Home সারা বাংলা করোনা মোকাবেলায় সম্মুখ সমরের আলোচিত যোদ্ধা উপমন্ত্রী শামীম এমপি

করোনা মোকাবেলায় সম্মুখ সমরের আলোচিত যোদ্ধা উপমন্ত্রী শামীম এমপি


মহিউদ্দিন তুষার: চারিদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক কোথাও চলছে লকডাউন। দুঃসময়ে দিনপার করছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এ দু:সময়েও জনগণের পাশে নেই বেশিরভাগ জনগণের নেতা, জননেতা দাবীদাররা। ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’এই নীতিতে তারা ঘাপটি মেরে বসে আছেন। অবশ্য কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ত্রাণ বিতরণ করে ফটোসেশনের মধ্যে বিশাল দায়িত্ব পালন করে ফেলেছেন, ঠিক তখন প্রাণঘাতী করোনার ভয়কে তুচ্ছ করে জনগণের কল্যাণে ছুটে চলেছেন শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দৃঢ় ভূমিকায় শরীয়তপুরের অত্র এলাকায় করোনার সংক্রমণ এখন পর্যন্ত অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রতিনিয়ত নিজে ছুটে চলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সেচ্ছাবেসক, মাঠ কর্মীদের সাথে তার যোগাযোগ নিবিড়ভাবে। তার নির্বাচনী এলাকা সখিপুর-নড়িয়া সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তিনি প্রশংসার দাবীদার। জনগণ যে কারণে তাকে ভালবাসা নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন।

বর্তমান বিশ্ব ব্যাপী “কোভিড-১৯” করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সুস্থ পরিকল্পনা ও জনসচেতনতা বাড়াতে সব ধরনের প্রচারণা, খাদ্য সহায়তা, সুরক্ষা সামগ্রী উপহার, ফ্রী অ্যাম্বুলেন্স, লাশের দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা, ফ্রী মেডিকেল টিম সার্ভিস, অসহায় কৃষকের ধান কাটার ব্যবস্থায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ কর্মীদের উৎসাহ প্রদান, সমাজের বিভিন্ন স্তরের ও শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য নানাবিধ কর্মসূচি নিয়ে নির্দ্বিধায় ও নিবিষ্ট মনে কাজ করে চলেছেন তিনি। এছাড়া এনামুল হক শামীম ঐচ্ছিক তহবিল ও তার মায়ের নামের আসরাফুন্নেসা ফাউন্ডেশন থেকে অসহায়, অসুস্থ, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নগদ টাকা প্রদানসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে বিনামূল্য ঢেউটিন ও গৃহ নির্মাণে অর্থ বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি।

শামীম প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক দিন নিজের নির্বাচনী এলাকায় (সখিপুর-নড়িয়া) অবস্থান করছেন। সখিপুর-নড়িয়ায় এ পর্যন্ত নিজের উদ্যোগে ২৫টি ইউনিয়নে ৫ ধাপে প্রায় ৩২ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত এ সহায়তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায়  ৪৭ হাজার। শুধু তাই নয়, জেলার ৬টি হাসপাতালে প্রায় ১২ হাজার মাস্ক ও ৩শ পিপিই বিতরণ করেছেন। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন চিকিৎসদের সঙ্গে। জানছেন তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা। জেলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা কার্যক্রম জোরদার করতে নানাভাবে তাদের উৎসাহিত করছেন। এনামুল হক শামীমের উদ্ভাবিত ‘ডাক্তারের কাছে রোগী নয় রোগীর কাছে ডাক্তার’ইতোমধ্যেই জনমনে সাড়া ফেলেছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ উদ্যোগের জন্য তিনি ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছেন। জানা যায়, নড়িয়া ও সখিপুর এলাকায় করোনা দুর্যোগে ঘরবন্দি মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসাসেবাসহ ওষুধ প্রদান করছে সংশ্লিষ্ট দু’টি টিম। প্রতিটি টিমে দু’জন চিকিৎসক ও দুজন নার্স সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।

এনামুল হক শামীম তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে ত্রাণ কমিটি গঠন করে বাড়িতে বাড়িতে পৌছে দেন ত্রাণ। ভ্যান, নসিমন, ট্রলি এবং নৌকাযোগ এসব ত্রাণ সামগ্রী পৌছানো হয়েছে বিভিন্ন এলাকায় এবং দুর্গম চরাঞ্চলে। শরীয়তপুরের মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট চরে আশ্রয় নেয়া পরিবারের মাঝে নৌকা যোগে এসব সামগ্রী পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এছাড়া মুঠোফোনে খবর পেয়েও পৌছে দেয়া হয়েছে অনেক ত্রাণ সামগ্রী। দফায় দফায় বিতরণকৃত এসব ত্রাণ সামগ্রী পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে স্থানীয় হতদরিদ্র জনগন।

 

শামীমের ব্যক্তিগত জীবন বদলে যাওয়ার গল্পটা অনেক দীর্ঘ হলেও শরীয়তপুরকে বদলে দেয়ার গল্পটি অনেক গতিশীল। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার পর বর্তমানে সরকারের হাত ধরে দেশের প্রতিটি প্রান্তরে যেভাবে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে, বিপরীতে তার সাথে পাল্লা দিয়ে শরীয়তপুরবাসী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বেড়ী বাধ, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ফালানো হচ্ছে জিও ব্যাগ। গেল বছর নড়িয়াতে শতশত ঘর নদীগর্ভে বিলীন হলেও এ বছর রক্ষা বাধ নির্মাণের ফলে এই এলাকার মানুষ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। এখন আর সেখানে পদ্মার ভয়ঙ্কর গর্জন নেই আছে শীতল হাওয়া। পদ্মার পাড়ে মানুষ ঘুরতে এসে এখন আর আগের মত রোমাল দিয়ে চোখের পানি মোছে না সৌন্দয্য দেখে মুগ্ধ হয়। বিদ্যুতে বিদ্যুতে আলোকিত চরাঞ্চল। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পেয়েছে জেলার মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাত্রা, নোয়াপাড়াও।

তার একান্ত প্রচেষ্টায় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-৪) এবং চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প (১ম পর্যায়) এর আওতায় ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ১২টি এবং নড়িয়া উপজেলায় ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মান কাজের অনুমোদন চুড়ান্ত হওয়া করোনাকালীন এই সময় বড় চমক।  নতুন রাস্তার কাজ সংস্কার, ব্রিজ, কালবাট নির্মাণ এগুলো তিনি নিয়মিত কাজ হিসেবে নিয়েছেন।

এনামুল হক শামীম বলেন, শরীয়তপুর-২ (সখিপুর-নড়িয়া) আসনের জনগন আমাকে জাতীয় সংসদের সদস্য করেছেন। তাদের জন্যই আজ আমি এমপি/মন্ত্রী। সখিপুর-নড়িয়ার উন্নয়ন করা এটা আমার দায়িত্ব।সুখে দুঃখে তাদের পাশে থাকা আমার কর্তব্য। আমি যতদিন বেঁচে আছি শরীয়তপুরবাসীর জন্য কাজ করে যাবো। মন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সেক্ষেত্রে আমার নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুর ছাড়াও সারা বাংলাদেশের সমস্যা নিয়ে ভাবতে হয়। সারা দেশে ১৭ হাজার ৭০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে। এর মধ্যে ৭ হাজার বেড়িবাঁধ উপকূলীয় এলাকায়। এগুলো ৪০/৫০ বছর আগের হওয়ায় ভেঙে গেছে এবং বসে গেছে। এসব বাঁধ পুনঃসংস্কার এবং পুনর্নির্মাণ করা হবে।

তিনি বলেন, সারা দেশে ১০৯টি ফোল্ডার আছে।বর্ষা মৌসুমে এবং নদীভাঙন সামনে রেখে ১৯ স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। বিশেষ করে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় ১৭ পয়েন্টে ৪ হাজার শ্রমিক প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছেন। সেখানে মন্ত্রণালয় থেকে ভিজিট অব্যাহত আছে।

সারা দেশে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়মিত তদারকির কথা জানিয়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী শামীম জানান, প্রতি সপ্তাহে তিনদিন (রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে অফিস করছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী নদীভাঙন রোধে মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রণালয় থেকে আরো বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষীপুরসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকার বাঁধগুলো সংস্কার কাজ চলছে। এবার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে।

হাওরাঞ্চলের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে উপমন্ত্রী শামীম বলেন, হাওর এলাকায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আগাম প্রস্তুতির জন্য এবার ফসলরক্ষা হয়েছে। তাছাড়া অতীতের ন্যায় বন্যা বা নদীভাঙ্গণে মানুষের জান-মালের যাতে কোন ক্ষতি না হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও নেতৃত্বে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।