
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে।
এখন আমাদের ধনীদের নিয়ে গবেষণা করার সময় হয়েছে। ধনীদের নিয়ে গবেষণা করা একটু
কঠিনই। কেননা আমাদের দেশের ধনী শ্রেনীরা আলাদিনের চেরাগের কল্যানে রাতারাতি ধনী
হয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ধনীক শ্রেনীর সাথে আমাদের দেশের ধনীক
শ্রেনীর তুলনা করা যেতে পারে। কেননা তাদের যে জীবন যাত্রার স্টাইল আমাদের ধনীদের মাঝেও
একই প্রবনতা লক্ষ্যনীয়।
আজ বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯) সকালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস
মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং সরকারি নীতি: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ” শীর্ষক
সেমিনারে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বিইউ অর্থনীতি বিভাগ উক্ত সেমিনারের
আয়োজন করে। বিভাগের সভাপতি ড. মোঃ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড.
বিনায়ক সেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির
উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক শরীফ। এছাড়া নির্ধারিত বিষয়ের উপর
আলোচনায় অংশ নেন বিইউ’র ইংরেজি বিভাগের প্রধান শেখ আলাউদ্দিন, আইন
বিভাগের প্রধান দেওয়ান মোঃ আল-আমিন ও স্থাপত্য বিভাগের প্রধান মৌসুমী আহমেদ
সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকগণ।
মূল প্রবন্ধে ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশে এখনও অবাধ বানিজ্য গড়ে উঠেনি। তবে
আশার কথা হচ্ছে, আমাদের দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যতার হার কমেছে। ১৯৯১ সালে যেখানে
এই হার ছিলো শতকরা ৪৪ ভাগ ২০১৬ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে শতকরা ১৫ ভাগে। আবার
দারিদ্র্য থেকে যারা বেরিয়ে আসছে তারা সবাই কিন্তু আবার মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মধ্যে
পড়ছে না। এরফলে দেশে কোন দুর্যোগ হলে বা কোন আকস্মিক বিপর্যয় দেখা দিলে এদের
জীবনযাত্রা আবার নীচে নেমে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, আয় বৈষম্যের দিক থেকে
বর্তমানে বাংলাদেশ আমেরিকার সাথে সমান্তরালভাবে অবস্থান করছে।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, দারিদ্র্য ও বৈষম্য থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলো
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী চালু করা। দারিদ্র্য শ্রেনীর মানুষের আয়ের শতকরা ৩ ভাগ
আসে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী থেকে। এ কর্মসূচী যদি প্রকৃত টার্গেট
গ্রুপের কাছে যেতো তাহলে আমাদের দেশের দারিদ্র্যতা কমে আসতো শতকরা ২২ ভাগ
থেকে ৩ ভাগে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বাংলাদেশ
ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, কর্মকর্তা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন।