Home খেলাধূলা মাশরাফির ফেরার ম্যাচে জয়ে রাঙানোর অপেক্ষা

মাশরাফির ফেরার ম্যাচে জয়ে রাঙানোর অপেক্ষা


সিলেট প্রতিনিধি: ড্রেসিংরুম থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসলেন। সিলেটের সবুজ গালিচায় পা দেওয়া মাত্রই হাত ছুঁয়ে সালাম করে নিলেন।

এ চিত্র বাংলাদেশ ক্রিকেটের খুব পরিচিত। তবে দীর্ঘদিন ধরেই দেখা মিলে না এমন দৃশ্যের। প্রায় সাত মাস পর জাতীয় দলের জার্সিতে ফিরছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার বদৌলতে দেখা মিলল সেই চিরচেনা দৃশ্যেরও।

এরপর মাঠে নেমে দীর্ঘ তিন ঘন্টার নিবিড় অনুশীলন। অক্লান্ত পরিশ্রম আর দীর্ঘ প্রচেষ্টা। অনুশীলনের ভাষা স্পষ্ট, ‘দেশের জার্সিতে দেওয়ার আছে আরও অনেক কিছু।’ সেই পণ নিয়েই আজ আবার যাত্রা শুরু মাশরাফি বিগ্রেডের। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে।

স্টেডিয়ামের দক্ষিণ দিকে খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুম। সেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেই আজ আবার লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক। ২০১৫ থেকে ২০১৯। বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মাশরাফির হাত ধরে পাল্টে যায় টিম টাইগারদের চিত্র। যার শুরুটা হয়েছিল এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

৫-০ ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করার পর বিশ্বকাপে অভূতপূর্ব সাফল্য বাংলাদেশের। এরপর ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয় করে মাশরাফির দল।

এরপর ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সাফল্যের সূচক উর্ধ্বমুখী হতে থাকে। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ চলতে থাকে ব্যাকগিয়ারে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মাত্র দুই জয়। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোয়াইওয়াশ।

দল যখন পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে তখন প্রতিপক্ষ আবার জিম্বাবুয়ে। আবার তাদের হারিয়ে স্বরূপে, জয়ের পথে হাঁটা শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। পাঁচ বছর আগের কথার সাথে বর্তমানকে গুলিয়ে ফেলতে চাননা বাংলাদেশ অধিনায়ক। এটা মাথায় রেখে সিলেটে আজ মাঠে নামতে নারাজ মাশরাফি, ‘পাঁচ বছর আগের কথা আর পাঁচ বছর পরের কথা নিশ্চয়ই এক না। বাংলাদেশের জন্য প্রত্যেকেটা সিরিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জিতলে হয়তোবা ইতিবাচক জিনিসগুলো কম আসবে। আর ম্যাচে যদি হারি তাহলে নেতিবাক জিনিসগুলো বেশি আসবে।’

তাইতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের লক্ষ্য একদম স্থির, জয়। জয় বাদে কিছুই ভাবতে চাইছে না বাংলাদেশ। আর দলকে জয়ের পথে ফেরাতে যেকোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচকেই প্রক্রিয়া হিসেবে নিচ্ছে মাশরাফিরা।

‘এমন না, জিম্বাবুয়ের সঙ্গেই শুরু করতে হবে। এরপর দল পাকিস্তানে যাবে টেস্ট খেলতে। খেলা তো সব জায়গায় চাপের। প্রতিনিয়ত খেলা চলছে, এই বছর প্রচুর খেলা আছে। প্রত্যেকটা শুরুই এক একটি প্রক্রিয়া।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাওয়ার খুব বেশি কিছু নেই বাংলাদেশের। তিন ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ করলে রেটিং পয়েন্টে মাত্র এক পয়েন্ট যোগ হবে। কিন্তু স্বাগতিক দল হোয়াইটওয়াশ হলে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ অবনমন হবে। তাইতো বাড়তি সতর্ক টিম বাংলাদেশ।

‘যখন আমরা শীর্ষ এক দুই নম্বর দলের বিপক্ষে খেলি, তখন তারা চাপ অনুভব করে। খুবই স্বাভাবিক। ঠিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে আমরা এরকম চাপ অনুভব করি।’

শেষ ১৩ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে কখনো হারাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ঘরের মাঠে জয়ের তালিকা আরও লম্বা বাংলাদেশের। শেষ ১৬ ম্যাচে টানা জয় বাংলাদেশ। শেষবার হেরেছিল ২০০৫ সালে।

তবে নিজেদের দিনে যে কোনো কিছুই হতে পারে তা বেশ ভালো করেই জানে জিম্বাবুয়ে। তাইতো বাংলাদেশকে হালকা হুমকিও দিয়ে রাখল তারা।

‘বাংলাদেশের মাটিতে আমাদের রেকর্ড ভালো নয়। কিন্তু আমরা সেটা বদলাতে চাই। আমি মনে করি ওয়ানডে ক্রিকেট আমাদের জন্য বেশি মানানসই। আমরা ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই। আশা করছি আমরা দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করতে পারব।’-বলেছিলেন দলটির অধিনায়ক চামু চিবাবা।

প্রতিপক্ষ কিছুটা হলেও দূর্বল। কিন্তু দেশের জার্সি গায়ে জড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে চলে আসে চাপ। সেই চাপ জয় করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কাঙ্ক্ষিত জয়ের খোঁজে বাংলাদেশ। শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। তাইতো জয়ের তাড়না বেশি স্বাগতিকদের।

‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এমন একটা জিনিস, যার বিপক্ষেই খেলেন না কেন, মিডিয়া, দর্শকের প্রত্যাশা থাকে। যখনই লাল সবুজের জার্সিটা গায়ে উঠবে তখনই চাপ চলে আসে। জিম্বাবুযের কাছে আমরা হারতেও পারি। এমন না যে আমরা জিম্বাবুয়ের কাছে আগে হারিনি। যে ম্যাচগুলো আমরা জিতেছি, এরমধ্যে কিন্তু দুই তিনটি ম্যাচ ছিল যে আমরা হারা ম্যাচ জিতে গেছি। তার মানে কি-তারা আমাদের হারাতে পারে। সুতরাং অতটুকু নিশ্চিত হয়ে আমাদের ক্রিকেট খেলতে হবে।’ – যোগ করেছেন মাশরাফি।