
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : বিয়ের এক মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ছেড়ে আসার ঘটনা নিয়ে এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নির্বাচনী প্রচারে তীব্র আক্রমণ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
তিনি বললেন, যিনি নিজের বউকে দেখেননি, নিজের পরিবারের পাশে থাকেননি, তিনি আবার দেশের মানুষকে কি দেখবেন?’
বিয়ের মাত্র এক মাসের মধ্যে ১৯৬৮ সালে স্ত্রী যশোদাবেনকে গুজরাতের ভাবনগর ছেড়ে কলকাতার বেলুড় মঠে রামকৃষ্ণ মিশনে চলে এসেছিলেন মোদি।
স্বামী আত্মস্থানন্দর কাছে দীক্ষা নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত দীক্ষা দেননি স্বামীজি। অবশেষে আরএসএসের হয়ে সংঘপ্রচারকের দায়িত্ব নেন মোদি।
সোমবার পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে নির্বাচনী প্রচারে সেই স্ত্রীকে ছেড়ে আসার বিষয়টি হাতিয়ার করে সভায় হাজির কয়েক হাজার মহিলার আবেগ উসকে দিতে চেয়েছেন মমতা।
জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা থেকে বাংলাদেশের রংপুর লাগোয়া কোচবিহারের রাসমেলার মাঠ, সব জায়গাতেই উপচে পড়া ভিড় ছিল। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে যে ময়দান থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছিলেন মোদি এদিন সেখান থেকেই পাল্টা আক্রমণ হানেন মমতা। মঞ্চ থেকে তার সাফ কথা, ‘প্রধানমন্ত্রীর নামের আগে প্রাক্তন বসে গেছে। তার পরাজয় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।’ ভিড়ে ঠাসা ময়দানের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘এমনভাবে ভোট দিন যেন এরা এরপর বাংলার মাটির দিকে তাকাতে না সাহস পায়। ঝুটা চৌকিদার আর চাই না।’
মোদিকে জবাব দিতে গিয়ে এদিন আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন মমতা। দূর-দূরান্ত থেকে সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর লোকেরা। তাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘মোদি জমানায় দলিতদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে।
ঔদ্ধত্যবাদী, ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী এ মোদি।’ মমতার হুশিয়ারি, বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলায় এনআরসি করবে বলছে। আসাম থেকে ৪০ লাখ বাঙালি তাড়িয়েছে। এখানে একজন বাঙালির গায়েও হাত লাগাতে দেব না।’ প্রধানমন্ত্রীর চৌকিদার উপাধিকেও একহাত নিয়েছেন মমতা।
বলেছেন, ‘আমি বলছি ইয়ে চৌকিদার ঝুটা হ্যায়। এ প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিকভাবে বিদায় দিয়েছে মানুষ।’ মমতা আরও বলেন, ‘অনেক প্রধানমন্ত্রী দেখেছি, এতবড় মিথ্যেবাদী প্রধানমন্ত্রী দেখিনি।
জনগণই তার মুখ লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বন্ধ করে দেবে, যেন তিনি আর মিথ্যা না বলতে পারেন। চাওয়ালা এখন ভাওতাবাজ।’ মমতার সদর্প ঘোষণা, আগামী দিন দিল্লি গড়বে বাংলা। নতুন ভারতবর্ষ তৈরি হবে।
কোচবিহারের ঐতিহাসিক প্রসঙ্গও উঠেছে মমতার সভায়। মমতা জানিয়েছেন, দিল্লির নেতারা কোচবিহারকে হেরিটেজ টাউন ঘোষণা করেনি। তৃণমূল সরকার করেছে। নোটবন্দির সমালোচনা করে মমতা বলেন, নোটবন্দির নামে কোটি কোটি টাকার হিসাব দেয়া হয়নি।
এদিন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, নির্বাচনের আগে এখানেই একটা বিতর্ক হোক। যদি আমি মিথ্যে কথা বলি তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে ক্ষমা চাইব। যদি মোদি মিথ্যে কথা বলে তাহলে ওকেও হামাগুড়ি দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে মমতা বলেন, মোদির আমলে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। কোচবিহারে বিজেপি প্রার্থী তৃণমূলের বিতাড়িত কর্মী। মমতার কথায়, ‘এখানকার প্রার্থীকে আমরা তাড়িয়ে দিয়েছি। আমাদের তাড়িয়ে দেয়া কাউন্সিলরকে প্রার্থী করে বড় বড় কথা বলছে।’