
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মার্চে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের এমন সম্ভাব্য ঘোষণার পর থেকে খুলনার পাইকগাছায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন এমন সম্ভাব্য অর্ধডজন প্রার্থীর নাম বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী মার্চে নির্বাচন হবে এমন একটি সম্ভাব্য সময় ঘোষণা দিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষণার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ গঠিত। বিগত ২০০৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী অ্যাড. স ম বাবর আলীকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল নির্বাচিত হন। আবার ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানকে পরাজিত করে বিএনপি জোট থেকে অ্যাড. স ম বাবর আলী নির্বাচিত হন।
এদিকে আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যাদের নাম সর্বত্রই শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. সোহরাব আলী সানা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব মো. রশীদুজ্জমান মোড়ল, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা সহ-সভাপতি গাজী মোহাম্মদ আলী, সাবেক এমপি অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হকের জ্যেষ্ঠ পুত্র জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মনিরুল ইসলাম, সাবেক এমএনএ শহীদ এম এ গফুরের জ্যেষ্ঠ পুত্র আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শেখ আনিছুর রহমান মুক্ত ও জেলা সহ-সভাপতি শেখ আবুল কালাম আজাদ।
জানা গেছে, বিগত সংসদ নির্বাচনে আনোয়ার ইকবাল মন্টু, শেখ আনিছুর রহমান মুক্ত ও শেখ আবুল কালাম আজাদ বাদে সকলেই দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন। যেহেতু দলীয় প্রতীকে এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সে কারনে দলীয় মনোনয়ন একটি ফ্যাক্টর বলে মনে করছে সকলেই। ফলে সকলেই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবেন বলেও জানান সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এদিকে সাবেক এমপি অ্যাড. সোহরাব আলী সানার নাম শোনা গেলেও তিনি জানান, আপাতত এমন কোনো ইচ্ছা তার নেই। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল পিএনএসকে জানান, দলের কাছে তিনি মনোনয়ন চাইবেন। কেননা বিগত ২০০৯ সালে তিনি দলের মনোনয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও দলীয় কোন্দলের কারনে তিনি হেরে যান। তবে কোনো কারনে যদি দলীয় মনোনয়নে ব্যর্থ হন তাহলে যিনিই দলীয় মনোনয়ন পাবেন তার পক্ষে কাজ করবেন। সম্ভাব্য প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ আলী পিএনএসকে জানান, আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দল করে আসছি। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও তিনি পাননি। জীবনের শেষ সময়ে আবারও বেশ জোরেশোরে দলীয় সভানেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইবেন। শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, ১৯৯১ সাল থেকে আমার পিতা (সাবেক এমপি) অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হকের সাথে এই এলাকার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছি। যেহেতু এই এলাকার মানুষের সাথে আমার এবং আমার পরিবারের নাড়ির সম্পর্ক সে কারনে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে আগ্রহী। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও যিনি পাবেন তাকে সাথে নিয়ে কাজ করবেন এবং এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকবেন বলে জানান।
এদিকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও তৎকালীন বিএনপি জোট মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. স ম বাবর আলী বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপট এবং শারীরিক অসুস্থতার কারনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে দলটির উপজেলা আহবায়ক ডা. মো. আব্দুল মজিদ নাম শুনা যাচ্ছে। অপরদিকে জামায়াত ইসলামীর সাবেক উপজেলা আমীর ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, দলগতভাবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। দলীয় সিদ্ধান্ত হলে তখনই বলা যাবে কে হবেন প্রার্থী? এখন অপেক্ষার পালা আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী কে হচ্ছেন? আর ঐক্য ফ্রন্ট কিংবা অন্য দল থেকে কে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন?