
বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অচলাবস্থা কাটাতে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে আজ ভোটাভুটি হবে। বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যটরা দুটি প্রস্তাব দেবে সিনেটে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এ খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়, দুটি প্রস্তাবের ওপরই ভোটাভুটি হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপি বলছে, গত মঙ্গলবার সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাককনেলের সঙ্গে শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমারের এ সমঝোতা হয়। তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুই দল থেকে আলাদা করে দুটি বিল উত্থাপিত ও ভোটাভুটি হবে। ১০০ সদস্যবিশিষ্ট সিনেটে বিল পাস করাতে হলে প্রত্যেকটিকে ৬০টি করে ভোট পেতে হবে।
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে বরাদ্দ অনুমোদনের প্রশ্নে ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের সমঝোতা না হওয়ায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারে চলছে আংশিক শাটডাউন। দেশটির ৮ লাখ সরকারি কর্মীকে ঘরে থাকতে কিংবা বেতন ছাড়া কাজ করতে বলা হয়েছে। তারপরও দেয়াল নির্মাণের প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ট্রাম্প। এ অবস্থায় পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সিনেটে দুটি বিল উত্থাপন করতে সম্মত হয়েছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিপাবলিকানদের উত্থাপিত বিলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সব শাখায় অর্থ বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হবে। সীমান্ত দেয়াল নির্মাণ ও অভিবাসন নীতি সংক্রান্ত ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দের কথাও বলা হবে ওই প্রস্তাবে। আর ডেমোক্র্যাটদের বিলে সরকারকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অস্থায়ী বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হবে। সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভিবাসন নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্কের সুযোগ তৈরি করতে এ অস্থায়ী বরাদ্দ দেয়া হবে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়া’- এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিল দুটি নিয়ে ভোটাভুটির ব্যাপারে দুই দলের সমঝোতা হলেও এর একটিরও পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ডেমোক্র্যাটদের যারা সীমান্ত দেয়াল নির্মাণের বিরুদ্ধে, তারা ট্রাম্পের প্রস্তাব আটকে দেয়ার চেষ্টা করবে। আর ডেমোক্র্যাটদেরও প্রস্তাব পাস করাতে হলে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট পেতে হবে, ১৩ রিপাবলিকান সদস্যের কাছ থেকে ভোট পাওয়া ছাড়া তা সম্ভব হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএফপি আভাস দিয়েছে, স্বল্পমেয়াদি অর্থ বিলে রিপাবলিকানরা স্বাক্ষর করবে না। আবার তারা স্বাক্ষর করলেও প্রেসিডেন্ট তাতে স্বাক্ষর করবেন না।
মার্কিন অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। তার আগেই বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমঝোতার অভাবে কখনো কখনো মার্কিন কংগ্রেস তা পাস করাতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনার তহবিল জোগান দেয়া হয়। অস্থায়ী এই বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই কক্ষের অনুমোদনসহ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিন চতুর্থাংশ কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ বরাদ্দ করা আছে। বাকি এক চতুর্থাংশের বাজেট ফুরিয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থা ঠেকাতে গত ২১ ডিসেম্বর নতুন অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দ ছিল অপরিহার্য। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ প্রশ্নে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সৃষ্টি হয় ‘অচলাবস্থা’। বরাদ্দ কম পড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১৫টি কেন্দ্রীয় দফতরের মধ্যে ৯টিতে তখন থেকে আংশিক শাটডাউন চলছে।