Home আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার, সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে?

বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার, সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে?


বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত তৎপরতা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। রাখাইনে সেনা নিপীড়ন ও গণহত্যার মুখে ওই সময় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখেনি অং সান সু চি’র দেশ। সব মিলিয়ে গত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন সংকটের বিষয়টি বিশেষ নজর কেড়েছে।

রোহিঙ্গা ইসুত্যতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে বৈপরীত্য চলমান থাকলেও দেশ দুটির মধ্যে কখনও সরাসরি যুদ্ধ বাঁধেনি। তবে পুশব্যাক-পুশইন, জেলে আটক, রোহিঙ্গা নির্যাতন- এসব ইস্যুতে দুদেশের সীমান্ত বিরোধী রয়েছে।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের (জিএফপি) তথ্যের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সামরিক শক্তির একটি তুলনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে। পাঠকের জন্য সেই তুলনামূলক চিত্রটি তুলে ধরা হলো-

১. র‌্যাঙ্কিং: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক শক্তির র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে মিয়ানমার। ১৩৮ দেশের তালিকায় ৩৫ নম্বরে আছে সু চি’র দেশ। আর বাংলাদেশ সে তালিকায় আছে ৪৬ নম্বরে। যেখানে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত ও জাপান।

২. সক্রিয় সেনা : মিয়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩ গুণ হলেও সেনাদসস্যের সংখ্যায় মিয়ানমার এগিয়ে। মিয়ানমারের সক্রিয় সেনাসদস্যের সংখ্যা মোট ৪ লাখ ৬ হাজার, বাংলাদেশের রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। দুই দেশের কোনটিরই রিজার্ভ সেনাসদস্য নেই।

৩. প্রতিরক্ষা খাত: প্রতিরক্ষা খাতে বাজেটের দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেট ২৬৫ কোটি মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের ৩৮০ কোটি ডলার।

৪. এয়ারক্র্যাফট: এক্ষেত্রেও এগিয়ে থাকা মিয়ানমারের ২৭৬টি এয়ারক্র্যাফটের বিপরীতে বাংলাদেশের আছে ১৭৭টি।

৫. নৌবহর: নৌবাহিনীতেও মিয়ানমার বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। মিয়ানমারের ১৮৭টি জাহাজের বিপরীতে বাংলাদেশের আছে ১১২টি।

৬. যুদ্ধবিমান: বাংলাদেশের কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট বা যুদ্ধবিমান রয়েছে ৪৪ট, মিয়ানমারের ৫৯টি।

৭. হেলিকপ্টার: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৭টি হেলিকপ্টারের বিপরীতে মিয়ানমারের রয়েছে ৮৬টি।

৮. ট্যাংক: বাংলাদেশের কমব্যাট ট্যাঙ্ক রয়েছে ২৭৬টি, মিয়ানমারের ৪৩৪টি।
৯. সাঁজোয়া যান: বাংলাদেশের ১ হাজার ২৩০টি, মিয়ানমারের ১ হাজার ৩০০টি।
১০. স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি: স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারিতে অনেক এগিয়ে মিয়ানমার। দেশটির ১০৮টির বিপরীতে বাংলাদেশের আছে মাত্র ১৮টি।
১১. ফিল্ড আর্টিলারি: মিয়ানমারের ফিল্ড আর্টিলারি রয়েছে ১ হাজার ৬১২টি, বাংলাদেশের মাত্র ৪১৯টি।
১১. রকেট প্রজেক্টর: বাংলাদেশের ৭২টি রকেট প্রজেক্টরের বিপরীতে মিয়ানমারের কাছে আছে ৮৪টি।
১২. সাবমেরিন: সাবমেরিনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের যেখানে একটি বাংলাদেশের সেখানে দুটি রয়েছে।
১৩. বিমানবাহী জাহাজ: বাংলাদেশ কিংবা মিয়ানমার কোনও দেশেরই বিমানবাহী জাহাজ নেই।
১৪. ডেস্ট্রয়ার: দেশ দুটির কোনোটিরই ডেস্ট্রয়ার নেই।
১৫. ফ্রিগেট: বাংলাদেশের ৮টি, মিয়ানমারের ৫টি।
১৬. করভেট: বাংলাদেশের ৬টি, মিয়ানমারের মাত্র ৩টি।
১৭. উপকূল পেট্রোল: উপকূলে টহলের জন্য মিয়ানমারের ১১৭টি নৌযানের বিপরীতে বাংলাদেশের আছে মাত্র ৩০টি।
১৮. বিমানবন্দর: মিয়ানমারে ৬৪টি বিমানবন্দর রয়েছে, বাংলাদেশে মাত্র ১৮টি।
১৯. নৌবন্দর ও টার্মিনাল: দুদেশই এক্ষেত্রে সমান। দুদেশেরই আছে ৩টি করে নৌবন্দর ও টাার্মিনাল।