Home অন্যান্য নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ২৩তম সমাবর্তন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ২৩তম সমাবর্তন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত


বেসরকারী পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার পথপ্রদর্শক এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মাঝে র‌্যাংকিং এ প্রথম
স্থান অর্জনকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি আজ ০৮ এপ্রিল, ভার্চুয়ালি ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের
আয়োজন করে। ভার্চুয়াল সমাবর্তন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ‘ডিবিসি নিউজ’
টিভি চ্যানেল এ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এর প্রতিনিধি হিসেবে
সমাবর্তনের সভাপতিত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এম.পি.
এবং সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা
জনাব সালমান এফ রহমান, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী
কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের
চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি জনাব এম. এ. কাশেম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা
লায়ন বেনজীর আহমেদ, জনাব আজিজ আল কায়সার, মিজ ইয়াসমীন কামাল, মিজ রেহানা রহমান, জনাব তানভীর
হারুন এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিভি
উপস্থাপক এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ অফিস এর পরিচালক জনাব জামিল আহমেদ এবং ২৩ তম
সমাবর্তনের মার্শাল হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের নির্বাহী উপদেষ্টা
অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ খান।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে শিখাতে হবে কিভাবে জীবনব্যাপী শিক্ষা অর্জন করা
যায়। দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে প্রতিনিয়ত জ্ঞানের বিষয়গুলি পরিবর্তিত হচ্ছে। আজকে যে জ্ঞান খুবই
প্রয়োজনীয় সময়ের পরিবর্তনে হয়তো সে জ্ঞান তার প্রয়োজনীয়তা হারাতে পারে। বেঁচে থাকার জন্য, জীবন
জীবিকার জন্য হয়তো নতুন কোন জ্ঞান অর্জন করা জরুরী হয়ে যাবে। তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের শিখাতে হবে
কিভাবে জীবনব্যাপী শিখতে হয়। মন্ত্রী আজ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন একজন শিক্ষার্থী
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা সমাপ্ত করে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করার পরও নতুন কোন ক্ষেত্রে জ্ঞান
অর্জন করা তার জন্য জরুরী হয়ে যেতে পারে। তখন ঐ কর্মজীবীর পক্ষে আবার বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সরাসরি
শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়। এই প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সরকার ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম
চালু করার কথা ভাবছে। শিক্ষাকে আরো সহজ ও আধুনিকীকরণ করার কথা ভাবছে। বয়স যেন জ্ঞান অর্জন
করার জন্য কোন প্রতিবন্ধক না হয় সে বিষয়েও কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ব্লেন্ডেড এডুকেশন ও
মডিউলার এডুকেশন এর ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা
পুনর্ব্যক্ত করেন।

সমাবর্তন বক্তা জনাব সালমান এফ রহমান, এম.পি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যখন গ্র্যাজুয়েশন
উদযাপন করি, অনুগ্রহ করে ভুলে যাবে না যে এতগুলি লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তোমাদের জীবনে অবদান

রেখেছিল যা তোমাদের আজকের সাফল্য এনে দিয়েছে। তোমরা মনে রাখবে যে, তোমরা এবং আমি আজ আমাদের
নিজ নিজ জায়গায় থাকতাম না, যদি এই দেশটি কঠোর বৈষম্য থেকে ১৯৭১ সালে মুক্ত না হত। আমরা জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের কারণে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি । বঙ্গবন্ধু সোনার
বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন – বৈষম্য, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত এক সমৃদ্ধ জাতি। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবে
পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে ঘুরছে এবং শীঘ্রই দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের
পরিকল্পনা চলছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে ২২% এবং চরম দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে ১১%। মাথাপিছু আয় বাড়ার
সাথে সাথে আশা করা হচ্ছে দারিদ্র্যের হার আরও হ্রাস পাবে। তিনি জীবন মুখী শিক্ষা প্রদানের জন্য এনএসইউ
কর্তৃপক্ষের পরামর্শ দেন। দেশকে উন্নয়নে আরও বেশি সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি
স্নাতকদের আহবান জানান।

অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বাংলাদেশে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে। এমনকি এই জটিল মহামারী চলাকালীন সময়েও দেশের লক্ষ লক্ষ
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় কোনও বাধা হতে পারেনি। এই জটিল সময়েও, কমিশন
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অনলাইনে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য পূর্ণ সহযোগিতা করেছে।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব এম. এ. কাশেম বলেন, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সকল ক্লাস, শিক্ষা কার্যক্রম এবং গবেষণা প্রক্রিয়া যাতে বাধা প্রাপ্ত না হয় এবং
শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ এর যাতে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট না হয় তা নিশ্চিত করতে অনলাইনে সমস্ত ক্লাস
এবং কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছে। গত এক বছরে, আমরা আর্থিক সহায়তার আকারে, কোভিড -১৯ এর সময়
শিক্ষার্থীদের বিশেষ ছাড় এবং কোভিড -১৯ চলাকালে দরিদ্র মানুষদের সহায়তা হিসাবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা
ব্যয় করেছি। আমাদের মতো আমদের স্নাতকরাও এই বিশ্বকে আরও উন্নত স্থান হিসাবে গড়ে তুলতে আমাদের
সাথে যোগ দেবে বলে আমি মনে করি। আজ, এনএসইউ কিউএস বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিংয়ের এশিয়ার সমস্ত
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে ২২৮ তম এবং ব্যবসায়িক ও পরিচালন বিভাগে ৩৫১-৪০০ এ বিশ্বব্যাপী স্থান
পেয়েছে। ইউজিসির প্রতিবেদন অনুসারে, এনএসইউ ২০১৯ সালে ১,১৩৫ টি প্রকাশনা প্রকাশ করেছে করেছে
বাংলাদেশের সকল সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে সর্বাধিক। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত
শিক্ষাব্যবস্থা ব্যবস্থা, ক্যানভাস চালু করতে চলছি যা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়। আরও মানসম্পন্ন গবেষণাকে
উত্সাহিত করার জন্য, আমরা সম্প্রতি প্রতিটি স্কুল থেকে আমাদের অসামান্য গবেষকদের স্বীকৃতি দিতে
তাদের পুরস্কৃত করতে “রিসার্চ এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডস” চালু করেছি।

উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি একটি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি সহ দক্ষ
এবং নৈতিক স্নাতক তৈরিতে নিযুক্ত। আমরা শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী চিন্তাভাবনা এবং স্থানীয়ভাবে নেতৃত্ব
দিতে সক্ষম করে গড়ে তুলি। এনএসইউর গ্রাজুয়েটরা আগামীতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। তারা ব্যবসায়ের
অগ্রণী হবে এবং আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করবে।

এবারে সমাবর্তনে ৪ হাজার ১৪ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীকে সনদ দেওয়া হয়। এ বছর ২ জন কৃতী
শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর এবং ৮ কৃতী শিক্ষার্থীকে ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। গ্র্যাজুয়েটদের
পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রাপ্ত আবু মোহাম্মদ সাব্বির খান।

অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইসমাইল হোসেন, স্কুল অব বিজনেস
এন্ড ইকোনোমিক্স এর ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, স্কুল অব হিউম্যানিটিস এন্ড সোস্যাল

সায়েন্সেস এর ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুর রব খান, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস এর ডিন
অধ্যাপক ড. জাবেদ বারী, স্কুল অব হেলথ এন্ড লাইফ সায়েন্সেস এর ভারপ্রাপ্ত ডিন, অধ্যাপক ড. হাসান
মাহমুদ রেজা, বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষকবৃন্দ এবং কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও ভার্চুয়াল সমাবর্তনে নর্থ
সাউথ ইউনিভার্সিটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ‘ডিবিসি নিউজ’ টিভি চ্যানেল এ সরাসরি সম্প্রচার এর
মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন বিপুল সংখ্যক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। সমাবর্তনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভার্চুয়াল
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।