Home জাতীয় জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি- রাত ১০টা থেকে বরিশালের অধিকাংশ ফিলিং স্টেশন বন্ধ

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি- রাত ১০টা থেকে বরিশালের অধিকাংশ ফিলিং স্টেশন বন্ধ

34
0
SHARE

বি.পরিক্রমাঃ জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবরে বরিশাল নগরীসহ কুয়াকাটা-বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের অধিকাংশ ফিলিং স্টেশন (পেট্রল পাম্প) বন্ধ রেখেছে মালিক কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ১০টার দিকে ফিলিং স্টেশনগুলো মালিকদের নির্দেশ অনুযায়ী কর্মচারী শ্রমিকরা বন্ধ রাখে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে বাইকারদের তোপের মুখে শর্তসাপেক্ষে কয়েকটি বন্ধ ফিলিং স্টেশন খুলে রাত ১টা পর্যন্ত পূর্বের দামে পেট্রল বিক্রি করে। এ সময়ে পেট্রল ছাড়া অকটেন ও ডিজেল বিক্রি বন্ধ ছিল। তাদের অভিযোগ, জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা না করে অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষে ব্যবসায়ীরা পেট্রল পাম্পগুলো বন্ধ রখেন। যা সৎ ব্যবসার পরিপন্থী কাজ। বন্ধ ফিলিং স্টেশনগুলো আজ শনিবার সকাল ৬টার খুলে নতুন মূল্যে  জ্বালানি তেল বিক্রি করছে বলে কর্মচারীরা জানায়।  শুক্রবার রাতে সরেজমিনে নগরীর ও কুয়াকাটা-বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গড়িয়ারপাড় থেকে বাকেরগঞ্জের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ঘরে দেখা যায়, নগরীর প্রায় ২০ কিলোমিটার মহাসড়কের পাশে থাকা ১৮টি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে ১৩টিই বন্ধ রেখেছে। মহাসড়কের চারটি ও নগরীর রামকৃঞ্চ মিশন সংলগ্ন একটি ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় বাইকার ও মাইক্রোবাস, ট্রাক, মিনি ট্রাক, থ্রিহুইলারসহ বিভিন্ন যানবাহনের দীর্ঘ্য লাইন।রাত সাড়ে ১০টায় দিকে বাইকারদের চাপের মুখে ওই পাঁচটি ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রল সরবারাহ করতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হন। তাও আবার শর্ত সাপেক্ষে এক শ থেকে সর্ব্বোচ্চ দুই শ টাকার পেট্রল সরবরাহ করে। তবে অকটেন ও ডিজেল সরবরাহ বন্ধ ছিল। আবার ফিলিং স্টেশনগুলোতে এসে তেল না পেয়ে বেশির ভাগ যানবাহন মালিক ও চালকরা ফিরে গেছেন। তারা সকালে নতুন দামে পেট্রল অকটেন ও ডিজেল কিনবেন। বাইকার আল আমীন রাসেল জানান, বাকেরগঞ্জ থেকে ফেরার পথে মোটরসাইকেলে তেল শেষ হলে রাত ১০টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ের জিরো পয়েন্ট স্থানে বেলী পেট্রল পাম্পে যাই। সেখানে গিয়ে পাম্পটি বন্ধ পাই। বন্ধ রাখার কারণ জানতে চাইলে পাম্পের সংলগ্ন দোকানিরা জানান,  রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেল নতুন দামে বিক্রি হবে। তাই মালিকের নির্দেশে পাম্প বন্ধ রেখে শ্রমিক-কর্মচারীরা চলে গেছে। তারা সকালে আসবে বলে এখানকার ব্যসায়ীদের জানিয়েছেন। এ সময়ে ওই পাম্পে কয়েক শ মোটরসাইকেল, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ থ্রি-হুলার এসেছিলো তেল নিতে। এর খানিকটা সামনে তূর্য্য নামের পেট্রল পাম্পে গিয়ে দেখি সেটির আলো বন্ধ করা। ওই পাম্পে জড়ো হওয়া বাইকাররা বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিলে অন্ধকার থেকে তিন শ্রমিক বের হয়ে রাত সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে দুই শ টাকার অর্ধ শ’তর বেশি মোটরসাইকেলে পেট্রল সরবারাহ করে।

একই চিত্র দেখা যায় নগরীর রুপাতলী ডোস্ট পেট্রল পাম্পে। ওই পাম্পের এক কর্মকর্তা বলেন, মালিকের নির্দেশে পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে। নানাবিধ চাপের কারণে পুলিশের উপস্থিতিতে শর্ত সাপেক্ষে রাত ১২টা পর্যন্ত দুই শ টাকার পেট্রল শুধুমাত্র মোটরসাইকেলে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে ওই পাম্পের অকটেন ও ডিজেল সরবরাহ বন্ধ ছিল। ঢাকাগামী একটি ট্রাকের চালক রইস উদ্দিন বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে আমরা ট্রাক নিয়ে দাড়িয়ে আছি ডিজেলের জন্য। কিন্তু পাম্প থেকে তা দেওয়া হচ্ছে না। ডোস্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, বাইকারদের চাপ সামাল দিতে অন্য তেল সরবারাহ করা সম্ভব হয়নি।নথুল্লাবাদ এলাকার একটি পাম্পের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কথা শোনা মাত্রই পাম্পে আসা কয়েক শ বাইকার সামাল দিতে রাত ১টা বেজে গেছে। রাত ১২টার পরে নতুন দামে পেট্রল বিক্রির কথা থাকলেও রাত ১টা পর্যন্ত পুরোনো দামে পেট্রল বিক্রী করেছি।ফিলিং স্টেশনগুলোর মালিকদের পাওয়া না গেলেও কয়েকটি স্টেশনের কর্মকর্তা কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জ্বালানি তেলে মূল্য বৃদ্ধির খবর শোনা মাত্রই মালিকরা পাম্প বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সকালে নতুন দামে তেল বিক্রি করতে বলেছেন। তাই আমরাও পাম্প বন্ধ রেখে যে যার মতো করে পাম্প এলাকা ছেড়ে চলে এসেছি। বরিশাল মেট্রোপলিটন পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়ালী মোহাম্মদ খান বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবর শুনে বরিশালের কিছু ফিলিং স্টোশন বন্ধ রেখেছে শুনেছি। তবে নগরীর ভেতরে অবস্থিত বেশির ভাগ পেট্রল পাম্প খোলা ছিল। নির্ধারিত পরিমাণের পেট্রল দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পেট্রল পাম্পে আসা সকল বাইকারদের মধ্যে পেট্রল সরবারাহ করা যায় তাই মজুদ অনুযায়ী পাম্প কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পরিমাণে পেট্রল সরবারাহ করেছে। পাম্পে থাকা বাইকারদের পূর্বনির্ধারিত দামে রাত দেড়টা থেকে ২টা পর্যন্ত তেল সরবারাহ করেছে।

image_pdfimage_print