Home অর্থনীতি ২০০ কোটি টাকার অর্ডার নেয়ার পর লাপাত্তা ‘ই-অরেঞ্জ’

২০০ কোটি টাকার অর্ডার নেয়ার পর লাপাত্তা ‘ই-অরেঞ্জ’


ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জ’। প্রায় ২০০ কোটি টাকার অর্ডার নেয়ার পর এখন প্রায় লাপাত্তা। মালিকানাও পরিবর্তন করার পর নতুন মালিকের সাথেও যোগাযোগ করতে পারছেন না গ্রাহকরা। নিদিষ্ট সময়ে পেরিয়ে গেলেও পণ্যের ডেলিভারি পাননি হাজারো ক্রেতা।

যার ফলে বাধ্য হয়েই ‘ই-অরেঞ্জ’র গুলশান-১ এর বন্ধ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ পালন ও রাস্তা অবরোধ করে গ্রাহকরা। যেহেতু ই-অরেঞ্জ ই-কর্মাস সাইটের সাথে ব্র্যান্ড এম্বাসিডর হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা রয়েছেন। তাই গ্রাহকরা বাধ্য হয়ে তার সাথে দেখা করেছেন এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান গ্রাহকরা।

সোমবার(১৬ আগস্ট) বিকেলে ই-অরেঞ্জ অনলাইন শপের ক্রেতারা গুলশান-১ এর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষ রাস্তা অবরোধ করেন তারা। কার্যালয়ের সামনে ও রাস্তা অবরোধে ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, মাশরাফী বিন মর্তুজার কথা শুনে প্রতিষ্ঠানটি থেকে পণ্য কেনার জন্য টাকা দিয়েছেন তারা। কিন্তু এখন ই-অরেঞ্জ তাদের পণ্য ডেলিভারি অথবা অর্থ ফেরত দিচ্ছে না। বারবার তাদের সময় দিয়ে ঘুরাচ্ছেন কিন্ত গতকাল থেকে তাদের সাথে যোগাযোগই করতে পারছেন না তারা।

যদিও ই-অরেঞ্জ সোমবার (১৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের অফিসিয়াল পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে, মাশরাফীর সঙ্গে এখন আর সম্পর্ক নেই তাদের।

ই-অরেঞ্জ লিখেছে, ‘ই-অরেঞ্জ.শপ এর সকল সম্মানিত গ্রাহকদের জানানো যাচ্ছে যে, ই-অরেঞ্জ.শপ এর সাথে পহেলা জুলাই, ২০২১ হতে মাশরাফী বিন মর্তুজার সাথে চুক্তি শেষ হয়েছে। তাই আমাদের অফিসিয়াল কোনো বিষয়ে তিনি কোনোভাবেই অবগত নন এবং তিনি অফিসিয়ালভাবে কোনো কিছুই আপডেট দিতে পারবেন না। আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি তাদের কাছে যারা পণ্য অর্ডার করেছেন, কিন্তু এখনো পণ্য হাতে পাননি।’

প্রতিষ্ঠানটি আরও লিখেছ, ‘আশা করি আমরা দ্রুত এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বের করবো এবং আপনাদের পণ্য আপনাদের বুঝিয়ে দিতে পারবো। আর যেহেতু জনাব মাশরাফি বিন মুর্তজা আমাদের সাথে আর চুক্তিবদ্ধ নেই, সেহেতু সবার কাছে অনুরোধ রইল এই বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ না করার জন্য। ১৯ আগস্ট থেকে সকল পণ্য (মোটরসাইকেল বাদে, মোটরসাইকেলের টাকা রিফান্ড হবে ধারাবাহিকভাবে) সরবরাহ শুরু হয়ে যাবে।

গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্যে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ই-অরেঞ্জ.শপ এর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখার জন্যে আপনাদের ধন্যবাদ। চুক্তি শেষ হওয়ার পরও মাশরাফীর ছবি ব্যবহার করায় দুঃখ প্রকাশ করে তারা লিখেছে, ‘আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত, চুক্তি শেষ হওয়ার পরও জনাব মাশরাফির ছবি ব্যবহার করার জন্যে। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।’

ইমন নামের এক ভোক্তভোগি বলেন, আমরা ই-অরেঞ্জ নামের ই-কমার্স সাইট থেকে বাইক, মোবাইলসহ নানা পণ্য অর্ডার করেছিলাম। আমরা সরকারের ই-কমার্স নীতিমালা প্রকাশের আগে ই-অরেঞ্জের ডাবল টাকা ভাউচার কিনেছিলাম। কর্তৃপক্ষ গত ১৬ মে (সম্ভাব্য তারিখ) থেকে সব ডেলিভারি বন্ধ রেখেছে।

১৮ জুলাই ই-অরেঞ্জ একটি ডেলিভারি ডেট প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে লকডাউনের দোহাই দিয়ে ডেলিভারি বন্ধ করে দেয়। পরে জানায় লকডাউন শেষ হলে ডেলিভারি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। লকডাউন শেষ হওয়ার আগের দিন ১০ আগস্ট তারা আবার নতুন করে ১৬ আগস্ট ডেলিভারির তারিখ প্রকাশ করে।

ফয়সাল খান নামের আরেক ভুক্তভোগি বলেন, সরকারের ই-কমার্স নীতিমালা প্রকাশের পর আমরা বিশ্বাস করে ভাউচার কিনেছি। সেখানে মাশরাফি বিন মর্তুজার আছে সেখানে বিশ্বাস করেই বিনিয়োগ করেছি। আমরা তো ই অরেঞ্জকে চিনি না, আমরা চিনি মাশরাফিকে। এখন আমরা এত গুলো টাকা বিনিয়োগ করে কোন ভাবেই তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। আমরা এখন সবাই মিলে মাশরাফি ভাইয়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছি। মাশরাফি ভাই আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি সমাধান করে দিবেন যত টাকাই হোক। আমরা মাশরাফি ভাইকে বিশ্বাস করি, আশা করি সমাধান করবেন উনি।