Home ক্যাম্পাস খবর এইউবি অপরাধীদের অভয়ারণ্য, চিহ্নিত সন্ত্রাসী-নারী খেকোদের সাথে ভিসির সখ্যতার ছবি ভাইরাল!

এইউবি অপরাধীদের অভয়ারণ্য, চিহ্নিত সন্ত্রাসী-নারী খেকোদের সাথে ভিসির সখ্যতার ছবি ভাইরাল!

116
0
SHARE

নিজস্ব প্রতিবেদক : এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এইউবি) এখন চিহ্নিত অপরাধী-সন্ত্রাসীদের অভ্যয়াণ্যে পরিণত হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে একসময় বোমাসহ গ্রেফতার বোমাসন্ত্রাসী জাকির, বিগত দিনে গাড়ী পোড়ানো একাধিক অগ্নিসংস্ত্রাস মামলার আসামী অগ্নি সন্ত্রাসী ইয়াসীন এবং শত নারীর ইজ্জত লুন্ঠনকারী সালাম-কাদেরসহ নানা অপরাধীদের বিভিন্ন ছদ্মাবরণে জমায়েত করছেন বর্তমান এইউবি প্রশাসন। খোদ ভিসি শাজাহান খান ও ট্রেজারার নূরুল ইসলাম এবং রেজিস্ট্রার একেএম এনামুল হকের নেতৃত্বে মদত দিয়ে এসব সন্ত্রাসীদের এইউবির আশুলিয়ার মূল ক্যাম্পাসে একত্রিত করা হচ্ছে। রংপুর কার মাইকেল কলেজের সাবেক শিবির ক্যাডার সন্ত্রাসী ও সাবেক ভিসির পিএস এখনো ভিসি শাজাহানের পিএস হিসেবে স্বপদে বহাল তবিয়তে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাবেক ছাত্রসংঘের সদস্য ভিসি শাজাহান খানের মদদে নতুন করে জঙ্গিরা চাঙ্গা হচ্ছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগের ছদ্মাবরণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জঙ্গিদের একত্রিত করা হচ্ছে। এসব নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে জানান, ১৩ অক্টোবর শনিবার এইউবির আশুলিয়া ক্যাম্পাসে ছিল সেমিস্টার ওরিয়েন্টেশন প্রোগাম। সেখানে অনেক চিহ্নিত অপরাধীদের একত্রিত করা হয়। বিশেষ করে দুই চিহ্নিত অপরাধীকে সঙ্গে নিয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর শাজাহান খানের তোলা ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। রীতিমত এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে টল চলছে। এ সব চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের সাথে এক সোফায় বসে ছবি তোলা সম্পর্কে জানতে বারবার চেষ্টা করেও ভাইস-চ্যান্সেলর শাজাহান খানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশেষ করে দুই চিহ্নিত অপরাধীর মধ্যে একজন হলো- নারী খেকো বলে পরিচিত আব্দুস সালাম। ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বিসনেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান থাকাকালে সালাম এবং তারই বন্ধু একই বিভাগের আরেক লম্পট শিক্ষক আব্দুল কাদের ধারাবাহিকভাবে বহু নারীর ইজ্জত লুন্ঠন তথা যৌন হয়রানি করে আসছিল। ফলে ওই লম্পট দুই শিক্ষককে একই বিভাগের এক ছাত্রী কর্তৃক “জুতা পেটার” একটি ভিডিও এরই মধ্যে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তৎকালীন অবৈধ ভুয়া ভিসি সাদেক, তার ছেলে জাফর সাদেক, অগ্নি সন্ত্রাসী এসএম ইয়াসী আলী ও তৎকালীন প্রশাসন এদেরকে নিরাপদে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে সহযোগিতা করে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কিংবা আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে- দুই লুম্পট বন্ধু শিক্ষক- আব্দুস সালাম ও কাদেরকে উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে একই বিভাগের একছাত্রী প্রকাশ্যে জুতাপেটা করছেন। ভিডিওতে ওই ছাত্রীকে বলতে শোনা যায়- “ আপনাদের জন্য আমাদের লাইফটা শেষ হয়ে গেছে। আপনাদের বউ আছে, বাচ্ছা আছে, এরপরও আপনারা একজন মেয়েকে ছাড়েন না, আপনারা লুচ্চা। আপনারা কি… আপনারা কি… । আপনাদের লুচ্চা ছাড়া আর কোনো নাম দেওয়া ঠিক না আসলে।” এসময় লুম্পট শিক্ষক কাদের ওই ছাত্রীকে লক্ষ্য করে বলেন- যা বলতে চাও বল- বারি দিলে দেও। তখন ওই ছাত্রী পায়ের জুতা খোলে হাতে তুলে নিয়ে বলেন- আপনাদেরকে জুতা দিয়েই পিটানো উচিত, তখনই লুম্পট কাদেরকে ঠুসঠাস করে জুতাপেটা করতে থাকেন এবং পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সালামকে জুতাপেতা করতে গেলে কাদের বাধা দেন। বাধা উপেক্ষা করে সালামকেও জুতাপেতা করেন এবং বলতে থাকেন আপনি লুচ্চা না, আপনাদের বউ বাচ্ছা আছে, এরপরও … । এসময় সাথে থাকা ওই ছাত্রীর বান্ধবীকে বলতে শোনা যায়- এই… বেশি হয়ে যাচ্ছে থামো।

এর আগে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ওই ছাত্রী এই লম্পট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেছিলেন। তাতে তদন্ত কমিটি এদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু সাদেক ও ইয়াসীন মিলে সিন্ডিকেট সভা বসার আগ মুহূর্তে এজেন্ডা থেকে তা বাদ দিয়েছিল। ইয়াসী আলী একজন চিহ্নিত অগ্নি-সন্ত্রাসী উত্তরা পশ্চমি থানা- নং ১৫ (তাং ০৮-১২-২০১২) ধারা ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/ ৪৩৬/৪২৭/১০৯। এইউবিকে আজ এতো বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিল এই দুর্নীতিবাজ শিবির ক্যাডার গাড়ি পোড়ানো মামলার আসামী ভূয়া ট্রাস্টি ও সিন্ডিকেট সদস্য এসএম ইয়াসীন আলী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলের সাথে কথা বলে জানা জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে যত ধরনের আর্থিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতি হয়েছে এর সব কিছুর মূলে এই শিবির ক্যাডারের কুপরামর্শ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে সে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিঞ্চনা-গঞ্জনার মূলে এই শিবির ক্যাডার ইয়াসীন আলী। সাদিক ফার্মাসিউটিকেল এবং আমার প্রোপার্টিজের নামে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই ক্যাডার। তারও বিচার হতে চলেছে। দুদক ইয়াসীন আলী ও তার ভাইকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এদিকে ভূয়া ট্রাস্টি ও সিন্ডিকেট সদস্য এসএম ইয়াসীন আলীর আচরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবাই তার উপর ক্ষুব্ধ।

এদিকে ১৩ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার এইউবির আশুলিয়া ক্যাম্পাসে ওরিয়েন্টেশন প্রোগাম, সেখানে ট্রাষ্টি বোর্ডেও চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের সবাই উপস্থিত ছিলেন। সেই প্রোগামে নারী খেঁকো আব্দুস সালামকে ডান পাশে এবং বোমাসহ গ্রেপ্তার জাকির বাম পাশে রেখে ভিআইপি মর্যাদায় ভাইস-চ্যান্সেলর শাজাহান খান সোফায় প্রথম সাড়িতে বসে থাকতে দেখা যায়। সেই ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে এবং বিভিন্ন মহলে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এই জাকির হোসেন জেল ঘুঘু হিসেবে পরিচিত, সাবেক ভিসি সাদেকের অন্যতম সহযোগী এবং যার মাধ্যমে জঙ্গিদের একত্রিত করা হচ্ছে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে। এই সরকারের আমলে জাকির বোমাসহ তিন তিনবার গ্রেপ্তার হন। বোমাসহ বারবার গ্রেপ্তার হলেও বর্তমান ভিসি ও সাবেক ভিসি সাদেকের ছত্রছায়ায় আবারো বহাল তবিয়তে জাকির তার মিশন ভিশন চালিয়ে যাচ্ছে।

আরেক আলোচিত অগ্নিসন্ত্রাসী এসএম ইয়াসিন আলী, প্রধানত এর মাধ্যমে চলছে সকল দুর্নীতি ও জঙ্গি অর্থায়নের কাজ। এই দরিদ্র ঘরের লোক হলেও রাতারাতি গাড়ি, বাড়ি, ফ্লাট ও ইন্ডাস্ট্রির মালিক বনে গেছেন। যেমন, এস এম ইয়াসিন আলী (নিজস্ব বাড়ি- বাড়ি ৩১, রোড ১০/বি, সেক্টর ১১, উত্তরা, ঢাকা ১২৩০। এনআইডি নং ৫৫০৪৯৯৮৬৭৪)। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের মনমতো, সুবিধামতো ও যোগসাজসে জঙ্গি নেতাদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক হিসেবে ও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতির পথকে সুগম ও প্রশস্তকরেছেন। ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ভিসি শাহজাহান খান এবং ট্রেজারার প্রফেসর নূরুল ইসলামও ৭১ এ ছাত্রসংঘের সদস্য ছিলেন এবং জামায়াতী ঘরনার হওয়ায় নতুন করে অপরাধ আরো চাঙ্গা হয়েছে।

এদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু আলোচিত মামলা রয়েছে। মামলা নম্বর- ফৌ: কা: মা: নং- ২৪/২০২০, মা: নং- ২৩ (৯) ১৫, ২৩/৬৭৮, ২৪/৬৭৯ (০৭-০৯-১৫, পল্লবী থানা, ঢাকা), মাঃ নং-১৪ (০৩-০৫-১৫, পল্টন থানা), উত্তরা পশ্চমি থানা- নং ১৫ (তাং ০৮-১২-২০১২) ধারা ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/ ৪৩৬/৪২৭/১০৯ ও মামলা নং ৩৪ (তাং ২৩-১২-২০১৩), মোকদ্দমা নং ৩৬৯/২০১৯, ১১৫/২০২০, জিডি নং- ৪৩৫ (২০২০, তুরাগ থানা), ২০২২, ২১২৪ (২০২০, উত্তরা পশ্চমি থানা), ২২০১, ২২১৬, ২৪০৯ (২০২০, আশুলয়িা থানা)। ১৬/৩/২০২১ স্মা-৭৫৩ ধারা ৪১৯/৪২০/৪২৪/৪০৬/৫০৬/৩৪ যা ডিিব তদন্ত করে এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা-থানায় এবং ডিবি পুলিশের কাছে এদের বিরুদ্ধে র্অধশতাধকি মামলা-অভেিযাগ রয়েেছ

এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের সাথে বর্তমান প্রশাসনের সখ্যতা এবং তাদের সাথে এক সোফায় বসে ছবি তোলা সম্পর্কে জানতে ভাইস-চ্যান্সেলর শাজাহান খানকে তার মোবাইল নম্বরে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ট্রেজারার নূরুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার একেএম এনামুল হকেরও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ভিসি শাজাহান খান ০১৭৪৭৯৫৮৫১৭, ট্রাষ্টি বোর্ড চেয়ারম্যান জাফর সাদেক ০১৮১১৪২৯৫০৫, ট্রেজারার নূরুল ইসলাম ০১৭১২৬২১০৭৯ রেজিস্ট্রার একেএম এনামুল হক ০১৮১৫৪০৯০৯০

image_pdfimage_print