Home বিনোদন বিজয় দিবসে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পোষ্টমাস্টার-৭১’ একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র

বিজয় দিবসে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পোষ্টমাস্টার-৭১’ একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র


অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: :

প্রতিটি মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। তবে কেউ কেউ ছাড়িয়ে যান নিজের স্বপ্নকেও। অসংখ্য ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসহ ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির খ্যাতনামা নায়ক জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ তেমনি একজন। কলকাতা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন ছবিতে এখনও টানা কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এমএ পাশ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী হিসেবে ছাত্রজীবনের মধুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জীবনে টিএসসিতে সময় কাটানোর মজাই আলাদা’। নিজের ক্যারিয়ার, চলচ্চিত্র নির্মাণ ও অভিনয়সহ নানা বিষয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ও পায়রা.নিউজ’ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খানের সাথে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ একান্তে কথা বলেছেন। তাদের কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: এবারের বিজয় দিবসকে সামনে রেখে আপনার প্রোডাকশন থেকে নির্মিত হওয়া ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ছবিটি প্রসঙ্গে কিছু বলুন?

চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ : আমার প্রযোজনা সংস্থা নুজহাত ফিল্মস থেকে করা ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর ছবি ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ একই সাথে বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স ও যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস এ বছরের বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ১৪ ডিসেম্বর শুভমুক্তি পাচ্ছে। ‘গ্রামীন ফোন-চ্যানেল আই বিজয় উৎসব ২০১৮’ তে ১৬ ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার চ্যানেল আইতে দুপুর ৩.০৫ মিনিটে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে বিজয়ের মাসেই সবাই ছবিটি দেখতে পারবেন। ‘এক কাপ চা’, ‘হঠাৎ সেদিন’ এর পর আমার তৃতীয় প্রযোজনা ছবি ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: আপনার বন্ধুর পরিচালনায় নির্মিত হওয়া চলচ্চিত্র ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ এ মুক্তিযুদ্ধের কোন্ দিকটি তুলে ধরা হয়েছে?

চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ : আমার বাল্যবন্ধু অভিনেতা নির্মাতা আবীর খান ও রাশেদ শামীম যৌথভাবে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ছবিটি এর আগে কয়েক দফা মুক্তি দেওয়ার তারিখ ঘোষণা করা হলেও বিভিন্ন কারণে পেছানো হয়। বেশ কয়েক মাস আগে চলচ্চিত্রটি এফডিসি’র সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। ছবিটি নিয়ে বলার আছে অনেক কিছু। তবে শুধু এটুকু বলতে চাই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্র এটি। ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ফিল্মটি মূলত মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পোষ্টমাস্টার বা ডাকপিওনরা তাদের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কিভাবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন তা দেখানো হয়েছে। ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ফিল্মের রচয়িতা আমি ফেরদৌস আহমেদ। আমাকে দেখা যাবে পোষ্টমাস্টার চরিত্রে। গতানুগতিকের বাইরে যেয়ে কিছু সত্য ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ছবিতে আপনার সাথে কে কে অভিনয় করেছেন?

চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ : এ ছবিতে আমাকে একজন মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। দীর্ঘ সময় পরে এ ছবিতে আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমি। এছাড়া চলচ্চিত্রটিতে আরো অভিনয় করেছেন নতুন দিনের নায়ক অভি, অমিত হাসান, শহীদুল আলম সাচ্চু, আল মনসুর, সানজিদ খান প্রিন্স, প্রহর, নিঝুম, রুবিনা প্রমুখ। বালবন্ধু আবীর খান ও রাশেদ শামীমের যৌথ পরিচালনা ও আমার প্রযোজনা সংস্থা নুজহাত ফিল্মস থেকে করা ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ছবিটি নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: অনেক ছবি নিয়ে নির্মাতারা আশাবাদী হচ্ছেন, কিন্তু বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্রের সফলতা আসছে না-এর কারণ হিসেবে কিছু বলবেন কি?

চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ : এই ধরনের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের ছবি আমাদের দেশে নির্মাণ হয় কম, তাছাড়া দর্শকদের চাহিদা নির্মাতারা বুঝতে পারছেন না। ভিন্নধারার সুস্থ চলচ্চিত্রের ক্ষরা সবসময়ই ছিল। আকালের পর সুদিন এসেছে। আবার চলচ্চিত্রে আকাল দেখা যাচ্ছে। মেধাবী অভিনেতা-অভিনেত্রী থাকলেও মেধাবী পরিচালকের অভাব রয়েছে আমাদের। এর কারণ হচ্ছে দর্শকরা কি ধরনের গল্প দেখতে চান তা নির্মাতারা ভালোভাবে বুঝতে পারছেন না। মানুষের মনের কাছাকাছি যেতে পারছেন না তারা। তাছাড়া ভাঙ্গাচুড়া সিনেমা হলে বসে তিন ঘন্টার ছবি দেখতে নারাজ দর্শকরা। এখন উন্নত প্রযুক্তির টিভি, হোম থিয়েটার ঘরে প্রবেশ করেছে অনেক দর্শকের। তাহলে কেনো এসব সিনেমা হলে ছবি দেখবেন দর্শক। আমাদের রাজধানীতে যেমন উত্তরা, গুলশানে কোনো নতুন সিনেমা হল নেই। এদিকের দর্শকরা জ্যাম ঠেলে ব্লকবাস্টার বা সিনেপ্লেক্সে গিয়ে ছবি দেখতে চান না। তবে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে দেখা উচিত ‘পোষ্টমাস্টার ৭১’ ছবিটি। আশা করি ছবিটি দেখার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।

 

গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান:

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক। বাংলাদেশ বেতারের বহির্বিশ্ব কার্যক্রমের সংবাদ পাঠক, টেলিভিশন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও আলোচক। উপদেষ্টা সম্পাদক, পায়রা.নিউজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা।