
বাংলাদেশের সব ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনার পেছনে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা থাকে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। অনেকে বাংলাদেশকে শ্রীলংকা বানাতে চাচ্ছে…একটা কথা মনে রাখবেন বাংলাদেশ কখনো শ্রীলংকা হবে না।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রীলংকার মতো পরিস্থিতি ২০১১ থেকে ২০০৬ সালে তো হয়েই গেছে। পানি, বিদ্যুৎ, সার সংকট, জঙ্গি উত্থান। আমাদের যাতে অর্থনৈতিক গতিশীলতা থাকে, সেজন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। প্রত্যেকটা অর্থনেতিক উন্নয়নের আগে চিন্তা করি, এতে দেশের কি উন্নয়ন হবে। আমরা এটা চিন্তা করি না যে, এই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিলে কত পারসেন্ট থাকবে, এটা চিন্তা করে শেখ হাসিনা কোনো পরিকল্পনা নেয় না।’
‘আমরা কখনো ধার করে ঘি খাই না। আমরা কারও কাছে আটকা পড়ে যাব না। যেখান থেকে ঋণ নিচ্ছি তা আমরা পরিশোধ করে দিচ্ছি’, বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সারা পৃথিবী জুড়ে কিছু মানুষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপতৎরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনি, যুদ্ধাপরাধীদের স্বজনরাই বিদেশে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। তবে আমরা সংঘাত চাই না।’
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে মানবাধিকার নিয়ে তত্ব জ্ঞান দেয়, যখন স্বজন হারানোর ঘটনা ঘটেছে তখন মানবাধিকার কী ভেবেছেন। সেই সময় মামলা করার অধিকারও ছিল না। দেশে গুম খুন শুরু করেছে জিয়াউর রহমান, ভোট কারচুপি শুরুও তার হাতে। জিয়াউর রহমানের আমলে যারা নিখোঁজ হন তাদের আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে না পাঠালে নাকি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হবে না। আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠায়? তাহলে তো আদালতের কিছুই আর বাকি থাকবে না। আমরা সবাইকে বিদেশে পাঠাব?’
তেলের দাম কমানোর বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ভর্তুকি দিয়ে তেল কেনা হত, আর সেটা প্রতিবেশী দেশে যেত। এখন তেল পাচার বন্ধ হয়েছে, সেজন্য তেলের দাম ৫ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আগামী ১ অক্টোবর থেকে এক কোটি পরিবারকে ৩০ টাকা কেজিতে চাল দেওয়া হবে বলেও সভায় জানান শেখ হাসিনা। এ সময় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং জ্বালানি সংকটের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে দেশবাসীকে বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি তেল ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।