Home আন্তর্জাতিক জনতার হাতে মৃত্যুর শঙ্কা করছিলেন অভিনন্দন

জনতার হাতে মৃত্যুর শঙ্কা করছিলেন অভিনন্দন


বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক : শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ দেশে ফিরেছেন পাকিস্তানে গ্রেফতার হওয়া ভারতের যুদ্ধবিমানের পাইলট অভিনন্দন বর্তমান। গত বুধবার মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিরোধের মুখে বিধ্বস্ত হয় দুটি যুদ্ধ বিমান। এতে তিনি আটক হন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার মুক্তির কথা ঘোষণা করে। সে হিসেবে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

অভিনন্দন জানান, পাকিস্তানে এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল জনতার হাতে মারা যাবেন তিনি। এ সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে। জীবন রক্ষা করায় তাই তিনি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

গত বুধবার যখন পাকিস্তানি বাহিনীর পাল্টা হামলায় অভিনন্দনের মিগ ২১ বিধ্বস্ত হয়, তার আগেই প্যারাস্যুট নিয়ে বিমান থেকে অক্ষত ও নিরাপদ অবস্থায় নেমে যান তিনি।

এ সময় ওই পাইলটকে ধরার জন্য ছুটে যায় স্থানীয় তরুণেরা ছুটে যান। সে সময় অভিনন্দনের হাতে একটি পিস্তল ছিল। তিনি তখন প্রথমে নিশ্চিত হতে চান, ওই স্থানটি কোন দেশের অধীনে, ভারত না পাকিস্তান। এক তরুণ জায়গাটি ভারতের বলে জানালে তিনি নিজের পরিচয় জানান, তিনি ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন। এরপর তিনি দেশের নাম নিয়ে স্লোগান দেন। উপস্থিত কিছু তরুণ এটি সহ্য করতে পারেননি। ফলে তারা উল্টো ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী জিন্দাবাদ’ বলে উল্টো স্লোগান দিয়ে বসেন। এটি শুনেই পাইলট অভিনন্দন ফাঁকা গুলি ছোড়েন।

এর জবাবে তরুণেরা হাতে পাথর তুলে নেন। এ সময় অভিনন্দন তরুণদের দিকে পিস্তল তাক করে আধা কিলোমিটারের মতো জায়গা সরে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু, তরুণেরাও তাকে ধাওয়া করতে করতে এগিয়ে যান। বিপদ বুঝতে পেরে অভিনন্দন আরও কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। কিন্তু, তাতে কোনো কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে একটি পুকুরে লাফিয়ে পড়েন এবং পকেট থেকে কিছু নথি ও ম্যাপ বের করেন। এগুলো তিনি পানিতে ডুবানো ও ভিজিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা করতে থাকেন। কিছু মুখে পুরেও চিবাতে থাকেন।

রাজ্জাক চৌধুরী বলেন, তরুণেরা পাইলটকে পিস্তল ফেলে দিতে বলেন। কিন্তু, তিনি তা করেননি। এ সময় এক তরুণ তার পায়ে গুলি করেন এবং পরে অস্ত্রসহ তাকে ধরে ফেলেন। এ সময় অভিনন্দনের আশঙ্কা হয়, উপস্থিত জনতা তাকে মেরে ফেলতে পারে। এ অবস্থায় অভিনন্দন তাকে মেরে না ফেলার অনুরোধ জানান। তখন কয়েক তরুণ তার দুই হাত ধরে ফেলেন। কয়েকজন তার ওপর চড়াও হন। কয়েকজন তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।

এরই মধ্যে পাকিস্তানের সেনারা চলে এসে অভিনন্দনকে তাদের হেফাজতে নেন। পরে তাকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে তুলে ভিমবার এলাকায় সেনা স্থাপনায় নেয়া হয়। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় তরুণদের হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান ভারতীয় পাইলট।

এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অভিনন্দন স্রষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। কারণ তার মনে হয়েছিল, উত্তেজিত তরুণদের কয়েকজন তাকে গুলি করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কারণ, তিনি পিস্তল হাতে তাদের দীর্ঘক্ষণ ভুগিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানের সেনা সদস্যরা অভিনন্দনকে ৫০ কিলোমিটার দূরে হরানের স্থাপনায় নিয়ে যান।

পুলওয়ামা হামলার জবাব দিতেই গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে পাকিস্তানের ভূখ-ে হামলা চালায় ভারতের বিমানবাহিনী। ভারত দাবি করে, তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর বেশ কয়েকটি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে তিন শতাধিক লোক মারা গেছে। এ ঘটনার পর নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেয়।