Home ক্যাম্পাস খবর রাজধানীর উত্তরাস্থ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির মালিক মাওলানা সাদেক আবারো ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন’র...

রাজধানীর উত্তরাস্থ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির মালিক মাওলানা সাদেক আবারো ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন’র প্রজ্ঞাপন অগ্রাহ্য করলেন


বিঃপ্রঃ প্রধান প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গত ৭মে ২০২০ ইং একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের দ্বিতীয় অংশের সাধারণ নির্দেশনাবলির ধারা ৩-এ বলা হয়েছে ‘করোনা পরিস্থিতি চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক /কর্মকর্তা /কর্মচারীর বেতন-ভাতাদি পূর্বের ন্যায় নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হবে’।

কিন্তু দেশীয় আইন-কানুন ও ইউজিসি’র প্রঞ্জাপন নিয়মিতভাবে অমান্য করে আসতে থাকা মাওলানা সাদেক আবারো ইউজিসি’র নির্দেশনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখালেন।তার বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক /কর্মকর্তা /কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি তিনি ব্যাপক হারে কর্তন করে প্রদান করলেন।উত্তরাস্থ আল আরাফা ব্যাংকে বিশ্ববিদ্যালয়টির নামে পরিচালিত স্যালারি একাউন্টগুলো পরীক্ষা করলে এর শতভাগ সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক /কর্মকর্তা /কর্মচারীবৃন্দ উপায়ান্তর না পেয়ে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী বরাবর এই অন্যায় জুলুমের প্রতিকার চেয়ে একটি দরখাস্ত প্রদান করে।যার কপি বিভিন্ন দফতর ও প্রেস মিডিয়ায় প্রদান করার ফলে আমাদের পত্রিকার সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকও একটি পেয়েছেন। উক্ত দরখাস্তটির কোন অংশ পরিবর্তন পরিবর্ধন না করে হুবহু নিম্নে প্রকাশ করা হলো।

মে ১০, ২০২০
বরাবর,
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
মাধ্যম: পরিচালক
বেসরকারি বিশ্বিদ্যালয় বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
বিষয়: এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আর্থিক সামর্থ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক-স্টাফদের ঠিকমত বেতন-ভাতা প্রদান না করা এবং সীমাহীন দুর্নীতি সম্পর্কে তথ্যসহ অবহিতকরণ প্রসঙ্গে।
মহোদয়,
আজ সারাবিশ্ব কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত। গণতন্ত্রের মানসকন্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে সারাদেশে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে নানান মানববান্ধব উদ্যোগের অংশ হিসেবে আপনার মন্ত্রণালয় শতভাগ শিক্ষার্থী ও জনবান্ধব প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে ধ্বস না নামে এবং শিক্ষক-স্টাফরাও দু মুঠো ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশ বরাবরের মত উপেক্ষা করে দেশের পুরাতন ও প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এই করোনার দুর্যোগ ও মাহে রমজানের মধ্যে মে’র ৭ তারিখে আমাদের বেতন ভাতা সর্বোচ্চ ৮২% বেতন ভাতা কেটে মাত্র ১৮% বেতন হিসেবে সর্বোচ্চ ১২,০০০/- টাকা দিয়েছে; যা দিয়ে মাসিক খোরপোষ দূরের কথা বাসা ভাড়াই আমরা দিতে পারছি না, মানবেতর জীবন যাপন করছি। আর পার্ট টাইম শিক্ষকদের কোন বেতনই দেয় নি। গত ১৮ই মার্চ তারিখে আপনারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও আবুল হাসান সাদেক (যিনি কাগজ পত্রে আইনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি নন, কিন্তু তিনি আমাদের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ২.৫ লক্ষ টাকা বেতন নেন) আমাদের বাধ্য করেছেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা রাখতে। এরপর বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ করা হলেও আপনাদের নির্দেশনা মোতাবেক অনলাইনে রাত দিন খেটে আমরা নিজস্ব খরচে (বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল, মোবাইল / কম্পিউটার ডিভাইস কিনে) ক্লাস নিয়েছি। উল্লেখ্য যে, এখানকার নিয়ম অনুসারে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বেতন না দিলে মিডটার্ম দিতে দেওয়া হয় না। আমরা ছাত্রদের বেতন উত্তোলন নিশ্চিত করে মিডটার্ম নিয়ে ফলাফলও দিয়ে দিয়েছি বন্ধের আগে। প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীরা এই সেমিস্টারের বেতন পরিশোধ করেছে। পূর্বের কিছু মেধাবী ও গরীব এবং মুক্তিযুদ্ধ কোঠার ছাত্রের ওয়েভার আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ওয়েভার না দিয়ে বরং জরিমানা ধরায় প্রদর্শিত বকেয়া, নিজস্ব লোক দ্বারা টাকা জমা নেওয়ায় তা সঠিকভাবে ডাটাবেসে এন্ট্রি না হওয়ায় প্রদর্শিত বকেয়া, ড্রপ আউটের বকেয়া, নতুন সেমিস্টারে ভর্তির বকেয়া বাবদ সর্বমোট প্রায় ১ কোটি টাকার মত দেখিয়ে আমাদের বেতন বন্ধ করেছেন সাদেক প্রশাসন। অথচ আমরা সেমিস্টারের সকল চাহিদা পূরণ করেছি। আরও উল্লেখ্য, আবুল হাসান সাদেক তার নিজের বাড়ির নামে (বাড়ি নং ১৪, রোড ২৮, উত্তরা ৭), ট্রাস্টের নামে (বাড়ি নং ২৫, রোড ০৫, উত্তরা ৭) এবং মতিঝিল কম্প্লেক্সের নামে সর্বমোট প্রায় মাসিক ছয়ত্রিশ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে, যা সর্বমোট কর্মজীবিদের বেতনের চাইতেও বেশি। অথচ ১৪ নং বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রম নেই এবং এটা তার ব্যক্তিগত বাসভবন যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে করা হয়েছে, মতিঝিলও বিশ^বিদ্যালয়ের টাকায় করা হয়েছে এবং বর্তমানে কোন কার্যক্রম নেই, ২৫ নং বাড়িও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় করা এবং আংশিক কার্যক্রম আছে। ছাত্রদের বেশিরভাগ টাকা ব্যাংকে জমা পড়ে নি বরং ক্যাম্পাসে তার নিজস্ব লোক দ্বারা টাকা সংগ্রহ করে সরাসরি তার বাসায় নিয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন স্টাবলিশমেন্ট চার্জ নেই। তার বড় ছেলে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হয়েও ৭ টি লাভজনক পদ দখল করে আছেন। আরও উল্লেখ্য তিনি প্রায় ২০০০ কোটি টাকা অর্থপাচারকারী, যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতের শীর্ষ নেতা। বর্তমানে যাকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আফতাব আমলে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত জামাতী নেতা যিনি সরকার কর্তৃক চাকুরিচ্যুত ও মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন লাগানোর সহযোগী। সাদেক সাহেবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পেট্রো সন্ত্রাসী ইয়াসিন (যিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী কামারুজ্জামানের বিশেষ সহযোগী) সিন্ডিকেট মেম্বার ও ট্রাস্ট সদস্য এবং বোমা সন্ত্রাসী জামাতী নেতা জাকির হোসেন এবং সরদার আনিস ( যিনি নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো চিফ ও জামাতী রোকন), যারা সরাসরি জঙ্গিবাদের মদদ দেয়। এ বিষয়ে বহু জাতীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশ পেলে, বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করা হলেও কোন সুরাহা পাওয়া যায় নি। বরং অভিযোগকারীরা চাকুরিচ্যুত হয়েছেন।
ইউজিসিতে প্রেরিত তথ্যের চেয়ে আমাদের বেতন প্রায় এক তৃতীয়াংশ। গত ২৫ বছরে সরকারি কোন অডিট না হওয়ায় সাদেক সাহেব ও তার পরিবার সমুদয় অর্থ লুটপাট ও কর্মজীবী-শিক্ষার্থীদের উপর চরম অমানবিক নির্যাতন করছেন। এখনও তিনি প্রতিদিন শুধু স্বাক্ষর করে সার্টিফিকেট বিক্রি করে ৫-১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি বর্তমানে পরিকল্পনা করছেন সকল শিক্ষক স্টাফ বাদ দিয়ে পার্ট টাইম শিক্ষকদের দিয়ে অনলাইন ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন আর শিক্ষার নামে ছাত্রদের কাছে শুধু সার্টিফিকেট বিক্রি করবেন। বর্তমানে ৫ টি বিভাগে পূর্ণকালীন শিক্ষক মাত্র একজন এবং কোন হেল্পিং হ্যান্ড পিয়ন বা অফিসারও নেই। ইতোমধ্যে বহু পুরাতন শিক্ষক কর্মকর্তাকে বিনা কারণে চাকুরিচ্যুত করেছেন তিনি। তারা সকলেই ১৮-১৯ বছর চাকুরি করে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এমতাবস্থায় সুবিচারের প্রত্যাশায় আপনার কাছে আমাদের সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা বোনাস প্রদান করে, একটি সুষ্ঠু অডিট পরিচালনা করে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবিদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার এবং পাচারকৃত অর্থ আনয়নের আবেদন জানাচ্ছি।
বিনীত নিবেদক
শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
সংযুক্তি:
১. বাড়ি ভাড়ার নামে অর্থ আত্মসাতের কপি
২. মাসিক বেতন শীট
৩. ইউজিসিতে প্রেরিত মিথ্যা তথ্য শীট
৪. র্অথ পাচার, আয়কর ফাক,ি অবধৈ সম্পদ ও র্আথকি র্দুনীতি
৫. দুদকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ কপি (যুদ্ধাপরাধ ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে)
৬. জঙ্গি জামাত সংশ্লিষ্টতা
৭. গোপনে অবৈধ সমাবর্তন ও সার্টিফিকেট বিক্রি
৮. ট্রাস্ট র্দুনীতি
৯. শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের চিঠি
১০. সাদেক ও ট্রাস্টের বিরুদ্ধে বিনা কারণে চাকুরিচ্যুত এক শিক্ষকের মামলার কপি
১১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ছাত্র কৃষ্ণপদের অভিযোগ
১২. স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের নামে সীমাহীন দুর্নীতি
১৩. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন কোথায় কিভাবে ভঙ্গ করছে বিস্তারিত।
অনুলিপি:
১. মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী
২. মাননীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
৩. মাননীয় চেয়ারম্যান, ইউজিসি
৪. সচিব মহোদয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়
৫. মহাপরিচালক, মাউশি
৬. পরিচালক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ, ইউজিসি
৭. পিএস, মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী
৮. পিএস, মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী