Home ব্রেকিং ভালো চাইলে ভোটে আসেন, নির্বাচনে আসেন : মায়া

ভালো চাইলে ভোটে আসেন, নির্বাচনে আসেন : মায়া


ক্ষমতায় যেতে হলে আন্দোলন-জ্বালাও-পোড়াও-সন্ত্রাস ছেড়ে বিএনপিকে ‘ভোটে’ আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকারকে ইচ্ছা করলেই হটানো যাবে না। ভালো চাইলে যে পথে ক্ষমতায় যেতে পারবেন না, সেই পথ ছেড়ে যে পথে ক্ষমতায় যেতে পারবেন সেই ভোটে আসেন, নির্বাচনে আসেন। যদি জনগণ ভোট দেয় তাহলে ক্ষমতায় যেতে পারবেন। কিন্তু উল্টাপাল্টা রাস্তা দিয়ে ক্ষমতায় যাবেন – সেই দিন এখন আর নাই।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আরো বলেন, আপনারা ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়া ক্ষমতায় গেছিলেন। এখন আর ভুয়া ভোটারও নাই আর ষণ্ডা-গুণ্ডা দিয়া ভোটবাক্স দখল করবেন, সেই দিনও নাই।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ভোটের দিন পালান কেন? সাহস থাকলে মাথা উঁচু করে দাঁড়ান। নির্বাচনে অংশ নেন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এসব কথা বলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী। সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও মহানগরের নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্যের শুরুতে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, শান্তি সমাবেশের নাম শুনলেই বুকটা ধড়ফড় করতে শুরু করে। কারণ এই জায়গায় ২০০৪ সালে শান্তি সমাবেশ করেছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেই শান্তি সমাবেশে খালেদা জিয়া-তারেক জিয়া গ্রেনেড মেরে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় তিনি বেঁচে গেছেন। সেই হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন শাহাদত বরণ করেছিলেন।

তিনি বলেন, সেই সন্ত্রাসীরা আবার একই কায়দায় বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়, সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু এটা কোনোমতেই সম্ভব নয়।

‘আওয়ামী লীগ পালাবার পথ পাবে না’ বিএনপি নেতাদের এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন পালায় না, পালিয়ে যাবেও না। আপনারা (বিএনপি) যে সন্ত্রাস করছেন, মানুষ হত্যা করছেন, এই অপরাধে আপনাদেরও আমরা দেশ থেকে যেতে দেব না। এর বিচার হবে, যতই লাফালাফি করেন।

তিনি আরো বলেন, আপনাদের বলেছিলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিটিং করেন, কিন্তু আপনার যান নাই। গেছেন গোলাপবাগ গরুর হাটে। এখন রাজপথ ছেড়ে করছেন পদযাত্রা। পদযাত্রা করে ভিক্ষা চাইছেন। এই পদযাত্রা করে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত করবেন – এটা তাদের মাথায় এলো কীভাবে?

বিএনপির গণঅভ্যুত্থান করার প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল একবারই, ১৯৭০ সালে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে। এরপরে আর গণঅভ্যুত্থান করার কারো সাহস হয় নাই।

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বলেছেন – আমরা যেন ওদের কোনো উস্কানি না দেই। আমরা সেটা করি না, করবও না। নেত্রী বলেছেন, আমরা নির্বাচনের আগ পর্যন্ত, ২০২৩ সালে, সারা বছর রাজপথে থাকব। এই রাজপথ আমরা কাউকে ইজারা দিতে পারি না, দিবও না।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আপনার রাজপথে মিছিল করেন, সমাবেশ করেন, আমরা স্বাগত জানাই। যদি ক্ষমতায় যেতে চান তবে এইবার নির্বাচনে ভোটে আসেন। নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন পরিচালনা করবেন এবং শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবেন।

এসময় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এভাবেই আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে, এলাকায় প্রতিরোধ সভা, আন্দোলন সভা ও শান্তি সমাবেশ করব। তারা যেন কোনো রকমে এদেশে আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক থাকব। তারপরও তারা যদি বিশৃঙ্খলা করে তবে রাজপথে তাদের মোকাবিলা করা হবে।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া দলের সবাইকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে। সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিন।