খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপিতে উদ্বেগ বাড়ছে

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক :দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ও তার সুচিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বিএনপিতে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালতে সাজা হওয়ার পর একবছরের বেশি সময় ধরে কারাভোগ করছেন খালেদা জিয়া। ৭৪ বছর বয়সি তিনবারের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে কারান্তরীণ রাখা হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারে। পরিত্যক্ত ঘোষিত দুইশ বছরের পুরোনো এ কারাগারের পরিবেশ নিয়ে প্রথম থেকেই অভিযোগ ছিল বিএনপির।

কারাগারে নেয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন ধরে তিনি যেসব শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন কারাগারের বদ্ধপরিবেশ, চলাফেরার সীমাবদ্ধতা ও যথাযথ চিকিৎসার অভাবে সে জটিলতাগুলোর তীব্রতা বেড়ে যায়। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও পছন্দসই হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন সময়ে মুখর হয় বিএনপি নেতারা। কিন্তু বারবার সে দাবিকে অগ্রাহ্য করেছে সরকার। তবে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে কারা কর্তৃপক্ষ এপ্রিলের ৮ তারিখে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে এনেছিল।

২০১৮ সালের জুন মাসে একবার ‘মাইল্ড স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন খালেদা জিয়া।

পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ভর্তি করে একমাস চিকিৎসাও দিয়েছিল। প্রথমবার তিনি হুইল চেয়ার ব্যবহার না করলেও দ্বিতীয়বার তাকে তা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তাকে কারাগারে ফেরত নেয়া হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একমাত্র বন্দি খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি ভুগছেন নিঃসঙ্গতায়। শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে খালেদা জিয়াকে বকশীবাজার প্যারেড গ্রাউন্ডের আদালতে আনা-নেয়ায় জটিলতা দেখা দেয়ায় কারাগারের অভ্যন্তরে বিশেষ আদালত স্থাপন করে সরকার।

সম্প্রতি শারীরিক অসুস্থতার কারণে কারাকর্তৃপক্ষ তাকে কারা অভ্যন্তরে স্থাপিত বিশেষ আদালতেও হাজির করেনি। রোববার বিশেষ আদালতে আনা হলে খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন- ‘আমার শরীর ভালো যাচ্ছে না। শরীর খুব খারাপ। চিকিৎসকরা দরকারি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না।’ এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের পর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায়েও সাজা হয়েছে তার। গ্যাটকো মামলার শুনানি চলছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের। অন্য কয়েকটি মামলায়ও তাকে দেখানো হয়েছে শ্যোন অ্যারেস্ট। তার ওপর গুঞ্জন রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্থানান্তর করা হতে পারে কেরানীগঞ্জ কারাগারে। তার আইনি লড়াই এগোচ্ছে জামিন, জামিন বাতিল এবং শ্যোন অ্যারেস্টের মধ্যদিয়ে।

আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সহসা তার মুক্তির সম্ভাবনা দেখছে না বিএনপি। দলটির দায়িত্বশীল নেতা ও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এমন মন্তব্য করছেন বেশ কিছুদিন ধরে।

এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ও তার চিকিৎসাহীনতায় উদ্বেগ বাড়ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নিয়েছেন বিএনপি নেতারা। আজ দুপুরে সচিবালয়ে গিয়ে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেই সঙ্গে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ৬ই মার্চ বুধবার মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া হাঁটতে পারছেন না। তার পা ফুলে গেছে। হাত অবশ। পুরনো রোগগুলো বেড়ে গেছে। চোখেও প্রচণ্ড ব্যথা। নির্যাতন সহ্য করতে গিয়ে তার আগের অসুস্থতা এখন আরো গুরুতর রূপ ধারণ করেছে। সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলোসিসের জন্য কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা, হিপ-জয়েন্টেও ব্যথার মাত্রা প্রচণ্ড। ঝুঁকিপূর্ণ শরীর। খালেদা জিয়াকে নিয়ে তারা প্রতি মুহূর্তে শঙ্কায় থাকেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রিউম্যাটিকআর্থ্রাইটিসের কারণে খালেদা জিয়ার হাত-পা ফুলে যায়। ফ্রোজেন শোল্ডার, পিঠে ব্যথা, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। খালেদা জিয়ার দুই হাঁটুই প্রতিস্থাপনকৃত- যার একটি আমেরিকায় ও একটি সৌদি আরবের হাসপাতালে প্রতিস্থাপন করা হয়। দুই বছর আগে লন্ডনে তার চোখের অপারেশন হয়। হাঁটতে অক্ষম হয়ে পড়ায় কয়েকবার তিনি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া পরিবারের স্বজনদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন নি।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, চেয়ারপারসনের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সত্যিই অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। একদিকে তাকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, অন্যদিকে তাকে রাখা হয়েছে একটি পুরোনো ও পরিত্যক্ত ভবনে। তার চিকিৎসা নিয়ে সরকার চরমভাবে অবহেলা করেছে। মোশাররফ বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং একজন ৭৪ বছর বয়স্ক নারী হিসেবে তিনি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার সেটা দিচ্ছে না। আমরা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য বারবার আবেদন-নিবেদন করলেও অগ্রাহ্য করেছে সরকার। এমনকি তার চিকিৎসার ব্যয়ভার দল বহন করবে জানানো হলেও সরকার রাজি হয়নি। এখন কারাগারে দিনদিন তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় কেবল আমরাই নই, দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থক ও দেশের সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, চেয়ারপারসনের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।

কারণ বেগম খালেদা জিয়া তার জীবনে এই প্রথমবারের মতো তার কষ্টের কথা স্বীকার করেছেন। যা মিডিয়ায় এসেছে। তিনি স্বভাবগতভাবেই অত্যন্ত কষ্টসহিঞ্চু। তিনি যখন তার শারীরিক কষ্টের কথা স্বীকার করেছেন তখন তিনি যে শারীরিকভাবে প্রচণ্ড অসুস্থ তা আমরা ধারণা করতে পারি। আলাল বলেন, আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। এই কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আবার বলতে চাই- সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানবতা। সরকার যেন মানবাধিকার ও একজন সিনিয়র সিটিজেনের অধিকারগুলোর প্রতি সম্মান দেখান। আর সুচিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে সরকারকে কোনোদিন ক্ষমা করবে না দেশের জনগণ। এর আগে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্রিফিং করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, দেশবাসীর প্রাণপ্রিয় নেত্রী নিজের মুখে এই প্রথম এমন ভয়াবহ অসুস্থতার কথা বললেন। তার স্বাস্থ্যের চরম ক্রমঅবনতিতে দেশবাসীর মতো আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।

আমরা প্রতিদিন নানাভাবে আহ্বান এবং দাবি করে আসছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। তাকে জামিনে মুক্তি দিন। রিজভী বলেন, আমরা আগেই বলেছি- বিএসএমএমইউ উন্নত চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট নয়। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে চাননি। দলের পক্ষ থেকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলবো- ৩ বার সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শুধু প্রতিহিংসাবশত: এমন নিষ্ঠুর বর্বরতম আচরণের অবসান ঘটান। তার জামিনে আর বাধা দেবেন না। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, সুচিকিৎসার সুযোগ দিন। বিএনপি চেয়ারপারসন বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে চাননি, বাংলাদেশে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা নিতে চেয়েছেন। সে সুযোগটুকুও তাকে দেয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষ জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করে প্রচণ্ড অসুস্থ খালেদা জিয়াকে সুস্থ বলে ফেরত পাঠিয়েছে অন্ধকার কারাগারে।




জ্ঞানের আলো বিলিয়ে যারা জীবনের অর্থ খুঁজেপান, পলান সরকার ছিলেন তেমনি একজন

হানিফ সংকেত

আরো একজন ভালো মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের পলান সরকার। মানুষকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করার লক্ষ্যে মাইলের পর মাইল হেঁটে তিনি নিজের টাকায় কেনা বই বিলি করতেন সবাইকে। ছড়িয়ে দিতেন জ্ঞানের আলো। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা প্রচারবিমুখ সৎ সাহসী, জনকল্যাণকামী, নিভৃতচারী আলোকিত মানুষদের তুলে ধরার ধারাবাহিকতায় আমরা ২০০৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম ইত্যাদিতে তুলে ধরেছিলাম আলোকিত এই মানুষটিকে।

তখন তার বয়স ছিলো ৮৬ বছর। ইত্যাদি থেকে তার পাঠাগারের জন্য দুই শেলফ বইও দেয়া হয়েছিলো। তাতে তার বই পড়ার আন্দোলন আরো বিস্তৃত হয়েছিলো। ইত্যাদিতে প্রচারের পর তাকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে প্রচ্ছদ প্রতিবেদনসহ অনেক প্রতিবেদন। নির্মিত হয়েছে বিজ্ঞাপন, নাটক। পেয়েছেন একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সম্মাননা। অভিহিত হয়েছেন ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ অভিধায়। ১ মার্চ ৯৮ বছর বয়সে এই মহান মানুষটি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

জ্ঞানের আলো বিলিয়ে যারা জীবনের অর্থ খুঁজে পান, পলান সরকার ছিলেন তেমনি একজন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। ফেসবুক থেকে




গরম খিচুরি আর চা খেয়ে ভোট কেন্দ্রে আসুন, ভোট দিন : আতিকুল ইসলাম

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে এসে নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনেনীত মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ৭ মিনিটে নবাব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর এ আহ্বান জানান তিনি।

আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আজকে বৃষ্টির দিন, ছুটির দিন, আজকে ভোটেরও দিন। আপনারা গরম খিচুরি আর চা খেয়ে ভোট কেন্দ্রে আসুন, ভোট দিন। ভোট দেওয়া আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোট দিয়ে আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুন।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী থাকলে ভালো হত। কিন্তু যখন নেই তাহলে আর কি। আমি নির্বাচিত হলে সবাইকে নিয়ে একটি সুস্থ, সচল, আধুনিক ঢাকা গড়ব।

বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে বলে শঙ্কা করেন তিনি। এসময় তার পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা সঙ্গে ছিল।

এর আগে সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। কোনো ধরনের বিরতি ছাড়াই বিকাল ৪টা পর্যন্ত উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডে মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে।

এবারের নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে, জাতীয় পার্টির শাফিন আহমেদ লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে, এনপিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান আম প্রতীক নিয়ে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রহিম টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে এবং পিডিপির শাহীন খান বাঘ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আজ বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা সাধারণ ছুটির বাইরে থাকবে।

নির্বাচন উপলক্ষে রাজধানীতে বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে ২৪ ঘণ্টা যন্ত্রচালিত যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে ১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন মহাসড়ক ছাড়াও আন্তঃজেলা ও মহানগর থেকে বের হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক, প্রধান প্রধান সংযোগ সড়কে নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক বিভাগের গাড়ি এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে সাধারণ নির্বাচন ও উত্তর সিটির ২টি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়াও, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি উভয় সিটিতে ৬টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে, মেয়র ও কাউন্সিলর উভয় পদের মেয়াদ হবে এক বছরের চেয়ে কিছু বেশি সময়।

ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিল পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩০৯ জন। দুই সিটিতে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিল পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭০ জন। এর মধ্যে ডিএনসিসির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১৬০ জন, সমসংখ্যাক ওয়ার্ডে ডিএসসিসিতে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৯ জন। অন্যদিকে ডিএনসিসি‘র ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ২৫ জন।

উত্তর সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি সম্প্রসারিত ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ৬ ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র ২৪৩টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৪৭২টি। মোট ভোটার ৫ লাখ ৯০ হাজার ৭০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৫ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৯২ হাজার ৪২০ জন।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাধারণ ১৮টি ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ৬টি ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র ২৩৫টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ২৫২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৯৭ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ২৩৮ জন।

নির্বাচনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বুধবার সকাল থেকেই দুই সিটিতে টহল শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি কোস্ট গার্ড ও র‌্যাব দায়িত্ব পালন করবে। ডিএনসিসিতে ২৫ প্লাটুন বিজিবি এবং ডিএসসিসিতে ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও দুই সিটির মধ্যে ডিএনিসিসিতে চার প্লাটুন এবং ডিএসসিসিতে তিন প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দুই সিটির প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ৭ জন অস্ত্রধারী পুলিশ ও আনসার এবং ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে লাঠি হাতে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই বছর পর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক লন্ডনে মারা যান। এতে আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। অন্যদিকে দুই সিটিতে ২০১৭ সালে ১৮টি করে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্ধারিত সময়ের এক বছর পর গত ২২ জানুয়ারি দুই সিটির তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ ডিএনসিসি মেয়র ও দুই সিটির ১৮টি করে ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।




নিয়ন্ত্রণ রেখা পার হয়ে পাকিস্তানে ভারতের বিমান হামলা

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিমান হামলা করেছে ভারত। পুলওয়ামা হামলার পর এ হামলা চালালো তারা। ভারতের দাবি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এ হামলায় ১২ টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধ বিমান অংশ নেয়।

সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতের বাংলা গণমাধ্যম আনন্দ বাজার জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান পাক জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করে। এই অভিযানের কার্যত কথা স্বীকার করেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধানও। তিনি বলেন, “পাক আকাশে ঢোকে ভারতীয় যুদ্ধবিমান।”

সূত্রের খবর, সোমবার বালাকোট সেক্টর থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। বালাকোট, চাকোটি এবং মুজফ্‌রাবাদে জইশ-ই-মহম্মদের তিনটি লঞ্চপ্যাড গুঁড়িয়ে দেয় ভারত।




ভারত-পাকিস্তান ‘শত্রুতার’ রাজনীতি!

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক :  চলতি মাসে বেশ বেকায়দায় পড়ে গেছে পাকিস্তান। প্রতিবেশীরা দেশটির দিকে ‘সীমান্ত সন্ত্রাসে’র অভিযোগ তুলেছে। এর মধ্যে আছে ‘চিরশত্রু’ ভারতও। ইরান ও আফগানিস্তান এরই মধ্যে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আর ভারত দিয়েছে শাস্তি দেওয়ার হুমকি! কিন্তু আদতেই শেষ পর্যন্ত কী হবে?

১৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের দিকে প্রথম আঙুল তোলে ইরান। সেদিন এক গাড়িবোমা হামলায় ইরানের এলিট নিরাপত্তা বাহিনীর ২৭ জন সদস্য নিহত হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ বলছে, সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে চালানো ওই আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানের মদদ রয়েছে। ওই অঞ্চলে অনেক দিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আনাগোনা আছে। ইরানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দাবি, এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দিচ্ছে পাকিস্তান। সীমান্তের ওপারেই এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং সীমান্ত অতিক্রম করে ইরানে ঢুকে হামলা চালানো হয়। ইরানের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ওই সব বিচ্ছিন্নতাবাদীকে নানা সহায়তা দিচ্ছে। যদি পাকিস্তান এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।

এর পরদিনই বারুদের স্তূপে আগুন লাগে! ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী হামলায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর ৪০ সদস্য নিহত হন। এতে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর সম্পর্কের আগুনে নতুন করে ঘি পড়ে। শুরু হয়ে যায় ভারত-পাকিস্তানের কথার লড়াই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের দিকে অভিযোগ তুলে বলে দিয়েছেন, এই হামলার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। উরি ঘটনায় সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর ঘটনা ঘটেছিল নরেন্দ্র মোদির আমলেই। এবারের ঘটনায় মোদি সরকার নতুন কি পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে এরই মধ্যে চাপানউতোর চলছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, যে পদ্ধতিতেই জবাব দেওয়া হোক না কেন, তা যে গতবারের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের তুলনায় কঠোর হবে—তেমনই বলা হচ্ছে।

এক রামে রক্ষা নেই, আবার সুগ্রীব দোসর! পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার জন্য ইরান ও ভারতই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু আফগানিস্তান তাতে বাড়তি ‘মসলা’ জুগিয়েছে। ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখে জাতিসংঘে এক অভিযোগ দাখিল করেছে আফগান সরকার। তাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। বর্তমানে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে বৈঠক করছে পাকিস্তান, উদ্দেশ্য শান্তি আনা। আর এই কর্মসূচিতে পাকিস্তানের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগান সরকারের অভিযোগ, একটি স্বাধীন দেশের সরকারকে পাশ কাটিয়ে সেই দেশেরই সন্ত্রাসীদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালানো সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের শামিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবার এ ব্যাপারে পাকিস্তানের পাশেই আছেন।

চিত্রটি এমন দাঁড়িয়েছে যে, একের পর এক অভিযোগের নিচে প্রায় চাপা পড়তে চলেছে পাকিস্তান। ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট জানাচ্ছে, এরই মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ঠেকানোর প্রশ্নে ইরানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ভারত। আমেরিকাও পরোক্ষভাবে নিয়েছে ভারতের পক্ষ। অন্যদিকে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ভরসা হলো চীন, সঙ্গে আছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে শেষের দুটি দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে নিমরাজি!

কথার লড়াইও থামছে না। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার এক বক্তৃতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, ‘ইমরান খান আমাকে বলেছিলেন, তিনি একজন পাঠান—সত্যি কথা বলেন এবং সত্যের পথে থাকেন। এবার তা প্রমাণ করার পালা।’ ওদিকে শুরু থেকেই ভারতের দোষারোপের নীতির বিরোধিতা করছেন ইমরান খান। তিনি বলেছেন, হামলার ঘটনা–সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ যদি ভারত দেয়, তবে অবশ্যই পাকিস্তান তাতে সহায়তা করবে।

জম্মু-কাশ্মীরে কথিত সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ভারত। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও যুদ্ধংদেহী মনোভাবে চলে গেছে। ডন-এর খবরে প্রকাশ, গত শুক্রবার কাশ্মীরসংলগ্ন সীমান্ত অঞ্চল পরিদর্শন শেষে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল কামার বাজওয়া বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আঘাত এলে এর সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে তাঁর বাহিনী।
পাকিস্তানকে একঘরে করতে পারবে ভারত?
পুলওয়ামায় হামলার পর ভারতে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে পাকিস্তানবিরোধিতা। এই দুই দেশের বৈরিতা চলছে জন্মলগ্ন থেকেই। এবার তা তীব্রতর হয়েছে। গণহারে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলিউডে কাজ করা পাকিস্তানের শিল্পীদের। কেউই এখন আর সহাবস্থানের কথা বলছেন না, এবার শাস্তি চান তাঁরা। কিন্তু বলা যতটা সহজ, আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির মারপ্যাঁচের কারণে তা করা ঢের কঠিন।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে রাষ্ট্রীয় মদদ দেওয়ার অভিযোগ বেশ পুরোনো। এই অভিযোগ সবচেয়ে বেশি তুলেছে পাকিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোই; বিশেষ করে জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তইবা ও তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তানের দহরম-মহরমের কথা সর্বজনবিদিত। জইশ-ই-মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান। উল্টো ঠেকানো হচ্ছে মাসুদ আজহারকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনে জাতিসংঘে এ নিয়ে আওয়াজ উঠলেই পাকিস্তানের হয়ে চীন তাতে ভেটো দিয়ে দেয়। এই মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে আছে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা থেকে শুরু করে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে ভারতের। ইকোনমিস্ট বলছে, অর্থনৈতিকভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে ভারত। এরই মধ্যে আমদানির ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। তবে এতে পাকিস্তানের ক্ষতি হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। কারণ পাক-ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিধি বেশ ছোট, বছরে পাকিস্তান থেকে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আনে ভারত।

বিবিসি বলছে, পাকিস্তানের তুলনায় ভারতের অর্থনীতি প্রায় সাড়ে আট গুণ বড়। সেদিক থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারতের প্রভাব পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স নামে একটি আন্তর্জাতিক আন্তসরকারব্যবস্থা আছে, যা মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো বিষয়গুলো প্রতিরোধে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা চালাবে ভারত। এতে করে দেশটির মুদ্রাপ্রবাহ, স্টক মার্কেট ও ব্যাংকিং খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রেও ভারতের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে চীনের ভেটো।

কূটনৈতিক দিক থেকে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে অবশ্য হোঁচট খেয়েছে ভারত। সম্প্রতি প্রথমে পাকিস্তান ও পরে ভারত সফর করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারত চেষ্টা করেছিল সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গে যেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন বিন সালমান। কিন্তু সৌদি যুবরাজ টুঁ শব্দ করেননি। দুই দেশকে হাতে রাখতে মধ্যপন্থা নিয়েছেন তিনি, উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছেন।

পুলওয়ামায় হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ১৯ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের কাবুলে পাকিস্তানের দূত জানিয়ে দেন, পাকিস্তান যদি চাপে পড়ে তাহলে কেঁচে যেতে পারে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা। আর এ কথাতেই চুপ করে গেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এখন আর এ নিয়ে বেশি কথা ওঠাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ভারতকে সমর্থনের চেয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতেই তাদের বেশি মনোযোগ।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পুরোদমে ‘পানিযুদ্ধ’ শুরু করতে পারে ভারত। দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী নিতীন গড়করি সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, সিন্ধু উপত্যকা দিয়ে বয়ে চলা নদীর পানির অভিমুখ পরিবর্তন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। সিন্ধু নদের পানির ওপর নির্ভরশীল পাকিস্তানের কোটি কোটি মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ জন্য ১৯৬০ সালে করা পানিচুক্তি থেকেও সরে আসতে হবে ভারতকে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানকে শায়েস্তা করতে এখন পর্যন্ত এটিই ভারতের দেওয়া সবচেয়ে বড় হুমকি।

এসবের পর বাকি থাকল শুধু সামরিক উপায়। বিবিসি বলছে, দুটি দেশের হাতেই পরমাণু অস্ত্র থাকায়, এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সত্যটি পাক-ভারতের সরকারের নীতিনির্ধারকেরাও জানেন। তাই সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি বা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালালেও, কোনো দেশই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের দিকে এগোবে না; বরং পরমাণু অস্ত্র হাতে নিয়ে হম্বিতম্বি করার দিকেই দুই পক্ষের বেশি আগ্রহ। সাম্প্রতিক সময়ে মনুষ্যবিহীন উড়োজাহাজ ও বিভিন্ন প্রযুক্তি কেনার দিকে আগ্রহী হয়েছে ভারত। সীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলায় এসব ব্যবহার করতে পারে দেশটি।

এদিকে ভারতে যুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে বাজছে লোকসভা নির্বাচনের দামামাও। বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনী হাওয়া নিজের দিকে নিতে চাইলে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। আর সে জন্য সময় আছে মোটে দুই মাস। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে কখনোই ভালো ফলাফল বয়ে আনে না। এখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা যে মাত্রায় পৌঁছেছে, তাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত যেকোনো পদক্ষেপ অসম্ভব কিছু নয়। তবে অবশ্যই বড় বাধা হয়ে থাকবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।




সেনা সমর্থন পেতে মরিয়া ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : সেনা-সমর্থন নিশ্চিতের মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জুয়ান গুয়াইদো। সশস্ত্র বিভাগে কর্মরত মুষ্টিমেয় কিছু সদস্য ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর পক্ষ ত্যাগ করলেও জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী এখনও তাকে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে। তবে মাদুরো সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের আগে পথ না ছাড়ার অঙ্গীকার করেছেন গুয়াইদো। যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ত্রাণ প্রবেশের প্রশ্নে সংঘাত জোরালো হওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি সেনাবাহিনীকে ইতিহাসের সঠিক পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

নির্বাচনি কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকট ভেনেজুয়েলার জনগণকে তাড়িত করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভের সুযোগে ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুয়াইদো। সে সময়ই তিনি ঘোষণা দেন, ভেনেজুয়েলাবাসীর সহায়তায় তিনি আন্তর্জাতিক ‘ত্রাণ সহযোগীদের’ নেটওয়ার্ক বানাবেন। গুয়াইদোর দাবি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থন রয়েছে তার প্রতি। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘এটা কেবল শুরু। তারা যদি ভেবে থাকে যে আমরা রাস্তা ছেড়ে দেব, তাহলে তারা ভুল করবে। স্বাধীনতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পথে থাকব।’

‘গুয়াইদোর অনুরোধে’ ভেনেজুয়েলাবাসীর জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে সরকার সেই ত্রাণ ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ করতে দেয়নি। গুয়াইদোর বিরোধী শিবির ব্রাজিল ও কলম্বিয়া সীমান্তে আটকে থাকা সেই ত্রাণ ভেনেজুয়েলায় নিতে মরিয়া। তবে মাদুরো সরকার মনে করছে, ওই ত্রাণ প্রবেশের নামে সামরিক হস্তক্ষেপের পায়তারা করছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার বিরোধীরা ওই ত্রাণকে ভেনেজুয়েলার ভেতরে নেওয়ার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী তাতে বাধা দেয়। বিরোধীদের সঙ্গে শুরু হয় সংঘাত। ত্রাণের প্রবেশ নিশ্চিত করতে গিয়ে গুলি খেয়ে মরতে হয় ক্ষুধার্ত দুই আদিবাসীকে। এমন প্রেক্ষাপটে গুয়াইদো বলেছেন, ‘চোখ মেলে তাকালেই দেখা যাবে, কীভাবে মানবিক সহায়তা ধ্বংসের মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্য দিয়ে জেনেভা সনদ লঙ্ঘন করা হচ্ছে।’

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, আগুনে পুড়ে গেছে ত্রাণবোঝাই তিনটি ট্রাক। এমন প্রেক্ষাপটে গুয়াইদো প্রশ্ন তুলেছেন, সেনাবাহিনী কেন সেই শাসনের দায় নেবে, যারা ক্ষুধার্ত মানুষের সামনে মানবিক সহায়তা ধ্বংস করে। যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ত্রাণসামগ্রীর কাছে দাঁড়িয়ে তিনি দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘তোমাদের কত জনের মা অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে? কত জনের সন্তান না খেয়ে স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে’। জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ‘ইতিহাসের সঠিক পথে অবস্থান নেওয়া’র আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নির্বাচনি কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকট ভেনেজুয়েলার জনগণকে তাড়িত করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভের সুযোগে ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুয়াইদো। সে সময়ই তিনি ঘোষণা দেন, ভেনেজুয়েলাবাসীর সহায়তায় তিনি আন্তর্জাতিক ‘ত্রাণ সহযোগীদের’ নেটওয়ার্ক বানাবেন। ‘গুয়াইদোর অনুরোধে’ভেনেজুয়েলাবাসীর জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে সরকার সেই ত্রাণ ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ব্রাজিল ও কলম্বিয়া সীমান্তে সেই ত্রাণ আটকে আছে। আটকে থাকা মার্কিন ত্রাণ ভেনেজুয়েলায় প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার প্রচেষ্টাকে কারণ দেখিয়ে শনিবার কলম্বিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় ভেনেজুয়েলা।




নোয়াখালীতে ১৩ লাশ দাফন, কান্না থামছে না

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত লোকজনের স্বজনদের কান্না থামছে না নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে এবং আজ শুক্রবার দুপুরে তাঁদের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনদের কান্নার রোল পড়ে যায়। তাঁদের বুক ফাটা আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এখন পর্যন্ত দাফন করা হয়েছে তিন উপজেলায় নিহত ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনের লাশ। বাকি একজনের লাশ এখনো শনাক্ত করা যায়নি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৩ জন হলেন : সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘোষকামতা গ্রামের সাহেব আলীর দুই ছেলে মাসুদ রানা (৩৬) ও মাহাবুবুর রহমান (২৮), পশ্চিম নাটেশ্বর গ্রামের আলী হোসেন (৬৫), নাটেশ্বর গ্রামের সৈয়দ আহমদের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩২), মমিন উল্যার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩২), মৃত গাউছ আলমের ছেলে নাছির উদ্দিন (৩২), মধ্যম নাটেশ্বর গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে ছিদ্দিক উল্যাহ (৩২), পার্শ্ববর্তী বারগাঁও ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০), কৃষ্ণপুর গ্রামের আবদুর রহিমের স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৪০), অম্বরনগর ইউনিয়নের ওয়াছেকপুর গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে আবদুর রহিম (৫৫) এবং বেগমগঞ্জ উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুজাহিদপুর গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে কামাল হোসেন (৩৫), আলাইয়াপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অভিরামপুর গ্রামের মাসুদুর রহমানের ছেলে মোশারেফ হোসেন (৩০) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী গ্রামের জসিম উদ্দিন (২৩)।

এ ছাড়া সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর (৩৮) লাশ এখনো শনাক্ত করতে পারেননি স্বজনেরা। তাই আজ শুক্রবার পরিবারের সদস্যরা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছেন বলে জানান আনোয়ারের চাচা মো. মোস্তফা।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটায় দাফন করা হয়েছে পশ্চিম নাটেশ্বর গ্রামের আলী হোসেনের মৃতদেহ। আলী হোসেনের ছেলে মো. মাসুদ বলেন, রাত দুইটার দিকে মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। পরে রাত তিনটার দিকে তাঁরা তাঁকে দাফন করেন। আগুনে তাঁর বাবার শরীরের প্রায় ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। আর শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর নাগাদ এ উপজেলায় ৯ জনের লাশ এবং বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৩ জনের লাশ দাফন করা হয়।

চোখের সামনে দুই ছেলে মাসুদ রানা ও মাহবুবুর রহমান রাজুর লাশ দেখতে হবে—এ কথা কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বরের সাহাব উল্যাহ। আত্মীয়স্বজন যাঁরাই আসছেন বাড়িতে, তাঁদের জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠছিলেন তিনি। নিহত দুই সহোদরের ছোট ভাই মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সময় আগুন এড়াতে তাঁর দুই ভাই দোকানের ভেতর ঢুকে শাটার আটকে দিয়েছিলেন। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় তাঁরা আর বের হতে পারেননি।




অবহেলা আছে কি না, খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক :

পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে সরকারি সংস্থার কোনো অবহেলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার উৎস ও কারণ অনুসন্ধানে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি এমন কথা জানিয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিটি এ কথা জানায়।

অগ্নিকাণ্ডের উৎস খুঁজে বের করা ও ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য কর্মপন্থা নির্ধারণ করে সরকারকে সুপারিশ দেওয়ার জন্য এই পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান, সরকারি সংস্থা যাদের দায়িত্ব এসব দেখে রাখা এ ঘটনায় তাদের কোনো গাফিলতি আছে কি না? এবং তা আপনারা খতিয়ে দেখবেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনার এই প্রশ্ন আমার টার্মস অব রেফারেন্সে আছে। আমরা পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি যখন কাজ করব তখন বিভিন্ন জনের কাছে যাব, ঘটনার বিষয়ে কী কী বিষয় কাজ করেছে, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। এ জন্যেই আমাদের এখানে আসা।’

অতীতে এ রকম অনেক ঘটনা ঘটেছে, যার কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখই দেখেনি? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘আলোর মুখ অবশ্যই দেখবে, এ জন্যই আমরা এখানে এসেছি।’

এ সময় কমিটির অন্য সদস্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার ইবরাহীম খানকে এ ঘটনায় করা মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারিনি। এই মামলার আলোকেই তদন্ত করে আমরা আদালতে প্রতিবেদন জমা দেব। তদন্ত রিপোর্ট আপনাদেরও জানানো হবে।’

আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই সেখানে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছেন। পুড়ে যাওয়া জিনিস সরিয়ে ফেলছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা সুরক্ষা সচিবের কাছে জানতে চান, এ ঘটনায় অধিকাংশ মানুষ মারা গেছেন রাস্তায়। সে ক্ষেত্রে এগুলো সরিয়ে ফেলায় আলামত নষ্ট হচ্ছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘জিনিস সরিয়ে ফেললেও খুব একটা প্রভাব ফেলবে বলে মনে করি না। আমরা উৎস এবং এর জন্য কে কে দায়ী, সেটা নির্ণয়ের চেষ্টা করব। এবং এটা করতে পারাটাই যথেষ্ট বলে মনে করি।’

কমিটির আরও তিন সদস্যের একজন হলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান। এ ছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পর্যায়ের ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি আছেন।




তাইওয়ানে সমুদ্রের নিচে ‘নরকের মাছ’!

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : সম্প্রতি তাইওয়ানে সমুদ্রের নিচে এই অদ্ভুদ ও ভয়ংকর প্রাণীটির দেখা মেলে। কিছুটা সাপের মতো দেখতে হলেও এটা কিন্তু সাপ নয়। প্রথমে দেখাতেই প্রাণীটিকে কোনো নতুন প্রজাতির সাপ মনে হতে পারে। বিজ্ঞানীরাও তাই ভেবেছিলেন। পরে অবশ্য ভুল ভাঙে।

প্রাণীটি বিরল প্রজাতির একটি ভাইপার শার্ক। এই হাঙর এত বিরল যে শেষ বার দেখা মিলেছিল ১৯৮৬ সালে জাপানের শিকোকু দ্বীপে। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘ট্রাইগোনোগন্যাথাস কাবেয়াই’। ভয়ঙ্কর চেহারার জন্য এই হাঙরকে ‘এলিয়েন ফিশ’ এবং ‘ফিশ ফ্রম হেল’ বা নরকের মাছ বলা হয়।

সমুদ্রের এক থেকে দেড় হাজার ফুট নিচে থাকে এরা। বড় বড় চোখ। সূঁচালো আর বাঁকানো দাঁত। শিকার ধরার সময় দাঁতগুলো মুখগহ্বর থেকে অনেকটা বাইরে বেরিয়ে আসে। নিজের শরীরের আকৃতির তুলনায় বড় মাছ শিকার করতে পারে।




ডাকসুর ভিপি-জিএস পদে লড়বেন শোভন-রাব্বানী

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি পদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন আর জিএস পদে সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মনোনয়ন চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রলীগের এই দুই শীর্ষনেতার মনোনয়ন ঘোষণা করবেন।

ডাকসু নির্বাচনের জন্য ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মতামত ও জরিপের শোভন-রাব্বানীর নাম উঠে আসে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডাকসুর শীর্ষ দুই পদে মনোনয়নের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে েমনোনয়ন ফর্ম বিতরণ । আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধরণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তাদের গ্রামের বাড়ি যথাক্রমে কুড়িগ্রাম ও মাদারীপুর।