
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহার রাফি হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ফের শুরু হয়েছে। রোববার (৩০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হত্যাকাণ্ডের ১৬ আসামি এবং বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানসহ বাদী পক্ষের দুই সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এর আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) অভিযোগ গঠনের ৬ দিনের মাথায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩ জন সাক্ষীকে আদালতে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্য শেষ না হওয়া সে দিন আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
নুসরাতের ভাই মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানকে আসামি পক্ষের ৭ আইনজীবীর জেরা, নুসরাতের বান্ধবী নিশাত ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফুর্তি আজ সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের এই আদেশ দেন। ওইদিন মামলার ১৬ আসামির পক্ষে জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে ২৭ জুন সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ঠিক করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
এ মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে ৭ জন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয় বলে মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলেন ১. সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, ২. নূর উদ্দিন, ৩. শাহাদাত হোসেন শামীম, ৪. সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, ৫. সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, ৬. জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, ৭. হাফেজ আব্দুল কাদের, ৮. আবছার উদ্দিন, ৯. কামরুন নাহার মনি, ১০. উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, ১১. আব্দুর রহিম শরীফ, ১২. ইফতেখার উদ্দিন রানা, ১৩. ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, ১৪. মোহাম্মদ শামীম, ১৫. মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ সভাপতি রুহুল আমীন ও ১৬. মহিউদ্দিন শাকিল। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অন্য পঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে পিবিআই। আদালত তা অনুমোদন করে।
এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া যৌন হয়রানির মামলার পর নুসরাতের জবানবন্দি গ্রহণের সময় তার ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাইবার আইনে মামলা হওয়ার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।