১০০ কোটি বরাদ্দ চাওয়া হলেও মাত্র ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা আগের অর্থবছরেই বরাদ্দ ছিল।”
এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক মঈনুল ইসলাম বলেন, “সরকারের যে কোন দপ্তর থেকে নিবন্ধিত হলে বিদেশি ফান্ড পাওয়ার কথা। কিন্তু একটি পরিপত্রের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এনজিও ব্যুরোর পক্ষ থেকে পরপত্র ও আইনের বিষয়গুলো সংশোধনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
ভিএসওর কান্ট্রি ডিরেক্টর খারিরুল হক কামাল বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। ভবিষ্যতে সুন্দর দেশ গড়তে হলে স্বেচ্ছাসেবীদের এগিয়ে আসতে হবে। সব স্বেচ্ছাসেবক একত্রে কাজ করতে পারলে দেশকে একটি সমৃদ্ধির জায়গায় নেওয়া সম্ভব। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ভিএসও প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে অনুষ্ঠান করেছে। আগামীতে আরো বড়ভাবে এমন আয়োজন করা হবে।”
এতে আরও বক্তব্য দেন, ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি ড. আরমান হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি রেহনুমা রিদি, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমগ্রুভড নিউট্রিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার, ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন রোল্যান্ড ফোর্বস, ইউএনএফপিএ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মাসাকি ওয়াতাবে, সুইডেন দূতাবাসের প্রথম সচিব নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারস্টেন্স।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ভিএসও বাংলাদেশের প্রকল্প ম্যানেজার মো. শফিকুর রহমান।
শেষে দেশের ২১ জন স্বেচ্ছাছাসেবীকে তাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদকঃ আশিক সরকার
Copyright © 2025 Bporikromanewsbd.com. All rights reserved.