Home লিড নিউজ বন্যার পানিতে ভাসছে হরিরামপুর উপজেলা

বন্যার পানিতে ভাসছে হরিরামপুর উপজেলা

43
0
SHARE

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে চরাঞ্চলসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। এতে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

তলিয়ে গেছে মরিচ, ভুট্টা, ঢেড়স, ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত, রাস্তা ও বাড়িঘর। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও পশুখাদ্যের অভাব। করোনার মধ্যে এমন বন্যায় দিশেহারা লোকজন।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রামকৃষ্ণপুর, গোপীনাথপুর, লেছড়াগঞ্জ, কাঞ্চনপুর, বয়ড়াসহ হরিরামপুরের ১৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা। এসব এলাকার অনেক কাঁচা ও ইটসোলিং রাস্তাও পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েকটি রাস্তার মাঝে মাঝে ভেঙে গেছে। ফলে লোকজনের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া, পদ্মা নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের বেশ কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে।

শুক্রবার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদরের প্রধান রাস্তায় উঠেছে পানি। উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে পানি উঠার ফলে উপজেলা পরিষদ, ইউএনও, সমাজসেবা, ভূমি ও শিক্ষা অফিসসহ কয়েকটি সরকারি অফিসের সামনে পানি উঠেছে। থানার সামনের পাকা সড়কে পানি উঠায় থানার প্রবেশমুখে পানি প্রবেশ করেছে।

পানি উঠেছে বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দড়িকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও হরিরামপুর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে।

পানি উঠার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার প্রধান সড়ক। পানির স্রোতে এই সড়কের পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন অংশে ভেঙে গেছে। হরিরামপুর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির সামনেসহ সড়কের কয়েকটি জায়গায় ধসে যাওয়ায় ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। পানির তোড়ে বকচর হতে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার ইটসোলিং রাস্তার আলগীরচর অংশে ভেঙে গেছে।

বাড়িতে পানি উঠায় গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ পার্শ্ববর্তী উচু জায়গায় ও রাস্তার পাশে গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান তুষার জানান, সড়কের সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে বয়ড়া ইউনিয়নে।

হারুকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চুন্নু বলেন, তাঁর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পাঁচ শতাধিক বাড়িতে পানি ওঠেছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান জানান, জেলার সবচেয়ে নিচু এলাকা পদ্মা নদীতীরবর্তী এই উপজেলা। পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং মানুষের কষ্ট লাঘবে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রাখা হয়েছে। উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের থাকার জন্য দুটি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ইতিমধ্যে চারটি ইউনিয়নের ৪০০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

image_pdfimage_print