
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি’র সাথে গ্রুপ বীমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ বিকালে ডিআরইউ’র শফিকুল কবির মিলনায়তনে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, সাংবাদিকদের জন্য সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুরক্ষা আইন তিনি তার মেয়াদেই বাস্তবায়ন করবেন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের জন্য ৯ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কাজও চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।তিনি বলেন, “সাংবাদিক সবাইকে সুরক্ষা ও কল্যাণের আওতায় আনা কঠিন। তারপরও তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করছে। প্রতি তিন মাস পরপর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সহায়তা দেয়া হচ্ছে এবং এর কার্যপরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের সন্তানদের বৃত্তির জন্য ইতিমধ্যে ২ কোটি টাকা অর্থ ছাড় হয়েছে।”তথ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, সাংবাদিকরা সাবলম্বী না হলে কোনো দল বা গোষ্ঠীর পাপেটে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা এড়াতে সরকার কাজ করছে। তিনি ডিআরইউ যেন সরকারি সুবিধা পায় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দেন।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত ও নিহতদের অনেকে এখনো আড়ালে রয়েছেন। তাদের নিয়ে প্রতিবেদন হলে সরকারের জন্য ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান এবং এসব ঘটনার বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা জীবনের নিরাপত্তা চান।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, কয়েকটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গ্রাহকের টাকা দিতে না পারায় আস্থা সংকট তৈরি হয়েছে। তিনি প্রস্তাব দেন, এ ধরনের কোম্পানিকে সরকার ব্যাংক ঋণ দিলে তারা গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারবে, এতে মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।
ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন বলেন, গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে দাবি পরিশোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি জানান, ২০২৪ সালে ন্যাশনাল লাইফ ১২০৮ কোটি টাকা দাবি পরিশোধ করেছে, যার বিপরীতে প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ২১০৬ কোটি টাকা। সাংবাদিকদের কল্যাণে পাশে থাকার অঙ্গীকার করে তিনি গ্রুপ বিমার বাইরে থাকা ডিআরইউ সদস্যদের জন্য এক লাখ টাকা সহযোগিতার ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
উল্লেখ্য, গ্রুপ বীমার আওতায় থাকবেন ২০ থেকে ৬০ বছর বয়সী ডিআরইউ’র প্রায় ২ হাজার সদস্য। এর মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যুতে পরিবারকে ৩ লাখ টাকা, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অঙ্গহানিতে ১ লাখ টাকা এবং কোনো অস্ত্রোপচারে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে। এক বছরের এ চুক্তি পরবর্তীতে নবায়ন করা হবে।