Home ঢাকা ক্যাম্পাস কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের পেছনের ঝোঁপে ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ!

কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের পেছনের ঝোঁপে ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ!


ক্লাস শেষে ক্যাম্পাস থেকে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথে রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আলামত সংগ্রহে নেমেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের বাইরের দিকে একটি ঝোঁপের মধ্যে কিছু আলামত পেয়েছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র‍্যাবের এক সদস্য বলেন, ‘ঝোঁপের মধ্যে ইউনিভার্সিটির বই, ঘড়িসহ কিছু আলামত আমরা পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি এটিই ঘটনাস্থল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা এলে আপনাদের বিস্তারিত জানানো হবে।’

এদিকে, ডিবির একটি টিমও ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করছেন। তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে বিস্তারিত জানাবেন বলেও জানান ডিবি সদস্যরা।

ঘটনার পর রবিবার রাত থেকে শুরু করে আশপাশের সব এলাকায় খোঁজ নিয়ে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের বাইরের দিকের এই ঝোঁপটিকেই ঘটনাস্থল হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে বলেও জানান র‍্যাবের ওই সদস্য।

গতকাল রবিবার ক্লাস শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাসে উঠেন ওই শিক্ষার্থী। উদ্দেশ্য ছিল একসঙ্গে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামেন তিনি। বাস থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েজন তার মুখ চেয়ে ধরেন। তৎক্ষণাত সে অচেতন হয়ে পড়ে। এর পর অদূরেই নির্জন স্থানে তুলে নিয়ে পালাক্রমে কয়েকজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের শিক্ষার ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টার পর তাকে অজ্ঞান করে নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এক পর্যায়ে তার জ্ঞান ফিরলে পাশবিক নির্যাতনে আবারও সে জ্ঞান হারায়। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর ওই ছাত্র দেখতে পায় একটি নির্জন স্থানে পড়ে আছে সে। এর পর সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যায় এবং বান্ধবীকে পুরো ঘটনা জানায়। খবর পেয়ে সহপাঠীরা প্রথমে তাকে ক্যাম্পাসে পরে হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি ঢাবির একটি আবাসিক হলে থাকতেন। ক্যাম্পাসে একটি সংগঠনের সঙ্গেও তিনি জড়িত।

এ ঘটনা জানার পর রবিবার রাত থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে উঠে। রাতেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সোমবার দুপুর ১২টায় মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে ছাত্রদল। এমনকি ধর্ষণের শিক্ষার ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা সোমবার বেলা ১১টায় টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য একটি ইভেন্টও খোলা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ওই প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলো ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এরইমধ্যে ঢাবি শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা।

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঢাবি শিক্ষার্থীর বাবার অভিযোগের পর থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’ খুব দ্রুতই আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি জনান।

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীর সঙ্গে গুলশান বিভাগেরর ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা দেখা করেছেন। পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছেন।’