Home জাতীয় ইলিশ কেনাবেচায় ধুম পদ্মাপাড়ে

ইলিশ কেনাবেচায় ধুম পদ্মাপাড়ে


বি.পরিক্রমা: ভরা মৌসুমে পদ্মায় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় ইলিশ। এতে কেনাবেচার ধুম পড়েছে পদ্মাপাড়ের আড়তগুলোতে। ভোর থেকে শুরু হয়ে মাওয়ার এসব আড়তে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক থাকে সকাল ৮টা পর্যন্ত। আকারভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকায়। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া মৎস্য আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের সরবরাহ যথেষ্ট। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার স্থানীয় বিভিন্ন বাজারের পাইকারসহ নানা প্রান্ত থেকে আড়তে আসছেন ক্রেতারা। অন্যান্য মাছ থাকলেও এসব আড়তে বিশেষ চাহিদা পদ্মার ইলিশের। মাওয়া মৎস্য আড়ত-সংশ্নিষ্টরা জানান, পদ্মাপাড়ের মাওয়ায় ৩২টি আড়তেই নিত্যদিন চলে কেনাবেচা। রাতভর নদীতে আহরিত মাছ আড়তে নিয়ে আসেন জেলেরা। এরপর শুরু হয় বেচাবিক্রি। বিক্রেতারা জানান, দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা, এক কেজি থেকে ১৪০০ গ্রাম ওজনের ১৪০০-১৬০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ১২০০ টাকা কেজি এবং ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান ঝিলু জানান, আড়তগুলোতে দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন সকালে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর হয় মাওয়া মৎস্য আড়ত এলাকা। এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি ও খুচরাভাবে ইলিশ বিক্রি বেড়েছে।জেলা মৎস্য কার্যালয় জানায়, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, শ্রীনগরের ভাগ্যকুল ও সদর উপজেলার কিছু অংশ মিলিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটারজুড়ে পদ্মা নদী। সদর ও গজারিয়া উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় মেঘনা নদী। এসব বিস্তীর্ণ নদীর গভীর থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি জেলে ইলিশ আহরণ করে থাকেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাওয়া মৎস্য আড়তে রয়েছেন ৩২ জন আড়তদার। এসব আড়তে লৌহজং, শরীয়তপুর, মাদারীপুরের শিবচর, নড়াইলের মহাজন, পাবনা, চাঁদপুর ও সিরাজগঞ্জের অন্তত ১০ হাজার জেলে মাছ বিক্রি করতে আসেন। খুচরা মাছ বিক্রেতা রুবেল মিয়া জানালেন, মাওয়া আড়তে এখন সবই পদ্মার ইলিশ। জেলে আক্তার হোসেন বলেন, ‘নদীর গভীরে গিয়ে ইলিশ ধরছি। নদীতে এখন ছোট-বড় সব আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দাম আগের চেয়ে কিছু কমেছে।’ ইলিশের ক্রেতা রাজধানীর মধ্য বাসাবো এলাকার বাসিন্দা রাসেল মিয়া বলেন, ‘টাটকা ইলিশ কেনার জন্য বুধবার ভোরে আড়তে এসে মাছ কিনেছি। ছয় দিন আগে যে মাছ পাঁচ হাজার টাকায় কিনেছি, বুধবার সেই আকারের মাছ চার হাজার টাকায় কিনেছি। দাম কম থাকায় আগের চেয়ে বাজারে ভিড় বেড়েছে।’ মাওয়া মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম বলেন, দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন আড়তে। তাঁরা ন্যায্য দামেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ। আড়তে বাড়তি কোনো চাঁদা বা অন্য কোনো ফি দিতে হয় না। লৌহজং উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় পদ্মায় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। বর্তমানে ইলিশ মাছ সাগর থেকে কোনো বাধা ছাড়াই পদ্মা নদীতে চলে আসছে। এতে পদ্মার মুন্সীগঞ্জ অংশে আগের চেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে।