দেশে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড ৩ হাজার ১৭১ জন , মৃত্যু ৪৫

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক:  বিশ্বে যখন মৃত্যু মিছিল তখন করোনায় বাংলাদেশেও দিনকে দিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৯৭৫ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরো ৩ হাজার ১৭১ জন। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৬৭৫ জন। ৫৫টি ল্যাবে এই পরীক্ষাগুলো করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ মেনে ঘরে থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণেরও পরামর্শ দেন। একই সাথে যারা করোনার এই মহামারিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের ধন্যবাদ দেন নাসিমা।

এর আগে সোমবারের বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে চব্বিশ ঘণ্টায় আরো ২ হাজার ৭৩৫ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন আরো ৪২ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৯৩০।

প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২১৫টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ লাখ ১০ হাজার ২০০ জন। মারা গেছেন চার লাখ ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে ৩৫ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।




আজ সমন্বয়, কাল সেনা মোতায়েন

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :  করোনাভাইসরাসের সংক্রমণ রোধে দেশের সকল জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, in aid to civil power এর আওতায় আজ দেশের সকল বিভাগ ও জেলায় করোনাভাইসরাস নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় সমন্বয় করবে।

পরবর্তীতে বুধবার সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে।

সেনাবাহিনীর সদস্যরা করোনাভাইসরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত ও বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন কর্মসূচি নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সমুহে সহায়তা ও সমন্বয় করবে।

এছাড়া, সেনাবাহিনী বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে মেডিকেল সহায়তা প্রদান করবে।




করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ছাত্রলীগের সভাপতি পদপার্থী গাজি নিয়াজ মোর্শেদ (ছোটন) মাস্ক বিতরণ

আশিক সরকার : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতার লক্ষে মতলব উত্তর উপজেলার পথচারী, অটোচালক ও মাঝিদের মাঝে লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করেছেন চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট মোঃ নুরুল আমিন রুহুল  ও চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক ও লিফলেট বিতরন করে মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপার্থী গাজি নিয়াজ মোর্শেদ (ছোটন)। ২৪ মার্চ মঙ্গলবার সকালে ছাত্রলীগের তৃনমুল কর্মী ও  নেতৃবৃন্দ নিয়ে এ কর্মসূচি গ্রহন করেন।

এছাড়াও করোনা আতংকে মাঠে তৎপর রয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি পদপার্থী গাজি নিয়াজ মোর্শেদ (ছোটন) মাস্ক বিতরণ। বিশ্বব্যাপী এই আতঙ্কের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি নানা উদ্যোগও নিয়েছেন । গত কয়েকদিন ধরে মতলব উত্তর উপজেলার ঘাট ও অন্যান্য এলাকায় ছাত্রলীগের সভাপতি পদপার্থী গাজি নিয়াজ মোর্শেদ (ছোটন) উদ্যোগে মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

মাস্ক ও লিফলেট বিতরণকালে সাধারণ মানুষদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে মহামারী এই সংক্রমণ রোগ থেকে দেশ ও নিজ পরিবারকে বাঁচাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সচেতনতা। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। কোন গুজবে কান না দিয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকারের সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে চলতে হবে। করোনা ভাইরাস যেন দেশব্যাপী ছড়িয়ে না পরে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর আপনারা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন এ মহামারী থেকে যেন আমরা নাজাত পাই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা-আলম শামসুজ্জামান,মেহেদী হাসান চৌধুরী,তানভীর আহম্মেদ শিশির,ইমরান মোল্লা,ইব্রাহীম খলিল,গাজী জাকারিয়া(সজিব),রিদয়,ফয়সাল,সাহাদাত,সোলেইমান,সাগর,সহ আরো অনেকে। স্থানঃ নতুন বাজার,আমিরাবাদ বাজার,জনতা বাজার,চরমাচুয়া,বাদামতলী সহ বিভিন্ন স্থানে,১০০০ শতাদিক মাস্ক ও লিফলেট বিতরন।।




যে দুই রোগ থাকলে করোনায় মৃত্যু নিশ্চিত!

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : করোনার আতঙ্কে পুরো বিশ্ব। মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বিশ্বের প্রায় ১৫৭টি দেশ ও অঞ্চল। আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৯ হাজার ৬১০ জন। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৬১৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭৭ হাজার ৭৭৬ জন রোগী।

কোভিড -১৯ ভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে, যা হাঁচি, কাশি, লালা ও সর্দির সাহায্যে বাতাসবাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তের ৬ ফিটের মধ্যে থাকলে সুস্থ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে আক্রান্ত মানুষটির হাঁচি, কাশি, নাক ঝাড়া থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তি যদি নাকে মুখে হাত দিয়ে সুস্থ মানুষের সংস্পর্শে আসে, তবে অন্যজনের শরীরে এই ভাইরাস দ্রুত বংশ বিস্তার করে।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তারা আছেন সবচেয়ে বেশি মৃত্যুঝুঁকিতে।

ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশালিস্ট অরিন্দম কর বলেন, অত্যন্ত ছোঁয়াচে হওয়ায় এই রোগে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের জন্য কোভিড-১৯ মারাত্মক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। বিশেষ করে রোগীর বয়স যদি ৬৫ বছরের বেশি হয় এবং তিনি যদি ধূমপায়ী হন, তাহলে সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে জীবনঝুঁকি হতে পারে।

সম্প্রতি ‘ল্যানসেট’ নামক এক মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে জানা গেছে, ৬৯ উত্তীর্ণ পুরুষ বা নারী যারা ধূমপায়ী এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী, তাদের নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুহার সব থেকে বেশি।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, কোভিড-১৯-এর সংক্রমণে মৃতদের শরীরে ভাইরাস থেকে যায়। আর এ কারণেই চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বিশেষ সতর্কতা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কোভিড-১৯ ভাইরাসটি ফুসফুস ও ক্ষুদ্রান্ত্রকেও অ্যাটাক করে লাইনিং নষ্ট করে দেয়। এরপর একে একে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ করার ক্ষমতাও কমে যায়।

করোনার এখনো কোনো প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে চাপা দিয়ে হাঁচি-কাশি, বাইরে থেকে ফিরে পোশাক বদলে হাত-মুখ সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নেয়া খুব জরুরি।




ডেঙ্গু মোকাবেলায় একটি চেকলিস্টের খসড়া

ঢাকাসহ আরও কয়েকটি শহরের বাসিন্দাদের গত বছরের একটি বিরাট সময় ডেঙ্গু উদ্বেগের মধ্যে পার করতে হয়েছিল। মশাবাহিত এ রোগের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ ছাড়া উপায় ছিল না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর শুধু জুলাই মাসের প্রথম ২৪ দিনে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৬ হাজার ৪২১ জন এবং গাজীপুর, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালগুলোয় ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল।
সরকারি হাসপাতালের বারান্দায় অতিরিক্ত বেড দিয়ে রোগী ম্যানেজ করা হয়েছিল। অনেকে সিটের অভাবে ভর্তিই হতে পারেননি।
আবার বছর ঘুরে ওই সময়গুলো কড়া নাড়তে শুরু করেছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কি এবারও ঘটবে? আমরা কি গতবার অপেক্ষা স্মার্টলি ডেঙ্গু মোকাবেলা করতে পারব? নগরবাসী কি ডেঙ্গু ঝুঁকিহীন মৌসুম পার করতে পারবে? এ ব্যাপারে যুগান্তরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ডেঙ্গু সম্পর্কিত সচেতনতামূলক সম্পাদকীয়টি প্রণিধানযোগ্য।
এতে বলা হয়েছে: চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪১ জন, জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ১৯৯ জন। আর গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন যথাক্রমে ৩৮, ১৮ ও ১৭ জন।
বর্তমানে বিগত বছরের এ সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২.৭ গুণ। অর্থাৎ এ বছর ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। গত বছরের ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।
এ মশা যেখানে গেছে সেখানেই ডিম পেড়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে এসব ডিম দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। যখনই বৃষ্টির পানি জমতে শুরু করবে তখনই এ ডিম থেকে বেরিয়ে আসবে মশা।
২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরে এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেঙ্গু-পরবর্তী জরিপের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বলা হয়- ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ১১টি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এতে ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে এখনই সারা দেশে ডেঙ্গুর সম্ভাব্য প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে।
২০১৭-এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত রাজধানীর ৮টি এলাকায় এডিস মশা নিয়ে গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের এডিস মশা ওষুধপ্রতিরোধী। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে গত বছর আদালতের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ক্লাইমেট সেনসেটিভ এ ডিজিজটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা।
এ বছর দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, সর্বোচ্চ আর্দ্রতা, সর্বোচ্চ উষ্ণতা ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় এর ভয়াবহ প্রভাব চলছে। ষাটের দশকে এ জ্বর আমাদের দেশে ‘ঢাকা ফিভার’ নামে পরিচিত ছিল। কারণ, তখনও এ জ্বর সম্পর্কে খুব বেশি জানা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশে ২০০০ সালে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এক জরিপে দেখা গেছে, এতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৫৫৫, আর মৃত্যু হয়েছিল ৯৩ জনের। একটি পত্রিকার মতে, পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৫ লাখ রোগীর মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার মৃত্যুবরণ করে, যার একটি বড় অংশ শিশু।
মৃত্যুহার চিকিৎসা ছাড়া ১-৫ শতাংশ এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসায় ১ শতাংশের কম। বেশিরভাগ লোকই কোনো স্থায়ী সমস্যা ছাড়াই ডেঙ্গু থেকে আরোগ্য লাভ করে।
১৯৬০ সাল থেকে ২০১০-এর মধ্যে ডেঙ্গুর ঘটনা ৩০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরায়ণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, গ্লোবালাইজেশন এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলাফলকে এর ব্যাপকতা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে মনে করা হয়। ডেঙ্গুজ্বরের প্রথম বিবরণ পাওয়া যায় প্রথম সহস্রাব্দের এক চীনা মেডিকেল এনসাইক্লোপেডিয়ায়।
এখানে উড়ন্ত পতঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জলীয় বিষের কথা বলা হয়েছে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এর প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, ১৮৭১-৭২ সালের দিকে। ১৯৭৫ সালের পর থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এটি নির্দিষ্ট সময় পরপর দেখা দিচ্ছে।
ভৌগোলিক বিভাজন অনুযায়ী বিষুবরেখার চারপাশে মোট ২.৫ বিলিয়ন জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মহামারীপ্রবণ এলাকায় বসবাস করে।
তাই এশিয়ায় ডেঙ্গু মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি ছিল। গত বছর থাইল্যান্ডে ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল, মৃত্যুবরণ করে ৬২ জন। মালয়েশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল ৪ হাজার, মৃত্যুবরণ করে ১ জন। শ্রীলংকায় ২২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়।
ডেঙ্গু মোকাবেলায় এখন থেকেই কার্যক্রম শুরু করতে হবে। প্রত্যেককেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতে হবে, নতুবা এটি মহামারী আকার ধারণ করবে। এডিস ইজিপ্টি নামের মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস মানব শরীরে প্রবেশ করে।
এটি পরিষ্কার পানিতে জন্মগ্রহণ করে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানি এড়িয়ে চলে বলে অনেকেই একে অভিজাত মশা বলে থাকেন।
তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে অব্যবহৃত পানির বোতল, কৌটা, প্লাস্টিক কনটেইনার, ফুলদানি, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার- এগুলো বাসাবাড়ির আশপাশে ও লোকালয়ে যথেচ্ছাচারভাবে ফেলে না রেখে ব্যবহার শেষে ধ্বংস করে দিতে হবে।
অনেক স্থাপনার বাউন্ডারি ওয়ালের পাশে বাঁধানো জায়গায় দিনের পর দিন পানি জমে থাকে, এতে ডেঙ্গু মশা জন্মানোর আশঙ্কা বাড়ে। বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট সর্বোপরি পুরো শহর ও এলাকাকেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
গত বছর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলেছিলেন, নিয়মিত সকাল-বিকাল এলাকায় ওষুধ ছিটানোর কথা থাকলেও সপ্তাহে এক বা দু’দিনের বেশি তাদের দেখা মেলেনি। এখনও নিয়মিত মশার ওষুধ দেয়া হয় না।
বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের এলাকায় সর্বশেষ কবে কখন মশার ওষুধ দেয়া হয়েছে, বিষয়টি তারা মনেই করতে পারছেন না।
ইতিমধ্যে মশার উপদ্রব শুরু হয়ে গেছে; সারা দিন, সারাক্ষণ মশার কামড়ে নগরবাসীর জীবন ওষ্ঠাগত, তাই দেরি না করে এখন থেকেই নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানো শুরু করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের তরফ থেকে মশা নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি নিজেদের উদ্যোগে অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, স্থাপনার ভেতর ও চারপাশে মশার ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে আর্থিক লগ্নি থাকলেও অন্তত মশার উপদ্রব থেকে তো রক্ষা পাওয়া যাবে।
আমাদের দরজা-জানালা দিয়ে মশা ঘরে ঢোকে। তাই মৌসুম শুরুর আগেই বাসাবাড়ির প্লাস্টিকের নেট মেরামত করে নেয়া যেতে পারে।
বাসার পর্দা ঢাকা যে জানালাটি একটি দিনের জন্যও খোলা হয়নি, সেটি একবার খুলি না কেন? ময়লা-আবর্জনা, ঝুল নিয়মিত পরিষ্কার করি না কেন? ঘরের মধ্যে ওই জায়গাগুলোতেই তো মশা-মাছি, পোকা-মাকড় লুকিয়ে থাকে। বাসাবাড়ির আসবাবপত্রের ফাঁকে মশা-মাছি তার আস্তানা খুঁজে পায়।
তাই আসবাবপত্র এমনভাবে রাখতে হবে, যেন ময়লা পরিষ্কারের জন্য তার চারপাশে অন্তত ঝাড়ু ঘোরানোর জায়গা থাকে। কিছুদিন পরপর ঘরের ফার্নিচারের পুনর্বিন্যাস করলে ঘরও দেখতে সুন্দর লাগে, একই সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও থাকে।
আমাদের অনেকেই রাতে ঘুমানোর সময়ও মশারি ব্যবহার করেন না। ঘরের মধ্যে যদি মশা থাকে, তাহলে অবশ্যই মশারি ব্যবহারের অভ্যাস করতে হবে। আরামপ্রিয় এ জাতি দুপুরে খাওয়ার পর সুযোগ পেলেই একটু ঘুমিয়ে নেয়। মশার প্রকপের এ সময়গুলোয় দিনের বেলা ঘুমালেও মশারি নেয়া দরকার।
বাসার দরজার সামনে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের ৬০ শতাংশ মানুষের মশা দূর করার জন্য অ্যারোসল ও মশার কয়েল কেনার পর্যাপ্ত টাকা নেই। তাই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বস্তিবাসী ও দরিদ্র জনগণের মধ্যে বাড়তি ব্যবস্থা হিসেবে মশার কয়েল, অ্যারোসল, মশারি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
কিছু কিছু লোশন, ক্রিমের নাম শোনা যায় যেগুলো শরীরে মেখে রাখলে নাকি একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মশা কামড়ায় না। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে বিষয়টি পরীক্ষা করা যেতে পারে। যদি এটি সঠিক হয় এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকে তাহলে এ ব্যাপারে জনগণকে অবহিত ও ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
গত বছর অনেক প্রাইভেট ক্লিনিক-হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে মর্মে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শোনা গিয়েছিল। যখন মানুষজন সংকটাপন্ন অবস্থায় দিশেহারা, তখন সব ক্লিনিক-হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রের তরফ থেকে আরও মানবিক আচরণই সবাই প্রত্যাশা করে থাকে।
আমাদের হাসপাতালগুলোর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ সত্যিই খুব অবাক করার বিষয়। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ঢুকলেই চারদিকের অপরিচ্ছন্নতা মনকে বড় বেশি ভারাক্রান্ত করে তোলে।
ওইসব প্রতিষ্ঠানের ক্যান্টিন-রান্নাঘরের অবস্থা তো আরও করুণ, তাই তো অনেক ক্ষেত্রে ওইসব রান্নাঘরেও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হয়। অনেক প্রাইভেট হাসপাতালে কেবিন-ওয়ার্ডের বেডে তেলাপোকা, মশা, মাছি ও অন্যান্য পোকা-মাকড়ে ভরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোগীদের আরও অসুস্থ করে তুলেছিল, অ্যারোসল ব্যবহার করেও কাজ হয়নি। আমাদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। হাসপাতালের পরিবেশ অবশ্যই রুচিকর, আরামদায়ক ও রোগীবান্ধব পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
রোগীর অবস্থা জটিল আকার ধারণ না করলে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সাধারণত বিশ্রাম ও লিকুইডজাতীয় খাবার গ্রহণ। তাই ডেঙ্গুর সব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির পরিবর্তে স্ব স্ব বাসায় চিকিৎসাসেবা প্রবর্তনের বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে।
শহরের এলাকাগুলোকে ক্লাস্টারে বিভক্ত করে ওই এলাকায় অবস্থিত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি বাসায় বাসায় গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ প্রদান করেন তাহলে হাসপাতালগুলোর ওপরে চাপ কমবে এবং রোগীরাও নিজ নিজ বাসায় স্বস্তির সঙ্গে বিশ্রাম নিয়ে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারবে।
ডেঙ্গু রোগের ধরন ও গতি-প্রকৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। এর সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, ফলে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের দিকেই আমাদের নজর দিতে হবে বেশি।
তাই ডেঙ্গু মোকাবেলায় চিকিৎসকের ভূমিকা অপেক্ষা ব্যক্তি সচেতনতা, পরিবার, সমাজ এবং সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্তব্যপরায়ণতা ও কর্মতৎপরতা বেশি থাকা দরকার।




নগর এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হচ্ছে …..এলজিআরডি মন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :  স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, সরকারের একার পক্ষে এদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শীঘ্রই পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা হবে। ফলে নগর এলাকায় দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

 

মন্ত্রী বলেন, সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন হচ্ছে। গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে  স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকা গুলোতেও যাতে সাধারণ মানুষ প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

 

আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে “ইফেকটিভ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ ইন হেলথ সেক্টর অফ বাংলাদেশ” শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন সাপোর্ট টু হেলথ এন্ড নিউট্রিশন টু দ্য পুওর অফ বাংলাদেশ” প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

 

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সকলকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের দায়িত্ব মূলত আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হলেও স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ ও স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা-কে স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনসমূহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যু রোধ, টিকাদান কর্মসূচি ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা অনেক সাফল্য পেয়েছি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্বীকৃতি পেয়েছি।

 

মন্ত্রী আরো বলেন, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে সকল জনগোষ্ঠীর জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা একটু পিছিয়ে আছি। শহর এলাকায় জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপের আমাদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাষণ প্রভৃতি সেবামূলক কাজের জন্য যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা ধারণা করতে পারি, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক শহরে বাস করবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সকলকে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

 

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ডেলিগেশনের মিনিস্টার কাউন্সিলর এন্ড হেড অব কো-অপারেশন মাওরিজিও সিয়ান (Maurizio Cian), স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অমিতাভ সরকার এবং প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মেজবাহ উদ্দিন প্রমুখ।




করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩ বাংলাদেশি শঙ্কামুক্ত : ডা. ফ্লোরা

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :  রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর পরিচালক মিরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ৩ বাংলাদেশি শঙ্কামুক্ত। চার জন আছেন কোয়ারেন্টাইনে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাতজনের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে ভাইরাসটি পাওয়া যায়নি। যে সাতজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বিদেশফেরত যাত্রীও রয়েছেন। তার মানে হচ্ছে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিনজন।

ডা. ফ্লোরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করেছেন ২৮ হাজার মানুষ। দেশে করোনা জীবানু ছড়ানো বন্ধ করতে হোম কোয়ারেন্টাইনের বিকল্প নেই। কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন রোগের উপসর্গ দেখা দিলে আইইডিসিআরের হটলাইন ফোন দিতে অনুরোধ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এদের দুজনের মধ্যে খুবই মৃদু উপসর্গ ছিল। কিন্তু তাদেরকে এখন আমরা ছাড়তে পারব না। পরপর দুটো নমুনা পরীক্ষায় যদি তারা নেগেটিভ হয়, তাহলেই কেবল হাসপাতাল থেকে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

সিনিয়র সিটিজেনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ৬৫ বছরেরও বেশি বয়স যাদের, তাদের জন্য বিশেষ অনুরোধ হলো- অত্যাবশ্যকীয় না হলে তারাও বাসার বাইরে যাবেন না। সভা-সমাবেশ বা ভিড়ের মধ্যে না যেতে অনুরোধ করা হচ্ছে।




করোনায় মৃত্যুপুরী ইতালি, দেড়কোটি মানুষ অবরুদ্ধ

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :  ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে গ্রাস করে ফেলা ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাসে ইতালি পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। দেশটিতে একদিনে এক লাফে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। আর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। এ কারণে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার।

লোম্বারদিয়াসহ ১৪টি প্রদেশে ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এ অবস্থা জারি থাকবে। ১৪ প্রদেশে প্রায় দেড় কোটি লোক বসবাস করে। এ অবস্থার পর কেউ ওই এলাকা থেকে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে পারবে না বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।

রেড জোন হিসেবে রয়েছে- মোডেনা, পারমা, পিয়াসেনজা, রেজিও এমিলিয়া, রিমিনি, পেসারো এবং উরবিনো, ভেনিস, পদুয়া, ট্র্যাভিসো, আস্তি, আলেসান্দ্রিয়া, নোভারা, ভারবানো, কুসিও অসসোলা এবং ভেরসেল্লি। এসব এলাকা থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।

ইতালির সরকার বলছে, এই রেড জোনের আইন কেউ অমান্য করলে ২০৬ ইউরো জরিমানা অথবা তিন মাসের জেল দেয়া হবে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সিনেমা আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিশ্বের প্রথম সারির সব গণমাধ্যম আর বিভিন্ন দেশের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরের শেষে উহান থেকে উৎপত্তি লাভের পর এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনা এক লাখ ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। আর প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৫৮ হাজার ৫৬৮ জন।

উৎপত্তিস্থল চীন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কবলে পড়েছে সবচেয়ে বেশি। দেশটির সব অঞ্চলে থাবা মেরেছে করোনাভাইরাস। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে চীনে প্রায় তিন হাজার একশ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও ৮০ হাজারের বেশি। অবরুদ্ধ হয়ে আছে কোটি কোটি মানুষ।

চীনের পর সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই সংখ্যা এখন সাত হাজার ৩১৩ জন। তবে চীনের পর ৩৬৬ মত্যৃ নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে ইতালি। সেখানে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত হাজার। ১৯৪ মৃত্যু এবং পাঁচ হাজার ৮২৩ আক্রান্ত নিয়ে ইরানের অবস্থান তৃতীয়।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাসের প্রকোপের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে না। এসব দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরাই বলছেন, তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে।




যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির ধাক্কায় বাংলাদেশির মৃত্যু

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :  যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টিতে গাড়িতে ধাক্কায় আহত তাহমিনা আকতার (৩৯) নামের এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। গত শুক্রবার বিকাল প্রায় পৌনে ৪টার দিকে গাড়ির ধাক্কায় আহত হন তাহমিনা। তাহমিনা স্প্রিংফিল্ডের একটি ক্রসওয়াকের বাইরে ভিলা পার্ক রোডের কাছে ব্যাকলিক রোড পার হচ্ছিলেন, ওই সময় ব্যাকলিক রোডের দক্ষিণমুখী একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা মারে বলে এক বিবৃতিতে ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টি পুলিশ জানিয়েছে।

সাথে সাথে তাহমিনা আক্তারকে ফেয়ারফ্যাক্স হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখানে তার দুদিন পর তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত গাড়ির চালক দুর্ঘটনার পর পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সহায়তা করেছেন বলেও ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

প্রায় ১০ মাস পূর্বে তাহমিনা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তিনি সপরিবারে ভার্জিনিয়ায় স্বামী ও দুই কন্যার সঙ্গে বসবাস করতেন। ঘটনার দিন তাহমিনা তার কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। ৩ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।




অগ্নিঝরা মার্চের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা দক্ষিেণের শ্রদ্ধাজ্ঞিল

আশিক সরকার: অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। বাঙ্গালির জীবনে নানা কারনে মার্চ মাস আন্তনির্হিতি শক্তির উৎস। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলা হয়।

জাতির জনকের স্মরনে অগ্নিঝরা মার্চের রোববার (১ এপ্রিল) প্রথম প্রহরে ধানমন্ডির ঐকিহাসিক ৩২ নম্বরে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধর প্রতিকৃতিতে ফুলের শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিেণর সভাপতি ও সাবেক সিনিঃ সহ-সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব কামরুল হাসান রিপন অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, আমিনুল ইসলাম ( আমিন), সদস্য শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, সাবেক সহ-সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ, সাধারণ-সম্পাদক, রাজউক ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি সহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অর্ন্তগত সকল থানা ও ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ।