
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেছেন, বিতর্কিত, মাস্তান, দখলবাজ, স্বাধীনতা বিরোধী চেতনার কারো আর যুবলীগ করার সুযোগ নেই। যুবলীগ হবে পরিচ্ছন্ন সংগঠন। কেন্দ্র হতে তৃনমূল প্রতিটি ইউনিটে যুবলীগের স্বচ্ছ ইমেজ ফিরিয়ে আনা হবে। যুবলীগের প্রতিটি ইউনিটে স্থান পাবে মুজিব আদর্শের ত্যাগী নেতারা। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিবেদিত রাখবে। গত বুধবার রাতে দৈনিক ভোরের ডাকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেত্রীর কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন যুবলীগকে তার ঐতিহ্যে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে। আমি বিতর্কমুক্ত যুবলীগ গড়তে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার প্রত্যয় নিয়েছি। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশও এ ব্যাপারে কঠোর আছেন। তিনি ইতিমধ্যে বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যুব সমাজকে নিয়ে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চেয়ে ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা সেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠন করবো। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনি ভাইয়ের ছেলে আমাদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার সততা, আদর্শ নিয়ে আমরা কাজ করবো। মানুষের কল্যাণে কাজ করার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাস্তবায়ন করবো ।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়া প্রসঙ্গে মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আল্লাহ দরবারে হাজার কোটি শুকরিয়া। আর নেত্রীর দূরদর্শিতার কারণে আজ আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। নেত্রী আমাকে মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরবর্তিতে সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এবার আমাকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক করেছেন। নেত্রীর প্রখর এ স্মৃতি শক্তির প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা এবং তার আস্থার মর্যাদা আমি রাখবো।
কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ইতিমধ্যে ১৫শ’ মতো বায়োডাটা দফতরে জমা পড়েছে। বর্তমানে আমরা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছি। এ ছাড়া আমাদের গঠনতন্ত্রের বেশ কিছু নেত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তিনি সিদ্ধান্ত দিলেই আমরা কমিটি গঠনের কাজ শুরু করবো।
কমিটিতে কারা মূল্যায়ন পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা দীর্ঘসময় যুবলীগ করছেন, সাবেক ছাত্রনেতা, অনেক ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ হতেও কাউকে যুবলীগে আনা হতে পারে। অনেকেই এখন যুবলীগে আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে যুবলীগের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজের পর থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে যুবলীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিটে সব শ্রেণির পেশার মানুষের সমন্বয়ে নির্বাচনি টিম গঠন করেছি। তারা কাজ করছে এবং তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সমন্বয় করতে কেন্দ্রীয় নির্বাচনি টিম, চেয়ারম্যান এবং আমি প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। নেত্রী কেন উত্তরে আতিকুল ইসলাম এবং দক্ষিণে শেখ ফজলে নূর তাপসকে মনোনয়ন দিয়েছেন তা তুলে ধরছি। দুই প্রার্থীর যোগ্যতা এবং ঢাকাকে ঘিরে তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরে ভোটাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি। আশা করি ৩০ জানুয়ারি দুই সিটিতেই নৌকা বিপুল ভোটে জয় পাবে।
উল্লেখ্য, মাইনুল হোসেন নিখিল ১৯৯১ সালে যুবলীগের রাজনীতিতে আসেন। তৎকালীন ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ২০১২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ষষ্ঠ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। গত বছরের ২৩ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের কাউন্সিল অধিবেশনে যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হিসেবে শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক হন মাঈনুল হোসেন খান নিখিল।