Home ব্রেকিং উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া কোনো আলোচনা নয়: আ. লীগ নেতাদের শিক্ষার্থীরা

উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া কোনো আলোচনা নয়: আ. লীগ নেতাদের শিক্ষার্থীরা


মঙ্গলবার দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানান।

তবে ওই আহ্বান ফিরিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনড় জানিয়ে স্লোগান দেন।

পরে বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতারা উপাচার্যের বাসভবনে যান। এর পাঁচ মিনিট পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে দিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আওয়ামী লীগ নেতারা শিক্ষার্থীদের বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ জন্য তারা শিক্ষার্থীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

তবে আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত কোনো আলোচনায় তারা বসবেন না। ঘরেও ফিরবেন না।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী, সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা কমিটির সহসভাপতি আশফাক আহমদ, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, অসদাচরণের অভিযোগ এনে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তারা।

এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরতদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার বেলা আড়াইটার দিকে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং শেষে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের হলে উপাচার্যের পিছু নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় উপাচার্য ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে আশ্রয় নিলে শিক্ষার্থীরা সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিকেল ৫টার দিকে উপাচার্যকে উদ্ধারে শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জের পাশাপাশি তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

এছাড়া পুলিশের হামলায় ছত্রভঙ্গ শিক্ষার্থীরা আবারও জড়ো হলে পরে ছাত্রলীগ তাদের ধাওয়া করে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

এদিকে ক্যাম্পাসের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সার্বিক তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।