Home আইন/আদালত ক্ষমতার চেয়ার আর কারাগার পাশাপাশি থাকে : প্রধানমন্ত্রী

ক্ষমতার চেয়ার আর কারাগার পাশাপাশি থাকে : প্রধানমন্ত্রী


ষ্টাফ রিপোর্টার: ক্ষমতার চেয়ার আর কারাগার খুব পাশাপাশি থাকে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করতে গেলে কারাগারের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়। এ জন্য আমরা কারাগারগুলো উন্নত করে যাচ্ছি।’ গতকাল রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে নারীদের জন্য আলাদা ভবন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া ধ্রুবতারা এবং ২০টি ফায়ার স্টেশনসহ

অন্য সেবার উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের ক্ষমতার চেয়ার আর কারাগার খুব পাশাপাশি থাকে। তবে ২০০৭ সালে যেটা হয়েছে, ক্ষমতা ছাড়াও সবার আগে কিন্তু আমাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কাজেই সেটা আমরা জানি, রাজনীতি করতে গেলে এটা করতেই হবে। এ জন্য কারাগারগুলো উন্নত করে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় কারাগারে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেটা আমরা উদ্বোধন করেছি।’

কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হলো কারাগারে শুধু অপরাধীদের বন্দি করে রাখা নয়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করা, তাদের কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়া, তাদের কিছু শিক্ষা দেওয়া- যেন তারা বের হয়ে ভবিষ্যতে একই অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।’

কারাগারগুলোয় ভার্চুয়াল কোর্ট চালু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেরানীগঞ্জের কারাগারেও ইতোমধ্যে কোর্টরুম তৈরি করা হয়েছে। এভাবে জেলা কারাগারগুলোয়ও কোর্টরুম চালু করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে মামলাও পরিচালিত হবে। এখন করোনার সময় সরাসরি কোর্ট চালানো মুশকিল। তাই আমরা ভার্চুয়াল কোর্টের ব্যবস্থা করেছি।’

মামলার রায় বাংলায় ছাপার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার রায় ইংরেজিতে বের হয়, সেটাকে বাংলা করে ছাপানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারাগারে যারা গ্রেপ্তার হয়ে যায়, তাদের পরিবারগুলো কষ্ট পায়। অপরাধ করে অপরাধী। কিন্তু তারপরও তাদের পরিবারগুলো কষ্ট পায়। এতগুলো মানুষ বেকার বসে থাকবে কেন? সে জন্য সেখানে তাদের ট্রেনিং করানো, কিছু পণ্য উৎপাদন এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাজারজাত করার ফলে যে টাকা আসবে খরচ রেখে (লাভের ৫০ ভাগ) বাকিটা যে উৎপাদন করবে, সে পাবে। সে তা নিজে জমাও করতে পারবে, কিছু অংশ পরিবারকেও পাঠাতে পারবে’, বলেন সরকারপ্রধান।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনেক আধুনিক এবং উন্নতমানের উড়োজাহাজ কেনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে যে বিমান উদ্বোধন করতে যাচ্ছি, সেটা যেমন আমাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগটা বাড়াবে, পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত করবে। কারণ আমরা এ উপমহাদেশে বাস করি। আমাদের ভৌগোলিক অবস্থান এত চমৎকার…। যদি শুধু আমাদের আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে একটা ভালো যোগাযোগব্যবস্থা চালু করতে পারি, তা হলে ব্যবসাবাণিজ্য থেকে শুরু করে সব দিক থেকে অনেক উন্নতি হতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আন্তর্জাতিক পরিম-লেও যোগাযোগটা আমরা কীভাবে বাড়াতে পারি; কীভাবে উন্নত করতে পারি দেশকে।… আমরা সারাবিশ্বে একটা যোগাযোগ তৈরি করব। কারণ যে কোনো উন্নয়নের জন্য ব্যবসাবাণিজ্য প্রসারের জন্য এটা একান্তভাবে দরকার।’ এ অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় নিজের দুঃখের কথাও নিজের বক্তৃতায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোকাব্বির হোসেন প্রমুখ।