Home ক্যাম্পাস খবর প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার বেশি তৎপর শিক্ষা বোর্ড

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার বেশি তৎপর শিক্ষা বোর্ড


বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক :  আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে এবার বেশি তৎপর শিক্ষা বোর্ড। কারণ এর আগে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় তোপের মুখে থাকলেও শিক্ষা বোর্ড ছিল সমালোচনার বাইরে। এই সুযোগ এবার দেবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কোনও অঘটন ঘটলেই তার জবাবদিহিতা চাওয়া হবে। ফলে শিক্ষা বোর্ডগুলো এবার বেশি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, ‘২০১৮ সালে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, এবার তার চেয়েও ভিন্ন কিছু কৌশল আমরা নিয়েছি। এবারও প্রশ্নফাঁস হবে না বলে আশা করি। শিক্ষা বোর্ডগুলো এ ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক অবলম্বন করছে।’মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে রবিবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দায় এড়াবার প্রচেষ্টা নয়, পরীক্ষা ও প্রশ্নপত্রসহ পুরো বিষয়টির নিরাপত্তার দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ডের। এর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাদের কাজ কো-অর্ডিনেশন করা। প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষা অনুষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু সব সময় দেখা যায়, প্রশ্নফাঁস হলেই মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আঙুল ওঠে। মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্ব সুস্পষ্ট ও আলাদা।’শিক্ষা বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, এবার আগে থেকেই তৎপর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে মন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের পর শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষা চলাকালে বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা হাতে নেবে, কঠোর নীতি অবলম্বন করবে শিক্ষা বোর্ড।ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার প্রশ্নপত্রের সেট অনেক বেশি। জেএসসি থেকে আমরা এ পরিবর্তন আনা শুরু করেছি।’এবার কত সেট ছাপা হবে জানতে চাইলে অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য কাউকে জানাবো না।’প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার সিকিউরিটি টেপ ব্যবহার না করে আরও আধুনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রশ্নফাঁস রোধে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারের খামে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। খাম খোলা হলে ধরা পড়তে হবে।’ শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার আগেই জেলা প্রশাসকদের কাছে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে জেলা প্রশাসকদের মোবাইল নম্বরে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশ্ন সেট জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ীই কেন্দ্র সচিবদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র।সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, ‘সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। প্রয়োজনে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’তিনি জানান, প্রশ্ন প্রণয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয় পরীক্ষা শুরুর পাঁচ থেকে ছয় মাস আগেই। শিক্ষা বোর্ডগুলোর নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক বাছাই করে ৬৪ জন মডারেটরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৬৪ সেট প্রশ্ন তৈরির পর তা বাছাই করে নির্দিষ্ট সেট বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে।ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মডারেটরদের আলাদা আলাদাভাবে প্রশ্ন চূড়ান্ত করার পর সিলগালা করে বোর্ডের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন। সিলগালা অবস্থায়ই প্রশ্নপত্র পাঠানো হয় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কছে। অন্য শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা জানতে পারবেন না কোন সেট ছাপা হচ্ছে।