Home ব্রেকিং ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আলোচিত প্রার্থী হামজা রহমান অন্তর

ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আলোচিত প্রার্থী হামজা রহমান অন্তর


আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ঘিরে দলের হাইকমান্ডের কাছে তদবির করছেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা, চলছে জোর লবিং। মধুর ক্যান্টিনে চলছে রাজনৈতিক তরজা। রাজনীতির মাঠের পাশাপাশি গাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কথা বলে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছেন নেতাকর্মীরা।

এরমধ্যে পদের দাবিদার হিসেবে উঠে এসেছে অনেকের নাম। আলোচনায় এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের কথাও। এতে শীর্ষ পদে আলোচিত হচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক হামজা রহমান অন্তর।

এ বছর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি। এর আগে ২০১৭-২০২১ সাল পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০১৩-২০১৬ সালে ছিলেন জাবি ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আগে তিনি ভোলার দৌলতখান উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও দৌলতখান আবু আবদুল্লা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন।

ভোলার দৌলতখানে বাবা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মা সেলিনা পারভীনের ঘরে ১৯৯৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জন্ম তার। অন্তরের বাবা মাকসুদুর রহমান ছাত্রজীবনে ছিলেন বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (১৯৮২-৮৪)। অন্তরের ছোটবোন হাফসা বিনতে রহমান মীম ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক (২০১৭-১৯)। এছাড়াও অন্তরের পুরো পরিবার মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণসহ স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে।

দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি, দৌলতখান আবু আব্দুল্লা কলেজ থেকে ২০১১ সালে এইচএসসি পাশের পর ২০১১-১২ সেশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্বে ভর্তি হন হামজা রহমান অন্তর। সেখানে স্নাতক(সম্মান) ও স্নাতকোত্তরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনোসাইড স্টাডিজে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন ডিপ্লোমা করেছেন। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইনে স্নাতক(পাশ) কোর্স পড়ছেন।

ছাত্রলীগের এই নেতা জানান, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ইউনিয়ন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। ২০০৯-২০১১ সালে কলেজ জীবনে আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে ছাত্রদল-শিবিরের সন্ত্রসীদের প্রতিরোধে রাজপথে রুটিন মাফিক অবস্থান করে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পান।

২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম দিন থেকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে যোগদান করেন। এরপরে তিনি টানা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে নিজেকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রেখেছেন।

এছাড়াও বহুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দলীয় আদর্শের পক্ষে সরব থেকে ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখে তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান। তবে সবচাইতে বেশি আলোচিত হন ২০২১ সালের শেষের দিকে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানি জার্সি-পতাকা প্রতিরোধ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে।

এদিকে আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে আলোচনায় উঠে এসেছেন এই নেতা।

ছাত্রলীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, প্রগতিশীল, মেধাবী ও ত্যাগের কারণে সংগঠনে এমন নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন কাউকেই বেছে নেবেন।

এদিকে সম্মেলনে পদপ্রার্থী হয়ে নিজের ইশতেহার প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের এই নেতা।

হামজা রহমান অন্তর জানান, তিনি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৫ দফা ইশতেহার বা প্রতিশ্রুতিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন।

ইশতেহারে তিনি বলছেন, ‘‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমার নেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রকৃত কর্মীদের মূল্যায়ন এবং অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান গ্রহণ।’’

হামজা রহমান অন্তর বলেন, ‘‘তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে মেধা, সততা, অভিজ্ঞতা ও ত্যাগই হবে নেতৃত্ব নির্বাচনের মাপকাঠি। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠন। ১ বছরের মধ্যে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অনুমোদনক্রমে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সকল কার্যক্রম দুই বছরেই সমাপ্ত করে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ।’’

ছাত্রলীগের এই নেতা জানান, ‘‘দক্ষ নেতৃত্ব গঠন ও মেধা বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের নেতৃত্বে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা, মেধাবীদের মূল্যায়ন এবং ইতিহাস ও রাজনীতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান।’’

তিনি জানান, ‘‘ছাত্রলীগকে সত্যিকার ডিজিটাল ছাত্রলীগে রূপান্তরিত করতে নেতাকর্মীদের ডাটাবেইজ তৈরি, সকল ইউনিটের অনলাইন সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণ এবং প্রচারণা ও অপপ্রচার মোকাবেলায় মিডিয়া সেল গঠন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর তথ্য কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলে সংরক্ষণ করা হবে। কোনো অভিযোগ উঠলে দ্রুততার সঙ্গে পরিচয় নিশ্চিত করতে ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ নিবে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল।’’

তিনি আরও জানান, ‘‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি শক্তিশালী সাইবার এক্টিভিস্ট প্লাটফর্ম তৈরি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংখ্যাধিক্যকে কাজে লাগাতে পারলে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার ফোর্স।