Home অর্থনীতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড : বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড : বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২


পরিক্রমা ডেস্ক : বিশ্বের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়কারী ও তাদের বৈশ্বিক মান নিরূপণকারী প্রতিষ্ঠান আইওএসসিও’র আহবানে প্রতিবছরের মতো এবছরও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ সচেতন করতে ষষ্ঠবারের বারের মত ৩ থেকে ১৩ অক্টোবর ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২’ ঘোষণা করে৷

৩ অক্টোবর পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণে ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২’ এর শুভ উদ্বোধন সূচিত হয়৷ বিএসইসি’র কার্যালয়ে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত—উল—ইসলাম এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন৷ এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ৷

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২ এর ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আজ ১০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড এবং ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে “How Fintech Can Shape Next Decade of Bangladesh’s Investment Management” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়৷ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম৷ বিশেষ অতিথি ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও৷

অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম সাইফুর রহমান মজুমদার এফসিএ এর সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ সাইফুদ্দিন, সিএফএ৷ মূল প্রবন্ধে তিনি ফিনটেক, ব্রোকার হাউজ ডিজিটালাইজ, মার্কেটে প্রবেশাধিকার সহজীকরণ, বিনিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার, আর্থিক জ্ঞানের গণতন্ত্রীকরণ, প্রতিযোগিতার গতিশীলতায় পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের দুটি ঘটনায় অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনার পর অনেক আইন কানুন পরিবর্তন করা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে। অনেক শাস্তিুমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপরও কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আমাদের মধ্যেই রয়েছেন। তারা বৃহত্তর স্বার্থকে বাদ দিয়ে স্বল্প সময়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভমান হওয়ার জন্য আত্নঘাতি কাজ করেছে।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ২০১৫ সালে ডিএসইর টিম একটি ব্রোকার হাউজ পরিদর্শন করে। এতে অনেক বড় বড় ঘাটেতি দেখা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি তাদের পরিচালনা পর্ষদ—তাদের আত্নীয় স্বজন এবং কর্মচারী—কর্মচারীর আত্নীয় স্বজনকে অনিয়মিত ভাবে ঋণ দিয়েছে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার কেনার জন্য মার্জিন ঋণ দিয়েছে। যাদের কোডে টাকা নেই, তাকে শেয়ার কেনার সুযোগ দিয়েছে। যাদের সাথে চুক্তি নেই তাদের ও ঋণ নিয়েছে। এছাড়াও ছোট ছোট অনিয়ম করেছে। এর দুই বছর পর ২০১৭ সালে আবার পরিদর্শন করার পর এই চিত্র দেখা গেলে। তারা তখন বলেছিল, আমরা আইন সঠিক জানিনা তাই ভুল হয়েছে। ২০১৯ সালে আবার পরির্দশন করা হলে একই চিত্র দেখা দেল। আবারও একই চিত্র দেখা যায়।

তিনবার একই অনিয়মের পর শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০২১ ও ২০২২ সালে পরিদর্শন করা হয়েছে। ৫ বারের পর এখন হাউজটি নিয়মের মধ্যে এসেছে। অর্থাত্ প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃতভাবে অনিয়ম করেছে।

আব্দুল হালিম বলেন, এসব অনিয়মের বাহিরে ব্রোকার হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের চেক জমা হওয়ার পূর্বে শেয়ার কেনা বেচার করেছে। কমিশন বৃদ্ধির জন্য একই ব্যক্তির বিভিন্ন বিও অ্যাকাউন্টে লেনদেন করা। এমনকি কাস্টমারদের টাকা ব্যাংকে বন্ধক রেখে সেটির বিপরীতে লোন নেওয়া হয়েছে। তারা যে শুধু বিনিয়োগকারীদের মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে সেটি নয়, রেগুলেটর ডিএসই, সিএসই এমনকি বিএসইসির কাছে মিথ্যা তথ্য দেয়। এগুলো আসলেই বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার সাথে যায় না।

তিনি বলেন, টেকনোলজির মাধ্যমে কিছু কিছু অনিয়ম দূর করবে। কিন্তু টেকনোলজির পেছনে যারা থাকবে তাকেও সৎ হতে হবে। তারাও ব্যবসা করবেন, নিয়মে মেনে লাভমান হবে তাতে আমাদের কোনো আপাত্তি নেই। কিন্তু অসত উদ্দেশ্যে স্বল্প সময়ে লাভমান হওয়ার জন্য যে অপচেষ্টা। এই জায়গা থেকে যেন স্ব—উদ্যোগে বিরত থাকতে হবে।

কমিশনার বলেন, আমরা শুধু বিনিয়োগকারীদের আহবান জানাবো, বড় বড় স্লোগান, ও পোস্টার দেবো। আর মার্কেটের ভেতরে অনিয়ম জিইয়ে থাকবে তাহলে কিন্ত প্রত্যাশার জায়গায় পৌছাতে পারে না।

বিশ্ব ব্যাংকের ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিডিপিতে দেশের পুঁজিবাজারে অবদান ২৭ শতাংশ এবং আমাদের জিডিপির সাইজ ৪ শত ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটু বেশি। আমাদের অর্থনীতির যে ক্রমবর্ধমান ধারা আমরা লক্ষ্য করছি তাতে আমরা আশা করছি ২০২৫ সাল নাগাদ আমাদের জিডিপির সাইজ ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করবে। আমরা যদি সে সময় আমাদের জিডিপি মার্কেট ক্যাপের ৫০ শতাংশেও নিতে চাই তাহলে তা ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে। অর্থাত টাকার হিসাবে এটি প্রায় ৩০ লাখ কোটি টাকা। অর্থাত বর্তমান পুঁজিবাজারের আকারের প্রায় তিনগুন।

আজকের এই দিনে আমাদের প্রত্যাশা, ২০২৫ সালে পুঁজিবাজারে ৬ থেকে ৭ শতাংশ বিনিয়োগকারী আসবে। ২০৩০ সালে জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান ৫০ শতাংশে উন্নিত হবে৷ এজন্য অনিয়মগুলো চিড়তরে বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। আমরা বাজারে সুশাসন ও শৃঙ্খলার আনয়নের চেষ্টা করি৷ এছাড়াও তিনি বলেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা এই অবস্থার জন্য কতোটুকু প্রস্তুত? শুধু পৌছানোর স্বপ্নের কথা বললে হবে না। আমাদের প্রস্তুতি কতোটুকু সেই বিষয়েটিও খেয়াল রাখতে হবে। বিএসইসি এখানে নিয়ন্ত্রণক সংস্থা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এর বাহিরে ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএস, সিসিবিএল রয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন ধরণের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানও। এছাড়াও সরকার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি সবকিছুরই প্রভাব এই বাজারে রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি মোঃ ইউনুসুর রহমান সমাপণী বক্তব্যে আজকের অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু বেশ সময়োপযোগী ও প্রযুক্তি নির্ভর উল্লেখপূর্বক বলেন, বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের ফসল আমরা কিভাবে ঘরে তুলবো, এর থেকে কিছু আমরা কিভাবে শিখব— সেটা নিয়ে আমি কিছু কথা বলতে চাচ্ছি। বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালনের সাধারণ লক্ষ্য হচ্ছে ইনভেস্টর এডুকেশন এবং প্রোটেকশন। এর সাধারণ লক্ষ্যের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওএসকো) সেটা ২০২২ সালের জন্য একটা ম্যাসেজ দিয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে। তাতে দুটি বিষয়ের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ও আরেকটি ইনভেস্টর রেজিলিয়ান্স।

তিনি আরো বলেন, আমরা খুব গুরুত্বের সাথে আধুনিক ডাটা সেন্টার নিয়ে কাজ করছি। এই ডাটা সেন্টার বিভিন্ন বাধা সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদী ২০২২ সালের মধ্যেই আমরা একটা সর্বাধুনিক ডাটা সেন্টার পাব। সেটার সাথে সাথে ডিজাস্টার রিকভারির ব্যবস্থা হচ্ছে এবং এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সফটওয়্যার পরিচত করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা বলতে পারি ফাইনান্সিয়ালি টেকনোলজির ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আইওএসকো তাদের ওয়েবসাইটে একজন স্মার্ট ইনভেস্টরের রেজিলিয়ান্সের জন্য কি কি করতে পারে, সে সম্পর্কে ৬টি অনুশাসন দিয়েছে। আর সাসটেইনেবল ফাইন্যান্সের জন্য যা যা করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে তারা ৪টি অনুশাসন দিয়েছে। আমরা যদি বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ থেকে কিছু শিখতে চাই, তাহলে এই ১০টা অনুশাসন আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করতে পারে।

ইউনুসুর রহমান বলেন, আজকের যে আলোচ্য বিষয় তা খুব গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু দুর্বোধ্য না। সাম্প্রতিক কালে আমরা দেখছি যে ইনফরমেশন টেকনোলজির সাথে সাথে এই ফিনটেকে খাতেও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আমরা ফাইন্যান্সিয়ালি টেকনোলজির যে বিষয়টা সামনের দিকে আমরা ব্যবহার করবো, এই ব্যবহারের সাথে সাথে আমাদের সাইবার হুমকি বা সাইবার সিকিউরিটির বিষয়েও যথেষ্ট যত্নবান এখন থেকেই হওয়া উচিত। আর ফাইন্যান্সিয়ালি টেকনোলজি যত বেশি ব্যবহার করবো, তার সাথেও কিছু রিস্ক আছে, সে রিস্কগুলোকে এককথায় আমরা সাইবার হুমকি বলে। সাইবার টেকনোলজির সাথে সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমদের জানতে হবে। আর এ সম্পর্কেও আমরা সচেতন হব।

তিনি বলেন, একটা বিষয়ের উপরে আমি একটু বেশি গুরুত্ব দিতে চাই, আর সেটা হলো কিভাবে মানুষ মোবাইল এ্যাপ ব্যবহার করে স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রমের মধ্যে বা ট্রেডিংয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। এ পার্টে বোধহয় আমাদের সব চাইতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, আমরা সবাই টেকনোলজির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছি। একটা সময় ছিল আমারা ক্যাসেট প্লেয়ার ব্যবহার করতাম। সেটা কিছুদিন পরে সিডিটে কনভার্ট হলো। এর পর আসলো পেন ড্রাইভ। আবার আমরা আগে ব্যবহার করতাম ক্যামেরা। তার সাথে ফিল্ম। তারপর আসলো ডিজিটাল ক্যামেরা। কিন্তু বর্তমানে আমরা সেটাও ভুলতে বসেছি। শুধু একটা মাত্র যন্ত্র। আর সেটা হচ্ছে একটা মোবাইল ফোন। এই মোবাইলে এমন এক টেকনোলজি নিয়ে আসলো, যার মাধ্যমে সব কিছু একটা জিনিসের মধ্যে চলে আসল। কত সহজ হয়ে গেল আমাদের কাজগুলো। এই টেকনোলজিতে যে এডভান্সমেন্ট, সেটা কিন্তু আমাদের জন্য অত্যন্ত সুখকর একটা বিষয়। একইভাবে আমাদের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ১৯৯৮—এর আগে আমরা কাগজের শেয়ার ট্রেড করতাম। বাই সেল বাই সেল (অকশান) করে আমরা লেনদেনগুলো অপারেট করতাম। ১৯৯৮ থেকে অটোমেটিক ট্রেডিং সিস্টেম আসল।

২০০৪ এ যখন সিডিবিএল হলো, তখন কিন্তু আমরা কাগজের শেয়ার আর দেখলাম না। এখন আমরা শুধুমাত্র একটা রিপোর্ট দেখতে পাই। সেটার সাথেও কিন্তু আমরা খাপ খাইয়ে নিয়েছি। অতএব আমরা কিন্তু টেকনোলজির সাথেই এগোচ্ছি। এরপর ডিএসই আরও নতুন নতুন সফটওয়্যারের আবির্ভাব ঘটাল। ধারাবাহিক ভাবে আমরা আপডেট হতে থাকলাম এই টেকনোলজির সাথে। কিন্তু ২০২০ সালে যখন করোনার পাদুর্ভাব হলো, তখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দুই মাসের জন্য ট্রেড বন্ধ করে দিল। তখন আমরা প্রথমবারের মত অনুভব করলাম যে, আমাদের এডজাস্টমেন্ট যতটুকু হওয়া উচিত ছিল ততোটুকু কিন্ত হয়নি। এরপর আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি যাতে করে আর কোনোদিন লেনদেন বন্ধ রাখতে না হয়। আমরা সেই প্রসেসের দিকে এগোচ্ছি। আমরা আজ থেকে সরকারি সিকিউরিটিজ ট্রেড করছি। আমাদের নতুন একটা উইন্ডো ওপেন হলো, এটাও কিন্তু টেকনোলজির একটা পার্ট। এই উইন্ডোর ফলে ট্রেডিং ভলিউম যেমন বাড়বে, জিডিপির সাথে স্টক মার্কেটের যে গ্যাপ ছিল, সেই গ্যাপটাও অনেকাংশে কমে আসবে।

পাশাপাশি আমরা নতুন একটা ইনুস্ট্রুমেন্ট পেলাম, একটা নতুন মার্কেট পেলাম। এখন দেখা যাবে ইকুইটি মার্কেট স্লো থাকলে, আমরা বন্ড মার্কেটের দিকে যেতে পারব। বন্ড মার্কেট যখন স্লো থাকলে আমরা ইকুইটি মার্কেটে যেতে পারব। অর্থাত আমাদের জন্য অপশন তৈরি হয়েছে। সামনের দিকে যে টেকনোলজিগুলো আসবে, সেগুলো এডাপ্ট করতে হবে। মার্কেটে যদি টিকে থাকতে হয়, তাহলে আমাদের ব্রোকার্স হাউজগুলোর ফাইনান্সিয়ালি ইনভলভমেন্ট আরও বাড়াতে হবে এবং ফাইনান্সিয়ালি সলভেন্ট হতে হবে। একই সাথে প্রচুর দক্ষ জনবলেরও প্রয়োজন রয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে টেকনোলজি ব্যবহার করার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। আর সেটা ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে হোক বা বাইরে থেকে রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমেই হোক৷

তার আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)স্বাগত বওব্য প্রদান করেন৷

স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন “World Investor Week” এর মূল উদ্দেশ্য হলঃ বিনিয়োগকারীগনের শিক্ষা এবং সুরক্ষা এবং এই দুটি জটিল সমস্যার বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরে।

তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীগনের প্রধান প্লাটফর্মই হচ্ছে ব্রোকারেজ হাউজেস, বিশেষ করে ট্রেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানগুলো World Investor Week এর পরিপালন শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাচ্ছি না। এটা আমাদের জন্য এমন একটা সুযোগ যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার জন্য আমরা যারা স্টেকহোল্ডার আছি তাদের দায়িত্ব এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতায় সব কিছুর সমন্বয়ে যাতে একটি আদর্শ পুঁজিবাজার উপহার দিতে পারি।”

তিনি আরো বলেন, সমসাময়িক যেসব বিনিয়োগসমূহ পুঁজিবাজারে আছে এবং আসছে পাশাপাশি প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কিভাবে বিনিয়োগকারীদের সকল উপলব্ধ পণ্য সম্পর্কে ধারনা দেয়া যায় এবং বিনিয়োগকারীগন যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী বিনিয়োগ কৌশল এবং তার পরিকল্পনা নির্ধারন করতে পারবে। তাদের শিক্ষার পাশাপাশি তাদের আত্মবিশ্বাসের বিকাশের জন্য আমাদের যার যার অংশ থেকে যে সমস্ত বিষয় করণীয় সেগুলো আমরা এই আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই।