
শামসুজ্জামান ডলারঃ মতলব উত্তরের একমাত্র সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১ শত শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে করোনার টিকা দেয়ার বিষয়টিতে কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেয়ার কারনে এই উপজেলায় আরো এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করোনার টিকায় টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলো। তাও অভিযুক্ত ছেংগারচর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বেনজীর আহমেদের প্রতিষ্ঠিত মহীয়সী নারী হোসনে জাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। ওই স্কুলের আড়াইশ শিক্ষার্থী জনপ্রতি ৫০ টাকার বিনিময়ে ১৬ জানুয়ারীর আগে ছেংগারচর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে টিকা নিয়েছে।
উপজেলার ছেংগারচর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি সরকারী ঘোষনা পাবার পরপরই স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বেনজীর আহমেদ এই স্কুলের মাত্র ১ কিলোমিটার দূরেই প্রতিষ্ঠা করেন এই মহীয়সী নারী হোসনে জাহান উচ্চ বিদ্যালয়টি। যদিও গ্রামাঞ্চলে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন কোন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকারী বিধি নিষেধ রয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল কাইয়ূম খানের তথ্যমতে আমাদের নিবন্ধন অনুযায়ী এ উপজেলায় এখনো সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীর করোনার টিকা নেয়া বাকী। যোগাযোগ হয়েছে, সহসাই তাদেরকে টিকা দেয়া হবে। আর এখনো মহীয়সী নারী হোসনে জাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হয়ে যাওয়ার কথা না। নতুন ও নিবন্ধন না হওয়া স্কুল হিসাবে আমরা ওই স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করার পর তাদের টিকা দিয়ে দিবো।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এমন নিয়মের কথা জানালেও মহীয়সী নারী হোসনে জাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুছ জানান, তার স্কুলের শিক্ষার্থীরা ১৬ জানুয়ারীর আগেই এই উপজেলার শিক্ষার্থীদের একমাত্র টিকাদান কেন্দ্র ছেংগারচর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে টিকা নিয়ে নিয়েছেন। তবে তিনি তার স্কুলের শিক্ষার্থীের থেকে টিকা বাবদ জনপ্রতি ৫০ টাকা করে নেয়ার বিষযটিও স্বীকার করেন। তবে তিনি তার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও ছেংগারচর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেনজীর আহমেদের পরামর্শমতোই ৫০ট্কা করে নিয়েছেন বলে জানান।
কথাহলে নামপ্রকাশ না করা শর্তে ঐ স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, টিকা নিতে ছেংগারচর হাই স্কুলে যাওয়া-আসার খরচ আমাগো। আর টিকা বাবদ হেড স্যার ৫০ টাকা কইরা নিছে। টাকা না দিলে আমগো নাকি টিকা দিবোনা, তাইতো টাকা দিয়া দিছি।
মতলব উত্তর উপজেলার আরো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের থেকে করোনার টিকার জন্য জনপ্রতি ৫০ টাকা করে নিয়েছে চাঁদপুরের জেলা শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত)আজিজুল হকের সাথে এমন অভিযোগ জানিয়ে তাদের করনীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন তারা কিভাবে টাকা নিয়েছে তা আমি জানিনা, তবে এ বিষয়টি একটু সহজ ভাবে দেখার কথা বলেন।
উপজেলার কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথাহলে তারা সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর করোনার টিকা বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের টাকা নেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, এ উপজেলায় জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ ও কেন্দ্র ফি বাবদ সরকার নির্ধারিত ফি এর ৫ থেকে ৭ গুণ, কখনো এরচেয়ে বেশি হারে টাকা উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয় না। বিষয়গুলি খুবই দুঃখজনক।